Sanghamitra Roychowdhury

Tragedy Romance Classics

2.5  

Sanghamitra Roychowdhury

Tragedy Romance Classics

রাগ... হংসধ্বনি

রাগ... হংসধ্বনি

8 mins
1.4K


সকালে ঘুম ভেঙেই জয়ী দেখলো আকাশের মুখ খুব ভার, জানালার কাঁচের ঠিক ওপারে "সবুজের অভিযান" মাঠের পাঁচিলের ধার বরাবর লম্বা লম্বা নারকেল গাছগুলো সুরে ডুবে থাকা আত্মমগ্ন বোদ্ধা লয়তাল জ্ঞানীর মতো মাথা দোলাচ্ছে। মনটা উদাসী নিয়মভাঙা হতে চাইছে, দীপ এখনও অঘোরে ঘুমিয়ে। বিছানা ছাড়লো জয়ী, এসি বন্ধ করে খুলে দিলো জানালাগুলো, এক ঝলক শীতল বাতাস জয়ীকে যেন একেবারে ঠেলে সরিয়ে হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢুকে পড়লো। দীপ কুঁকড়ে শুলো, জয়ী গুটিয়ে যাওয়া লিনেন বেডকভারটা দীপের গায়ে ভালো করে চাপা দিয়ে দিলো। জয়ী আজ আর অফিসে যাবে না, দীপকেও ছুটি নিতে বলবে, কতদিন ওরা এইরকম হঠাৎ অকারণে ছুটি নেয় নি।


জয়ী চশমাটা পরে নিয়ে নতুন ডিভিডিটা চালিয়ে দিয়ে রান্নাঘরে গেলো, জল ফুটিয়ে চায়েরপাতা ভিজিয়ে দিয়ে এসে খাটের একধারে পা মুড়ে বসলো।



কৌশিকী চক্রবর্তী আর পার্থসারথি দেশিকানের ডুয়েট..... রাগ... হংসধ্বনি। আলাপ শেষ,

অনির্বচনীয় সুরবিস্তার... দুজনেই ঢেলে দিয়েছে দরদ... "লাগি লগন পতি সখী সন্....!" আহা হা...! জয়ী ডুবে যাচ্ছে সুরের মূর্ছনায়।



জয়ীর হাত-পা কাঁপছে, গলা শুকিয়ে যাচ্ছে, হাতের পাতাগুলো ঘামে ভিজে জবজবে। কানে জয়ী কিচ্ছু শুনতে পাচ্ছে না, তলপেটে চাপ ধরছে, চোখের বাষ্পে চশমার কাঁচ ঝাপসা। জয়ীর এখান থেকে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে, সেই ভালো, জয়ী পালাবে, এদিকওদিক তাকিয়ে ফাঁক খোঁজার সময় মাইকের বাজখাঁই ঘোষণায় জয়ীর নাম। অমলেন্দু স্যার আর দিদি ঠেলে জয়ীকে স্টেজে তুলে দিলো। ঠকঠকিয়ে কাঁপতে কাঁপতে জয়ী এসে স্টেজের লাল মখমলের উপর আসন কেটে বসে সেতারটা তুলে নিয়ে মাথা নুইয়ে গুরুজীকে স্মরণ করে আলাপ শুরু করলো। অপ্রচলিত রাগ... রাগ হংসকিঙ্কিনী। মসৃণ আলাপ, প্রাণ ঢালা মীর, সাতসুর খেলা করছে জয়ীর আঙুলে... ঝালায় ঢুকলো জয়ী। অমলেন্দু স্যারের তবলার বোলের সাথে জয়ীর সেতারের তান লুকোচুরি খেলছে। জয়ী নিজের সবটুকু উজাড় করে ঢেলে দিয়ে ঐশ্বরিক সুরবিস্তৃতি শেষে থামলো। প্রেক্ষাগৃহ গমগম করছে হাততালিতে।



