খেলা
খেলা
তার পুরো শরীর সবুজে ঢাকা। সে এখন খুব দুঃখী। তার কাছে কেউ আসে না। তার দেহ বিশাল। সে দুঃখ করে বলে,"কেউ এখন আমার কাছে আসে না। সবাই আমাকে পর করেছে।" তার উপর দিয়ে কোনো বাচ্চা গেলে তাকে যেন বলে ওঠে,"আয় না বাবা! একটু খেলা করে যা। আমি দুচোখ ভরে তোর খেলা দেখি।" কিন্তু তার কষ্ট কেউ বোঝে না। আপনারা ঠিকই ধরেছেন, হ্যাঁ আমি মাঠের কথা বলছি। মাঠের সাথে খেলা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মাঠ বলে,"আগে কত ছোট বড় ছেলে মেয়েরা বিকেল হলেই চলে আসতো আমার সাথে খেলা করতে। কত ধরনের খেলা করত তারা। কেউ ক্রিকেট, কেউ আবার ফুটবল, আবার কোনো কোনো বাচ্চা দৌড়াত। তাদের এই সব কান্ড দেখতে দেখতে এক একটা দিন চলে যেত। কিন্তু এখন চারিদিক শুধু মরুভূমির মতো ধু ধু করে। কয়েকজন যারাও বা এখন আসে, তাদের খেলাধুলা করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। তারা এসে বসে শুধু নেশা করে। হায়! এই দিনটি দেখার জন্য আমি এখনো অক্ষত আছি?" সত্যিই এই উত্তর-আধুনিক যুগের ছেলেমেয়েরা খেলার মাঠ ছেড়ে ভার্চুয়াল জগতে ডুবে যাচ্ছে। তারা এখন শারীরিক কসরতের বদলে ভিডিও গেমে মনোনিবেশ করছে। ফলে তাদের শরীরের সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে মনও। শুভ এখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। সে তার বন্ধুদের প্রতিদিন বলে,"চল আমরা সবাই মিলে বিকেলে মাঠে গিয়ে খেলা করি।" কিন্তু সে একাই মাঠে যায়, কিন্তু তার বন্ধুরা কেউ আসেনা। সবাই শুভকে বলে,"আমরা ভিডিও গেম খেলব। আমাদের মাঠে যেতে ইচ্ছা করে না।" তাই শুভ প্রতিদিন একাই মাঠে গিয়ে দৌড়ায়। তার এই মানসিকতা দেখে মাঠ খুব আনন্দিত হয়ে ওঠে। মাঠের সাথে তার এক গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। কোনো দিন শুভ মাঠে না যেতে পারলে মাঠ আকুল হয়ে ওঠে। তারা যেন একে অপরের সাথে কথা বলে। এরকমভাবে শুভর দিন চলে যায়। শুভ মনস্থির করে তাদের বন্ধুদের মাঠে আনবেই। সেইমতো সে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডাকতে থাকে। অসীম মানসিক জোরে সে সফল হয়। আবার মাঠ ভরে উঠতে থাকে। আনন্দে শুভ ও তার বন্ধুরা খেলাধুলা করে। মাঠ বলে ওঠে,"সাব্বাশ শুভ! সাব্বাশ!"