Manab Mondal

Abstract Crime Thriller

2.0  

Manab Mondal

Abstract Crime Thriller

খেলা শেষ

খেলা শেষ

4 mins
149


ক্যান্ডিক্যাস খেলছিলাম, খেলা শেষ হলো না , বার বার কেউ না কেউ বিরক্ত করছিলো। ভাবলাম রাতে সব কটা স্টেপ শেষ করবো। মাঝে মাঝে ভাবি ছোট বেলায় খেলার সাথী অভাবে ঝগড়া ঝাটি করতাম কত সতর্কতা নিয়ে। বিকেলে বেলায় দল থেকে বাদ পড়ার ভয় ছিল খুব। আসলে একা একা খেলা যেতো না কোন কিছু ই তো, খেলা যেনো সমাজে পরস্পর নির্ভরশীলতার পাঠ পড়াতো। কিন্তু আজ প্রযুক্তি আমাদের একা থাকতে শিখিয়েছে। একটা মুঠোফোন থাকলেই সময় কেটে যায় অনায়াসে। আজকাল তো বাজার হাট সেরে নেওয়া যায় মোবাইলে ই। দুই দিন দেশ ফিরছি। দেখুন এখনো পযন্ত ছাঁদে গিয়ে আমার ছাদ বাগান টা কেমন আছে দেখা হয়নি।

খেলা শেষ করা হবে না আমার। খালি ইমরান ফোন করছে। কল রিসিভ করতে ই একটু গালাগালি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো," ফোন করিস নি কেন? দুই দিন হলো কলকাতা এসেছি , পার্টি দেবার ভয়ে গর্তে ঢুকে আছিস?"

আমি বললাম " না না, কাল অনেক রাতে এসেছি, আজ সারাদিন শুয়ে ঘরে মধ্যে ই , তুই এখন বড় স্টার , আর বছরের শেষ রাত , রাত পরীদের সাথে নিশ্চিত ব্যাস্ত তাই ফোন করি নি।"

ও বলল " মাই ফুট , আইটেম বাজী( মহিলা দের সাথে ফ্লাটিং) তো সারা বছর চলবে। ড্রেস পরে এক সেট জামা কাপড় নিয়ে নিচে আয় আগে , দাঁড়িয়ে আছি, দীঘা রাহুল, আলি দুই জনেই এসেছে। "

মা বাবা র অনুমতি নিতে গিয়ে জানলাম মা নাকি ওদের ফোন করে দিয়েছে আমার আসার খবর টা। আগের বার কেউ জানতে ই পারিনি আমি এসেছিলাম। কারণ আমি এখন একটা ব্যক্তিগত কারণেই একা একা থাকতে চাই।

নেমে দেখি ইমরান গাড়ি আনে নি এনেছে বাইক। আমাকে ঠেসে দিয়ে বললো " বাইকটা যার জন্য কিনেছিস, সে পাখি ফুরুত করে উড়ে গেছে, অন্য খাঁচায় দানা খাচ্ছে । তুই শালা দেবদাস হয়ে ঘরের কোণে পরে আছিস।বাইকটা নিয়ে চলো আজ তোকে ভেজা বিলি থেকে শেরা হওয়ার খেলা শেখাবো।"

দিঘা না গিয়ে ওরা HIH গেলো। বাইরে সোহিনী আর তিনটে মেয়ে দাড়িয়ে ছিলো। আজ ফ্রী কাপেল এন্ট্রি under ground নাইট ক্লাবে । আমি ঢুকতে চাইলাম না।

সোহিনী ইমরান কে বললো " বেবি, তোমরা সবাই ইনজয় করো আমি ওকে সরি ওনাকে । আমি নিয়ে ঢুকছি। আসলে আজ শিকারী হয়তো শিকার হয়ে যাবে। "

ওরা খুব ব্যস্ত জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ওরা ইনজয় করতে চায়। কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো। সোহানী বললো " আপনার সব কথা ই বলছে রাহুল রা। বারে একটু বসি , আলাপ করি আপনা সাথে। আপনার বোধহয় ও সব সহ্য , তবে ওখানে স্ফট ড্রিস নেবেন। অসুবিধা নেই কোনো "