জয়ী সেবার ফাইনাল ইয়ার পরীক্ষায় প্রথম স্থানে ছিলো। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ওর সেদিন পুরস্কার নেবার সাথে সাথে প্রথম বারের জন্য এককভাবে বাজানোরও কথা ছিলো। বাজনা শেষ হওয়ার পর হাততালির আওয়াজে জয়ী কেঁদে ফেলেছে। কোনোরকমে গ্রীনরুমে এসে দিদিকে জড়িয়ে সেকী হাউহাউ করে কান্না জয়ীর! সে কান্না জয়ের - সাফল্যের - আনন্দের। পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা হচ্ছে, শেষ পর্বে এসে জয়ীর নাম ঘোষিত হোলো। জয়ী আবার স্টেজে, দেশবিখ্যাত সরোদিয়া হিদায়াত খাঁ সাহেবের হাত থেকে পুরস্কার নিলো, "স্বর্ণ সেতার"... একটি সোনার সেতারের মডেল। গুরুজী হাতে তুলে দিলেন মানপত্র, আর বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী অমিতা দেবী তাঁর মাতৃস্মৃতিতে জয়ীর হাতে তুলে দিলেন বিশেষ পুরস্কার "দশ হাজার টাকার চেক"।



"সকাল সকাল কীসব প্যানপ্যানানি কান্নাকাটি মার্কা গান চালিয়ে রেখেছো বলো তো? তুমি বোঝো না কেন এতোখানি বয়সেও, যে এই ঘরে আরও একজন মানুষ থাকে? তার কোনো পছন্দ অপছন্দই তো তোমার খেয়াল থাকে না, নিদেনপক্ষে ঘুমটা তো শান্তিতে ঘুমোতে দেবে!" জয়ীর কানে যেন গলানো গরম লোহা পড়লো। মিউজিক প্লেয়ার বন্ধ করে তাড়াতাড়ি ছুটলো কান্না লুকোতে। অথচ দীপ তো জয়ীর সাথে দীর্ঘদিন প্রেম করেই বিয়ে করেছিলো, জানতো তো জয়ীর এই গানবাজনার প্রতি টানটা।



জয়ীর ছুটি নেওয়ার মেজাজটা হারিয়ে গেছে। ও রান্না বসিয়ে দিলো, ফ্রিজে আগের দিনের কিছুটা ডাল তরকারি ছিলো, একটু বেগুন ভাজা আর ডিমের অমলেট করে টেবিলে দীপের খাবার দাবার গুছিয়ে রেখে, নিজে খেয়ে পৌনে নটার মধ্যে জয়ী বেরিয়ে পড়লো বাড়ি থেকে, দীপ তখন ল্যাপটপে কাজে ব্যস্ত, তার প্রেজেন্টেশন নিয়ে। ও দশটা নাগাদ বেরোয়, আজকাল নিজেই ড্রাইভ করে যায়, তাই একটু রিল্যাক্সড থাকে। জয়ী পাবলিক ট্রান্সপোর্টেই যাতায়াত করে, দুজনের অফিসও একরুটে নয়। আর তাছাড়া জয়ী গাড়ি করে অফিসে যেতে ভারী অস্বস্তিও বোধ করে।



জয়ী আজ একটু বেশিই তাড়াতাড়ি বেরোলো, ও আসলে নিজের সাথে নিজে একা হতে চাইছিলো।

জয়ীর তেমন বন্ধুবান্ধবও নেই যে কারুর কাছে শেয়ার করে হালকা হবে একটু, বাবা-মা চলে যাবার পর দিদি জয়ীকে বুকে করে আগলে রেখেছিলো। সেই দিদিও বছর দুই হোলো ঝাড়খণ্ডের একটা এনজিও মিশনে চলে গেছে, অমলেন্দু স্যারের অভাবটা দিদি কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারলো না, কোলকাতা থেকে দূরে পালিয়ে বাঁচলো। জয়ী বাধা দেয় নি, কিন্তু আজ জয়ীর ইচ্ছে হচ্ছে দিদিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে একটু হালকা হতে, সেই গ্রীন রুমের মতো। তবে সেদিন কেঁদেছিলো আনন্দে, আর আজ নিজের টুকুকে নিজের করে রাখতে না পারার বেদনায়।



