Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!
Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!

Susmita Sau

Tragedy

3  

Susmita Sau

Tragedy

সম্পর্ক

সম্পর্ক

4 mins
766


  আজ মৃণাল দশে পা দিল| রমাপদ বাঁড়ুজ্যের কনিষ্ঠ কন্যা মৃণাল| পুত্র সন্তানের আশায় দুই বত্সরকাল অন্তর অন্তর চেষ্টা করে গেছেন, এবং তার সকল প্রকার প্রচেষ্টাকে প্রতিবার ব্যর্থ প্রমাণিত করে এবং সকল উত্সাহকে মিথ্যে প্রমাণ করে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে গেছেন বাঁড়ুজ্যে গিন্নি| অতিশয় অভাবের মধ্যে থেকেও মেয়ে গুলিকে আট বত্সর কাল পিতৃগৃহের অন্ন গ্রহণ করতে হয়নি, তার আগেই বাঁড়ুজ্যে মশাই কন্যাদিগকে সামর্থ্য অনুযায়ী পাত্রস্থ করেছিলেন| সবটাই বাঁড়ুজ্যে মশাইয়ের অতিশয় সুভাগ্যবান কপালের দৌলতে ঘটেনি, বরং বলা যায় তার চারটি কন্যাই ছিল অতিশয় সুন্দরী| এটি ছোট এবং অতিশয় বাবার আদুরে হওয়ার কারণে বিবাহ দিতে মন চায়নি| কর্তা গিন্নী প্রতিনিয়ত এই নিয়ে অশান্তি| আজ তো অশান্তি চরমে ওঠে| গিন্নীর মতে শুধুমাত্র অন্ধ স্নেহের কারণে তাদের এবার সমাজ একঘরে করবে| তত্কালীন সমাজে এই অধিক বত্সর পিতৃগৃহে অধিষ্ঠান করাটা মটেই ভাল কথা নয়| 

   যাই হোক অশান্তি এড়িয়ে বাঁড়ুজ্যে মশাই পাত্রের সন্ধানে অন্য গ্রামে হাজির হলেন| পলাশপুর গ্রামের জমিদার বাড়ির ছোটো কর্তার সদ্য স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে| এবং তার বিধবা দিদির ইচ্ছানুযায়ী পূর্ব পরিচিত সই সুভদার ছোটো কন্যা সুন্দরী মৃণালকে এবাড়ির ছোটো বৌ হিসাবে নিয়ে আসা হোক| তাতে করে তার কনিষ্ঠ ভ্রাতাটিকে যদি মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত করে সংসারে বন্দী করা যায়| কন্যাদায়গ্রস্থ বাঁড়ুজ্যে মশাই হাতে স্বর্গ পেলেন| আগু পিছু কিছুমাত্র চিন্তা ভাবনা না করে কথা দিয়ে এলেন| 

    বাড়ি ফেরা মাত্রই কান্নার রব ওঠে| সুভদার মতে সে ছেলে যে সুভদার থেকে কিঞ্চিত ছোটো, তার ওপর দোজবরে, না না এ বিবাহ কিছুতেই হয়না| কিন্তু বাঁড়ুজ্যে মশাইয়ের কথা, সেতো এত নরম নয়| তাই পরের মাসেই শুভ লগ্নে চারহাত এক হয়ে গেল| অত বড় বংশ শুধুমাত্র শাঁখা সিন্দুরে গরীবের মেয়ে উদ্ধার করল| নিন্দুকেরা আড়ালে বলল রমাপদ অত সুন্দরী মেয়েটাকে গলায় কলসী বেঁধে জলে ফেলে দিল|

   এদিকে সুন্দরী মৃণাল গ্রামের পাঠশালার পণ্ডিতমশাইয়ের ছেলেটিকে মনে মনে পছন্দ করত| সেকাল ছিল এক অন্য জগত্| তার গোপন ভালবাসাটা ততধিক গোপন রেখে স্বামী গৃহে পদার্পণ করলে| মৃণাল কতখানি স্বামী কে ভালবাসতে পেরেছিল সে বিষয়ে সন্দেহ থাকলেও সংসারের কর্তব্য নিয়ে কোনো কথাই ওঠার সুযোগ সে দেয়নি| বয়স্ক মাতাল স্বামীর প্রতি কর্তব্যেও অবহেলা দেয়নি| 

   মৃণালের শ্বশুরালয়ে তার সারাদিনের সঙ্গী বলতে তেমন কেউ ছিলনা| বিধবা বড় জা এবং ননদ ছিল তার কাছে অতি শ্রদ্ধার মানুষ, সর্বদা তাদের সেবা যত্নে রাখত| বড় জার একটি মেয়ে এবং দুই ছেলে ছিল| বড় ছেলে অমিয় ছিল মৃণালের সমবয়সী, সে পড়াশোনা করত এবং অক্ষর জানা মৃণালকেও গল্প উপন্যাস পড়তে শেখাত| এমনি ভাবেই তাদের মধ্যে সক্ষতা গড়ে ওঠে| 

  অমিয় ছিল অত্যধিক চতুর এবং বৈষয়িক| নেশাগ্রস্থ কাকার সম্পত্তি নিয়ে নয় ছয় তার অপছন্দ ছিল| সর্বপরি বাবার মৃত্যুর পর কাকার হাতে জমিদারী তুলে দিতেও অনিচ্ছা ছিল| কিন্তু উপায়ন্তু না থাকায় সে মেনে নিয়েছিল| 