হঠাৎ কথা আমার রাগ হলো আমি গেলাম , দুই পেক ভটকা নিলাম । তারপর ঐ সোহিনী নামক মহিলাকে বললাম " আপনি কি যানে আমার সম্পর্কে, আপনি যানেন প্রিয়ঙ্কা বলে একটি মেয়ে কে ভালো বাসতাম। যে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে অন্য কারো সাথে। কিন্তু আসলে সেটা নয়, আপনি জানেন প্রিয়াঙ্কা মতো মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েদেরকে ইমরানের মতো ছেলেরা প্রপোজ করে, পটে গেলে বিয়ে করতে চায়না তখন মনে পরে স্ট্যটাসের কথা। প্রিয়াঙ্কা কে ওরা ভোগ করতে পারে নি তাই উল্টো পাল্টা কথা বলেছে। প্রিয়াঙ্কা চেয়েছিলো আমি নিজে কিছু টাকা পয়সা করি, তাই ও অপেক্ষা করেছিলো। ও এই নাইট ক্লাব থেকেই শেষ কল করেছিলো, কিন্তু এখান থেকে ও ফেরেনি। ওর বাবা মায়ের কাছে ও বোঝা হয়েছিলো নাইট ক্লাব থেকে ও হারিয়ে গেছে জানলে ওর বোনের বিয়ে আর হবে না। তাছাড়া ও সেইদিন ঝগড়া করে বেরিয়ে ছিলো, ৩৫ বছরের একটা মেয়ে বিয়ে না করায় ওকে বারো ভাতারি বলে পর্যন্ত বলে গালাগালি দিতো ওর মা কিন্তু ও আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো। সেই দিন আমার ফেরা কথা কিন্তু জানি না দুই তিন ঘণ্টা র মধ্যে কি এমন হলো যে ও আর আমায় ফোন করলো না। তবে আমি বিশ্বাস করি না ও অন্য কারো সাথে গেছে। ও এই লোক দেখানো বড়লোকিপানা দেখালেও। ও কিন্তু আমার কাছে থেকে কিছু চাই নি কোন দিন কিছু সে বার বলেছিলো ঠিক আছে একটা বাইক কেন ঐ বাইকে করে আমাকে দিঘা নিয়ে যাবি,"

আমার চোখে জল এসে যাওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু সোহিনী ও কাঁদছে দেখলাম টেবিলে মাথা রেখে। ওর মাথা তুলতে ই আমি চমকে দেখি ও প্রিয়াঙ্কা হয়ে গেছে।

ও বললো " ভয় পেয়ে গেলি নাকি। এখান থেকে দিঘা অনেক টা রাস্তা , তোর বাইকে করে যাবো গল্পটা রাস্তায় বলে নেবো।"

একটা ফোন কল পেয়ে ইমরান, রাহুল , দিনেশ বেড়িয়ে এলো ক্লাব থেকে, অবাক হয়ে আমি দেখলাম, ঐ তিনটে মেয়েও প্রিয়াঙ্কা হয়ে গেছে। সোহিনী বলো" বললো গাইস একটা , খেলা হবে, গাইস আমরা মেয়েরাও দিঘা যাবো ওদের সাথে। হোটেল খরচা , মানব বাবু দেবেন কারণ উনি এই খেলায় অংশ গ্রহণ করবে না। এখান থেকে একটা বাইক রেসিং হবে কোলাঘাট অবধি, তাতে যদি ইমরান জেতে তাহলে খাওয়া খরচ আমি দেবো , রাহুল জেতে তাহলে মানব দেবে , দিনেশ জিতলে , আমি আর মানব শেয়ারিং হবে। "

সবাই বললো দিনেশ কোনো দিনও জিতে পারবে না । তবুও দেখা যাক কি হয়। কিন্তু চেলেঞ্জটা সবাই নিয়ে নিলো।

খেলা শুরু হলো , কিন্তু খেলাটা শেষ হলো না, কারণ পথ দূর্ঘটনায় ওরা তিন জনের মৃত্যু হলো। আমি বলবো প্রিয়াঙ্কা ওদের খুন করো। আসলে সেই দিন ওকে ওরাই মেরে ,ফেলেছিলো। খেলে ছিলো একটা নোংরা খেলা। আজ প্রিয়াঙ্কা সেই খেলা শেষ করলো।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract