' মা ' লক্ষ্মীর
' মা ' লক্ষ্মীর
' মা ' লক্ষ্মীর সফর
কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে ' মা ' ঠিক করলেন এবার গ্রামে গ্রামে যাবেন । সেই মতো সব
ব্যবস্থাও করলেন । ঝাঁপি টা হাতে নিয়ে 'মা' দুর্গাকে
আর বাবা মহাদেব কে টাটা করে পেঁচার পিঠে চেপে
কৈলাশ থেকে রওনা হলেন । তখন সবে সূর্য্য উঠেছে। পেঁচা আপন মনে উড়তে উড়তে যখন মর্তে
পৌঁছালো তখন সন্ধ্যা হয় হয় । আকাশে পূর্ণ চন্দ্র ।
ও দিকে শহরে চতুর্দিকে আলোর ঝলকানি ।' মা ' লক্ষ্মী দেখেই বুঝতে পারলেন এটা নিশ্চয় কলকাতা
শহর । পেঁচা এগিয়ে চললো । ডান দিক বাঁ দিক
এঁকেবেঁকে জঙ্গলের ওপর দিয়ে যখন গ্রামে পৌঁছালো তখন রাত্রি হয়েছে বেশ । তবে চাঁদের
আলোয় ভালোই দেখা যাচ্ছে পথ ঘাট ।
একটি বাড়িতে আলো ঝলমল করছে । 'মা' বুঝতেই পারলেন এরা নিশ্চয়ই পুজোর আয়োজন
করেছে । উনি পাশ দিয়ে পেরিয়ে গেলেন ।
পথের ধারে একটা বুড়ি গালে হাত দিয়ে বসে । উনি
পেঁচাকে নামতে বললেন ।
'মা' বুড়ি টার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন ----
কি গো আজ তো লক্ষ্মী পুজো । পুজো করছো ?
কেমন আছো তোমরা ?
বুড়ি হাও হাও করে কাঁদতে লাগলো । ....কি করে
করবো বাছা? আমাদের তো বন্যায় ঘর ভাসিয়ে
নিয়ে গেছে । তাইত পথে বসে আছি । এ কথা
শুনে 'মা' লক্ষ্মী দু:খ পেলেন । উনি ঝাঁপি থেকে
একটা সোনার কয়েন বের করে বুড়ির হাতে দিলেন। বললেন , ' এই নাও তুমি ঘর করবে এটা
দিয়ে ' । আবার একটু এগিয়ে যেতেই দেখলেন
গ্রামের সব মানুষ এক জায়গায় জড়ো হয়েছে ।
আর ওদের দুঃখের কথা বলাবলি করছি ।
'মা' জিজ্ঞাসা করলেন , ' কি গো ---- তোমরা
এখানে কি করছো ? '
ওরা বললো ---- ঐ যে নদী । ও সর্বনাশী । ও আমাদের সব গ্রাস করেছে । আমাদের ঘর সব
ধুয়ে মুছে সাফ করেছে । এ বছর আমরা দুর্গা
পুজোও করতে পারি নি । কি যে খাবো তার ঠিক
নেই । 'মা' সব শুনলেন । তারপর ঝাঁপি থেকে
একটা করে সোনার কয়েন বের করে ওদের দিলেন। বললেন , ' তোমরা তোমাদের ঘর করে
নিও ।' এই বলেই উনি অদৃশ্য হলেন । এমনি করে
আরো অনেক গ্রাম ঘুরলেন । প্রায় সারা রাত ।
ওনার ঝাঁপি শেষ । এবার উনি কৈলাশের দিকে
রওনা দিলেন । কৈলাশে এসে দেখলেন -- বাবা মা
তখন সেই কফি আর বিস্কুট খাচ্ছেন ।
'মা 'লক্ষ্মীকে ফিরতে দেখে ওনাদের আনন্দ হলো ।
উনি ওনার অভিজ্ঞতার কথা 'মা ' দুর্গাকে পরিচয়
দিলেন । ' মা ' দুর্গা বললেন --- আমি গ্রামের মানুষদের প্রচুর শস্য দিই । ওরা খুব খুশি থাকে ।
কিন্তু এবার একটু বেশী বৃষ্টি দিয়েছে বরুণ ।
দেখো , সব দিক ব্যলেনেস করে চলতে হয় । ও তুমি সব বুঝবে না । তুমি তোমার ডিউটি করে এসেছো । ঠিক আছে । বাকিটা আমি দেখে নেবো ।
'মা' লক্ষ্মী কে ক্লান্ত দেখে সরস্বতী একটা কোকোকলার বোতল থেকে এক গ্লাস ওনাকে
দিলেন । তারপর সবাই এক সাথে বসে দেশের
মানুষের দূরবস্থার কথা নিয়ে আলোচনা করতে
লাগলেন । 'মা' লক্ষ্মী বললেন -- না মা এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না । গ্রামের গরীব মানুষ খেতে পাবেনা
থাকার জায়গা পাবে না । এটা ঠিক নয় । আমি
মানুষের দু:খ দেখতে পারিনা ।
'মা ' দুর্গা বললেন --- আ: অতো উতলা হয়োনা ।
চুপ করে বসো । আমি দেখছি কি করা যায় ।
-----------------------------------