   এমনি করেই দুটি বত্সর অতিক্রান্ত হবার পর কাকার লিভারের পীড়া দেখা দেয়| অতিরিক্ত মদ্যপান এর জন্য দায়ী| এমতাবস্থায় জমিদারীর দায়িত্ব ভার অমিয়র ওপর বর্তায়| কিন্তু সেখানেও অমিয় দেখে শুধু নামেই দায়িত্ব ,সবটুকু চালনা করে তার কাকা বিহারীনাথ| এবার অমিয় যারপরনাই বিরক্ত হয়ে পড়ে| অন্য উপায় খোঁজে| অমিয় তার প্রিয় ছোট খুড়ীকে নিজের সমগ্র সময়টুকু দিয়ে আরও আপন করতে লাগল| 

   কলকাতায় কালীবাড়িতে পূজো দিতে নিয়ে যাওয়ার অছিলায় বাড়ির বাইরে বের করে, এবং শুধু মাত্র বন্ধুত্বের দাবী রেখে ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করে| মানুষের বিচিত্র এই সংসারে মৃণাল স্বামীর কাছে কোনদিনই শরীরের সুখ পায়নি| তার মদ্যপ স্বামী অনেক রাতে বাড়ি ফিরতেন এবং স্বভাবতই অন্য নারী সঙ্গ তাকে মৃণালের প্রতি উদাসীন করে রেখছিল| মৃণালের অতৃপ্ত শরীর কোন পুরুষের ছোঁয়া চেয়েছিল হয়ত| সেও বুঝি আলগা প্রশ্রয় দিতে চেয়েছিল| 

  এরপর কোনো এক বৈশাখে মৃণালের জা এবং ননদ কাশী যাত্রা করল| অমিয়র প্রবল জ্বর দেখা দিল| বাড়িতে কেউ না থাকায় মৃণালের প্রতি অমিয়র সেবার দায়ভার এসে পড়ল| অমিয়র তাপহীন প্রবল জ্বর দেহে আর মৃণালও বুঝিবা কোনো উত্তাপ দেহে অপেক্ষায় ছিল| ফাঁকা ঘরে সহসা অমিয়র উত্তপ্ত ঠোঁট নেমে এসেছিল মৃণালের ঠোঁটে, ওষ্ঠ দিয়ে পান করেছিল মৃণালের চোদ্দ বত্সরের উত্তপ্ত শরীরকে| দুটি শরীর আদিম নেশায় মেতে ছিল | 

   সেদিন রাতেই মৃণালের স্বামী বিহারীনাথ বাবু সংসারের সকল দায় ভার থেকে সবাইকে মুক্ত করে পরোলকে চলে যায় | 

   এমতবস্থায় বাড়ির সকলে কাশী থেকে ফিরে আসে| শ্রাদ্ধ শান্তি সব কাজ মিটে যায়| এবার আর কেউ কোথাও যায় না| কারণ অমিয় ছিল ছোট এবং সংসারের সাথে সে যথেষ্ট পরিচিত নয় সুতরাং তার দায় ভার তাদের ওপর বর্তাল| এদিকে মৃণালেরও শরীরে নেশা ধরে যায়| এরপর অনেকবার তারা লুকিয়ে চুরিয়ে মিলিত হয়| কিন্তু যৌথ পরিবারে একদিন মৃণালের ননদের চোখে পড়ে| মৃণালকে যারপরনাই অপমান করে| মৃণাল প্রত্যুত্তরে শুধু করুণ হাসি হাসে| হাসি যে কারোর এতো করুণ হয় না দেখলে বোঝা যেত না| মৃণালের যুক্তি ছিল মদের নেশাটা আপনাদের ছেলের ছিল সেটা দোষের নয়, অথচ শরীরের নেশাটায় যত দোষ| 

   অমিয়র জন্য তড়িঘড়ি পাত্রী দেখা শুরু হল বাড়িতে| অমিয়র হাতে জমিদারীর দ্বায়িত্ব| এখন আর কারোর কাছে কোনো জবাবদিহি করতে হবেনা| মৃণাল ধরল অমিয় চলো আমরা পালাই| অমিয় ভাবল এই সুযোগ| 

  একদিন অনেক রাতে মৃণালকে নিয়ে বের হল অমিয়| স্টেশনে গিয়ে নির্দিষ্ট ট্রেনে উঠে বসল| মৃণাল শুধুমাত্র শরীরের নেশায় নয়, অতৃপ্ত ভালবাসার খোঁজে বেরিয়ে পড়ল নিশ্চিন্ত জীবন ছেড়ে| পাড়ি দিল অজ্ঞাত ঠিকানায়|

   ট্রেন ছাড়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে অমিয় মৃণালকে হাতে টিকিটটা ধরতে দিয়ে বলল সে একটু খাবার কিনে আনছে , ট্রেন ছেড়ে দিলেও মৃণাল যেন চিন্তা না করে, সে অন্য কামরায় ঠিক উঠে পড়বে| যথা সময়ে ট্রেন ছেড়ে দিল এবং অমিয় বাড়ি ফিরে এলো| 

    অপরিণত মস্তিষ্কের মৃণাল ট্রেনে একা রয়ে গেল| শুধু অমিয়র মা সে রাতে অমিয়কে দরজা খুলে দেওয়ার জন্য জেগে ছিল, এবং অমিয়কে একা ফিরতে দেখে নিশ্চিন্ত হল|

   পরদিন সকালে সবাই জানলো মৃণাল স্বামীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে গৃহত্যাগী হয়েছে| 

  এর অনেক বছর পর বেনারসে এক সুন্দরী বাঈজীর কথা শোনা যায় পরবর্তীকালে খুব নাম হয়েছিল মিনুবাঈ|


Rate this content
Log in

More bengali story from Susmita Sau

Similar bengali story from Tragedy