সারাটা দিন ধরেই কোনো কাজে মন বসাতে পারে নি জয়ী। বারবার কাজে ভুল করেছে, সিনিয়রের বিরক্ত মুখঝামটা খেয়েছে। আজ জয়ীর মনটা খালি পিছুটান দিচ্ছে অতীতে। মা বাবা দিদি অমলেন্দু স্যার.... ওর সেই নতুন তরবদার সেতার কোলে নিয়ে জড়িয়ে ধরে, টানা রিক্সায় চড়ে বাড়ী ফেরার দিনটা! সেদিন জয়ীকে দেখে অমলেন্দু স্যার জয়ীর দু'বিনুনি করা মাথায় গাঁট্টা মেরে বলেছিলো, "এমন করে তো কেউ প্রেমিককে নয়তো বরকেই জড়িয়ে রাখে রে!" জয়ীর গলার ভেতরটা কেমন জ্বালা করে উঠছে। বেশ বুঝতে পারছে চোখদুটোও আর বাধা মানবে না, অবাধ্য হবেই এবার। মুখটা নামিয়ে নিলো জয়ী, ঝাপসা চোখজোড়া কম্পিউটারের কী বোর্ডের ওপর নিবদ্ধ করতে চাইছে। কিন্তু বেয়াদব দু'ফোঁটা জল চূড়ান্ত অসভ্যতা করলো, কোনো মানা মানলো না, চশমার কাঁচটা আলতোভাবে ছুঁয়েই ঠিক টপটপ করে ঝরে পড়লো কীবোর্ডের চৌখুপি খাঁজে। ছোট্ট রুমালটার কোণ দিয়ে কায়দা করে জয়ী চোখ মুছতে মুছতে খেয়াল করে নিলো, কেউ দেখে নি তো? জয়ী জানে এসব অফিসে কত দ্রুত গসিপ ছড়ায়। জয়ী তাই ওয়াশরুমে ঢুকে আড়াল খুঁজতে গেলো।



অফিস থেকে ফেরার পথে জয়ী বিগবাজারে ঢুকলো, টুকিটাকি কিছু কেনাকাটা করলো। তবে তাতে মনটা খানিকটা হালকা হোলো বটে, কিন্তু পুরোটা নয়। ওর আজ যেন আজ বাড়ি ফেরার কোনো তাড়া তাগাদা নেই। বড়ো রাস্তার মোড়ে বাস থেকে নেমে রোজই জয়ী একটু টাটকা ফুল নেয়, বেল যুঁই রজনীগন্ধা বা গোলাপ, যেদিন যেমন পায়। মোড়ের মাথাতেই একটা বছর পনেরো ষোলোর ছেলে প্লাস্টিক বিছিয়ে বসে সন্ধ্যেবেলাটায় ফুল বিক্রি করে। ছেলেটাও মুখিয়ে থাকে, রোজকার খদ্দের দিদিমণির জন্য টাটকা ফুল আলাদা করে সরিয়ে রাখে। আজ জয়ীর ইচ্ছে হোলো না। দীপ খুব ফুল ভালোবাসে, ওর জন্যই বেডসাইড টেবিলে রাখে রোজ একটু টাটকা গন্ধওয়ালা ফুল, ছোট্ট মোরাদাবাদী পেতলের ভাসটায়। আড়চোখে দেখে ফুলওয়ালা ছেলেটার অবাক চোখকে পাশ কাটিয়ে জয়ী বড়ো রাস্তার ফুটপাত থেকে নেমে পাড়ার গলিতে পা রাখলো।



বাড়ি ফিরতে অনেক দেরী হয়েছে আজ। জয়ী কব্জি উল্টে ঘড়িটা দেখলো, সাড়ে নটা বেজে গেছে। লিফট থেকে বেরিয়ে ব্যাগ থেকে ফ্ল্যাটের চাবি করতে গিয়ে দেখে দরজা খোলা। কি ব্যাপার, দীপ এতো তাড়াতাড়ি ফিরেছে, নাকি যায়ই নি আজ অফিসে? সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে জয়ী কলিংবেলে আঙুল ছোঁয়ালো। দীপ ফোনে কারুর সাথে খুব উত্তেজিত ভাবে কথা বলতে বলতেই দরজা খুলে দিলো। জয়ী পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘরে ঢুকে দ্রুতহাতে রাতের খাবার রেডি করে দীপকে ডাকলো খেতে। রাতের খাওয়াটা ওরা একসাথেই করে। দীপ বেজার মুখে বসে আছে দেখে সকালের ঘটনাটা মন থেকে ঝেড়ে ফেলে জয়ী জানতে চাইলো, "কী হয়েছে?"



