STORYMIRROR

Susmita Sau

Horror

0  

Susmita Sau

Horror

জান্তব-প্রেম

জান্তব-প্রেম

4 mins
1.0K


 ( এটা একটু প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য, আমাদের সমাজে অনেক বিকৃত মানসিকতার মানুষ আছে। জুফিলিয়ায় আক্রান্ত মানুষরাও সেই রকম, যারা জন্তুর সাথে যৌনাচারে লিপ্ত হয়। এ রকম একজন মানুষ নিয়েই আমার আজকের জান্তব-ভূতের কাহিনী। 🙏) 

.......................................... 

    দিল্লির এক অভিজাত এলাকা, ডিসেম্বরের শেষ, জাঁকিয়ে ঠান্ডা, এখন সবে রাত দশটা বাজে। আর কদিন পর নিউ ইয়ার, চতুর্দিকে সাজ সাজ রব, শুধু এই মোহিনী এপার্টমেন্ট নিশ্চুপ। মাত্র দুদিন আগে এখানে ঘটে গেছে এক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। মিস্ রিমা গোমস্ এই ফ্ল্যাটের আট তলার বাসিন্দা ছিলেন, দুদিন আগে আট তলা থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে আত্মহত্যা মনে হবে, কিন্তু শখের গোয়েন্দা রুরুর অভিজ্ঞ চোখ বলছে অন্য কিছু। মৃত্যুর আগের মুহূর্তে মিস্ রিমা খুব ভয় পেয়েছিলেন। আর সেই তদন্তের খাতিরেই আজ রুরু এই মুহূর্তে ঐ আঠারোশো স্কোয়ার ফিটের সুন্দর করে সাজানো ফ্ল্যাটে। রুরু আর কেয়া দুজনেই দুদিন ধরে তন্নতন্ন করে ক্লু খুঁজে যাচ্ছে। মিস্ গোমসের ব্যবহার করা ল্যাপটপ, ফোন সব ঘেঁটে ফেলেছে , কিন্তু কিছুই মেলে নি। 

     যে টুকু তথ্য পাওয়া গেছে তা থেকে এটা বোঝা যায় যে অসম্ভব সুন্দরী প্রায় চল্লিশ ছোঁয়া রিমা, গ্ল্যামারে নিজের বয়েস কুড়ি তে আটকে রেখেছিলেন। আর যে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তা হলো, মিস্ গোমস ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসার আড়ালে আর একটি ব্যবসা চালাতেন, তা হল সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের চাহিদা মতো মেল বা ফিমেল প্রস্টিটিউট সাপ্লাই দিতেন, কিছু টাকার বিনিময়ে। তাই কোথায় কোন শত্রু আছে তা এই মুহূর্তে খুঁজে পাওয়া সত্যি সমস্যা। 

    রুরু সর্বত্র সন্ধান করতে করতে ক্লান্ত হয়ে এই মুহূর্তে সোফায় বসে। কেয়া হঠাৎ রুরু কে চিৎকার করে ডেকে বললে "রুরু ইউরেকা, আমরা পেয়েছি।" এই বলে কম্পিউটারের একটা বিশেষ ফাইল খোলে, যা রিসাইকেল বিনেতে পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখা ছিল। রুরু উত্তেজিত ভাবে এগিয়ে আসে, ফাইল টা খুলে দেখে রিমার লেখা ডায়রি। দুজনে মিলে পড়তে থাকে। 

     ডায়েরি লেখা শুরু হয়েছে আজ থেকে আঠারো বছর আগে। তখন রিমা কুড়ি বছরের তন্বী সুন্দরী, তার সমস্ত শরীরে যৌন আবেদন। কিন্তু বাড়িতে বাবার কড়া শাসন, আর একদিকে দিনেদিনে তার বেড়ে যাওয়া উগ্রতা সব মিলিয়ে রিমা তখন থেকেই প্যারাফেলিয়ায় আক্রান্ত। ঠিক সেই মুহূর্তে রিমার জন্য তার উচ্চবিত্ত বাবা নিয়ে এসেছিলেন মাত্র দুমাসের একটা ল্যাব্রাডর। রিমা তাকে নিজের মনের মতো করে বড়ো করতে থাকে। তার নাম রেখেছিল মাইক। কালের নিয়মে মাইক বড়ো হতে থাকে রিমার সাথেই, এক ঘরে, এক বিছানায়। আর ঠিক এই ভাবেই বিকৃত মানসিকতার প্যারাফেলিয়ায় আক্রান্ত রিমা, মাইকের সাথে যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হয়ে পরে। 

   একটা সময় এটা তার কাছে নেশা হয়ে যায়। কিন্তু সে এটা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে

চেয়েছিল। সেই মুহূর্তে তার বয়ফ্রেন্ড জিকোর সাথে ও রিমা সহবাস করতে চায়, কিন্তু তাতে এতোটুকু আত্মতৃপ্তি পায়নি। তখনই রিমা বুঝতে পারে সে জুফিলিয়ায় আক্রান্ত, অর্থাৎ কোন জন্তুর সাথে যৌনাচার এরপর জিলোকা আর তার প্রয়োজন হয়নি। 

   এভাবেই কেটে যায় এতো গুলো বছর। রিমা যেমন মাইকে আসক্ত ছিল, মাইক ও তেমনই তার প্রতি আকৃষ্ট ছিল, কিন্তু ব্যপারটা ছিল গোপনীয়।

   সুদীর্ঘ কাল পরস্পরের প্রতি যৌনাচারে লিপ্ত থাকার পর কালের নিয়মে মাইক বৃদ্ধ হয়। যার ফলে রিমার অসুবিধা হয় বেশি, কারণ তার দিক থেকে মাইকের প্রতি যৌন টান ছাড়া আর কিছু ছিল না। অথচ মাইক, একটা অবলা জীব হয়ে রিমার প্রতি কি এক নিগূঢ় টান রয়ে গিয়েছিল, যা রিমা নিজেও বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু কিছু করার ছিল না, তার শরীর কোন আবেগে চলতো না, আর তাই সে এক বছর আগে আর একটি ল্যাব্রাডর নিয়ে আসে এবং আস্তে আস্তে কিছু মাস পর থেকে তার সাথে ও যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে ওঠে। যেটা মৃত্যু পথযাত্রী মাইকের হয়তো সহ্য হতো না। একদিন রিমার অনুপস্থিতিতে মাইক তার সর্বশক্তি দিয়ে নতুন কুকুর টার টুঁটি চেপে ধরে, রিমা যখন ফিরে আসে তখন সব শেষ। রাগে জ্ঞান হিতাহিত শূন্য হয়ে রিমা মাইককে মেরে ফেলে। 

     হয়তো এখানেই ডায়েরি লেখা তার শেষ হয়ে যেত, কিম্বা রিমা নিজেও বেঁচে যেত। কিন্তু তা হলো না। এরপর থেকে রিমা প্রতি রাতে মিলিত হত মাইকের আত্মার সাথে। মাইক ও রিমাকে ছেড়ে যেতে পারে নি। এভাবেই হয়ত চলে যেত কোন মানসিক রোগাক্রান্ত সুন্দরী মহিলার জীবন। কিন্তু ডায়েরির শেষ লেখা টা মনে হয় অন্য কিছু বলেছে। 

    মাত্র দশ দিন আগে লেখা... 

     রিমা আজকাল মাইকের সাথে যৌনাচারে লিপ্ত থাকাকালীন অন্য কারোর উপস্থিতি অনুভব করে। কিন্তু কে সে? যে বাঁধা দেয় মাইককে, যে রিমার সুখে ব্যাঘাত ঘটায়? অনেক গুলো প্রশ্ন চিহ্ন। 

    ল্যাপটপ যখন বন্ধ করলেন কেয়া তখন প্রায় রাত একটা। দুজনেই বাকরুদ্ধ, গভীর চিন্তায় মগ্ন। হঠাৎ কিছু একটা শব্দে দুজনেই স্টাডি রুম থেকে বেরিয়ে এলেন, অবাক বিস্ময়ে দেখলেন প্রবল আক্রোশে একটা বছর খানেকের ছোট ল্যাব্রাডর রিমার বন্ধ বেডরুমের দরজায় আঘাত করছে। কি নিদারুণ তার তেজ, যেন এক্ষুনি দরজা ভেঙে ফেলবে। মুহূর্তের মধ্যেই দরজা খুলে গেল। ঘরের ভিতরের দৃশ্য ওদের আর দেখা হলনা, ওরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। পরক্ষণেই শুধু দেখল ঝড়ের বেগে কোন মহিলা রুম থেকে ছুটে ব্যালকনির দিকে চলে গেল আর কিছু ওদের মনে নেই। দুজনেরই জ্ঞান ফিরল সকালের মিষ্টি রোদে। 

     রুরু আর কেয়া দুজনেই অনেক তদন্ত করেছে আগে, কিন্তু এমন জান্তব-প্রেম, বা জান্তব-ভূত আগে দেখেনি। রুরু একটু ধাতস্থ হয় কেয়া কে বলল, আজ ফিরে যেন একটা রিপোর্ট দিয়ে দেয় আত্মহত্যা বলে। তরপর ল্যাপটপ থেকে সব ডিলিট করে দিয়ে ওরা চলে গেল।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror