কর্ম শিক্ষা:-
কর্ম শিক্ষা:-
আহেলী সমস্ত কাজ শেষ করে ধপ করে সোফাটায় বসে গা এলিয়ে দিলো। ঘরের সমস্ত কাজ, রান্না, তাছাড়া অফিসের জমে থাকা কাজ গুলো এখন ঘরে বসেই করতে হবে কারণ করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সব কিছু বন্ধ। সব অফিস কাছারিতে ছুটি। তাই আহেলি আর প্রান্তিকও অফিসের কাজ গুলো এখন ঘর থেকেই সম্পাদন করছে, কিন্তু বর্তমান সময়ের সংবেদনশীলতা কে দেখে গীতা দি কে স-বেতনে ছুটি দিয়ে দিয়েছে আহেলি।
ওইদিকে প্রান্তিক সকাল বেলা ৮ টার সময় একবার চোখ মেলে চেয়ে দেখলো ৮ টা বাজে, কি মনে করে সে আবার ওপাশ ফিরে বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়লো। কিন্তু আহেলিকে তো আর শুয়ে থাকলে চলবেনা, বিছানা থেকে টেনে তুললো শরীরটা কে। রান্নাঘরে ঢুকে গত রাতের এঁটো বাসন গুলো দেখেই একদম বিমর্ষ হতে পরলো সে। ওইদিকে চায়ের জল চাপিয়ে এক এক করে শুরু করলো বাসন মাজা। বাসন মেজে, চা খেয়ে, সবজি কেটে, সবজি গুলো রান্নার জন্য চাপিয়ে যখন ঘড়ির দিকে তাকালো দেখলো সাড়ে নয়টা বাজতে চলেছে। বেডরুমে উকি মেরে দেখল প্রান্তিক তখনও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ভাবলো একবার ডেকে দেবে কিন্তু পরক্ষণেই আবার নিরুৎসাহিত হয়ে একটু অভিমানের বসে সজোরে বেডরুমের কপাট বন্ধ করে ডাইনিং টেবিলে এসে বসলো ল্যাপটপটা নিয়ে।
অফিসের পেন্ডিং কাজ গুলো শেষ করার কাজে হাত দিলো এক এক করে। এইদিকে রান্না আর ঐদিকে ল্যাপটপে বসে কাজ নিয়ে ব্যস্ত। রান্নাঘর আর অফিসের কাজ শেষ করতে প্রায় ১১ টা বেজে গেছে। প্রান্তিক তখনও ঘুমে। সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বুঝে শুয়ে ছিল আহেলি কিছুক্ষন, তন্দ্রা মতো এলো। কতক্ষন ঘুমিয়ে ছিল খেয়াল নেই, ঘুম ভাঙলো ফ্যান বন্ধ হয়ে যাওয়াতে। গমর অনুভব হতেই যা দেখলো তা দেখে আহেলীর চোখ ছানাবড়া। প্রান্তিক নিজে ঝাড়ু হাতে ঘর ঝাড় দিচ্ছে। আহেলী কে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে প্রান্তিক মাথা চুলকে বললো
---- আসলে তুমি তো সব কাজ করছ ইদানিং, বুঝতে পারি খুব ক্লান্ত হয়ে যাও। তাই একটু সাহায্য করছি আরকি তোমার।
ফিক করে হেসে ফেলে আহেলি। প্রান্তিকও আহেলি কে হাসতে দেখে ঝাড়ু ফেলে সটান দৌড়ে আসে আহেলির কাছে।
------- তা, প্রান্তিক বাবু আপনি ঝাড়ু লাগাতে পারেন?
------- তুমি চিন্তা করো না ডারলিং। তোমার মুখের হাসির জন্য সব কাজ পারি! ইয়ে মানে করে ফেলবো আরকি। তুমি চিন্তা করবে না।
----- ওহ তাই!
প্রান্তিক আরেকটু আহেলীর কাছে সরে এসে তার চোখে চোখ রাখতেই আহেলী বলে,
------- তবে যাও, করে ফেলো নিজের কাজ যেটা করছিল!
------ তাড়িয়ে দিচ্ছ কেন? একটু আদর তো....
------ মশাই আগে ঝাড়ু নিয়ে ঝাড়াঝাড়ি সেরে ফেলো, নইলে কপালে আদর নয় বাসন ধোয়ার কাজটাও জুটবে।
---- ও বাবা!
ওইদিকে প্রান্তিক আনাড়ির মতো ঝাড়ু লাগাতে ব্যস্ত আর এই দিকে আহেলী ব্যস্ত প্রান্তিক কে উৎসাহ জোগাতে। লক-ডাউন প্রান্তিক কে ঝাড়ু লাগাতে শিখিয়েই দেবে মনে হচ্ছে।