জীবনসাথী
জীবনসাথী


অর্ক জোর করাতেই স্বাতী নাগরদোলায় উঠেছিল। অর্ক বারবার বলেছিল - " ভয় কিসের? আমি আছি তো। তুমি শুধু আমার হাতটা শক্ত করে ধরে থাকবে। দেখবে তাহলেই আর ভয় করবে না।" স্বাতী ছোট থেকেই নাগরদোলায় চড়তে ভয় পায়। নাগরদোলা দেখলেই গা গোলায়, মাথা ঘোরে। শুধু অর্ক বলেছে বলেই আজ উঠেছে সে। কিন্তু নাগরদোলা ঘোরা শুরু করতেই সেই একইরকম ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হল তাকে। মনে মনে অভিমান হল খুব। অর্ক তো জানে তার মোশন সিকনেস আছে। তবু কেন কষ্ট দিচ্ছে তাকে। অর্কর কাছে নিজের আনন্দ ফুর্তিটাই বড় হল শুধু! নাগরদোলা যত ঘুরছে ততই যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে স্বাতীর। কোনরকমে চোখ বুজে অর্কর হাত চেপে ধরে বসে আছে। কেমন যেনো নিজেকে ওয়াশিং মেশিনে রাখা জামাকাপড়ের মত মনে হচ্ছে। পাশে বসে থাকা অর্কর উল্লাস কানে আসছে বটে তবে সেটাও যেন ক্ষীণ হয়ে আসছে আস্তে আস্তে। সারা শরীর ঘেমে জল। গলা দিয়ে কোনো স্বর বের করার মত শক্তিও যেন নেই। স্বাতীর মনে হচ্ছে আর এক সেকেন্ডও এই নাগরদোলায় থাকলে মৃত্যু অনিবার্য। শেষ মুহূর্তে অর্কর হাতটা আরো শক্ত করে ধরতে চাইল সে। কিন্তু পারলো না। হাত ফস্কে নিচে পড়ে যেতে লাগলো স্বাতী। আর ঠিক তখনই একজন যেন নিজের জীবন বিপন্ন করে অনেকটা ঝুঁকে চেপে ধরলো স্বাতীকে ।
" এই স্বাতী, কি হয়েছে? ঘামছো কেনো এতো? ওঠো, ওঠো বলছি।"
স্বাতী চোখ মেলে তাকিয়ে দেখল সামনে দাঁড়িয়ে তার স্বামী অরিন্দম।