এই ফ্ল্যাটটা কেনার সময়ই ব্যাঙ্কের হাউসলোন ছাড়াও দুজনের সেভিংস সম্পূর্ণ ভাঙা পড়েছে। এমনকি জয়ীর বাবা-মার বাড়িটা বিক্রির টাকার অর্ধেক, জয়ীর ভাগে যা পেয়েছিলো, সেটাও ফার্নিচারপত্র কেনাকাটা, রেজিস্ট্রি আর ইন্টিরিয়র ডেকরেশনেই খরচ হয়ে গেছে, এই আর্থিক চাপ না সামলে জয়ী বাচ্চা পর্যন্ত নিতে চায় নি। এর উপর দীপের বোনের বিয়েতে একটা বড় অংশ খরচের দায়িত্ব সামলাতে কিছুটা লোনও করতে হয়েছে। তার মধ্যেই জয়ীর পইপই বারণ স্বত্ত্বেও দীপ এতটা লোনের বোঝা মাথায় নিয়েও জেদ করে কারলোনে এই দামী গাড়িটা কিনলো। এখন এই এতোগুলো ইএমআই একসাথে শোধ দিতে গিয়ে গাড়ির ইএমআই তিনমাস ধরে ডিফল্টার হয়েছে। এখন ফাইনান্সার বাউন্সার দিয়ে শাসাচ্ছে ক'দিন ধরে। এমাসের মধ্যে ডিউ ইএমআই মেটাতে না পারলে গাড়ি সিজ করবে।



দীপ একদম ভেঙে পড়েছে, বলছে গাড়ি ছেড়ে দেবে। আজ আঠাশ তারিখ। দুদিনের মধ্যে এতোগুলো টাকা কি ভাবে জোগাড় হবে? জয়ী চুপ করে আছে। দীপ কোনো রকমে খেয়ে শোবার ঘরে ঢুকে সিগারেট ধরিয়ে বসেছে বিছানায়। জয়ী শুতে এসে দীপকে বললো, "কাল ভেবেচিন্তে একটা রাস্তা বার করতে হবে।" দীপ ছটফট করছে, আধখাওয়া সিগারেটটা অ্যাশট্রেতে গুঁজে দিয়ে দীপ দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে পড়লো চুপচাপ, কোনো কথা নেই। শোবার ঘরের আলোটা নিভিয়ে দিয়ে জয়ী শান্তভাবে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো, নারকেল গাছগুলোর মাথায় জমে থাকা ঝুপসি অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে।



দীপ ভোররাতের দিকে ঘুমিয়েছে, বেশ বেলায় ঘুম ভাঙলো, দশটা বাজে প্রায়, জয়ী নিশ্চয়ই বেরিয়ে গেছে এতোক্ষণে, একবারও ডাকেও নি। দীপের আর বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করছে না। মাথাটা ভার হয়ে আছে, টেনশনে শরীরটা অস্বস্তিতে, আজ আর অফিসে যাবে না দীপ। একা বিছানায়, একা ঘরে, একা ফ্ল্যাটে দীপ ঋণভারের দুশ্চিন্তার জটে ডুবছে।



দীপ অলসভাবে বিছানায় পড়ে রয়েছে, মনোনিবেশ করতে পারছে না কোনো ভাবনায়, কোথাও কোনো আশার আলোর লেশমাত্র নেই। দরজাটা খোলার আওয়াজে অবাক হোলো দীপ, জয়ী? তাছাড়া আর কেইবা হবে? কিছু ভুলেছে নাকি? দরকারী কিছু? নাহলে অফিস থেকে ফিরে এলো? নানান কিছু ভাবতে ভাবতেই বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো দীপ। শোবার ঘর থেকে দীপ বেরোচ্ছে দেখে জয়ী অবাক, "অফিসে যাও নি এখনো?" আড়মোড়া ভেঙে দীপ বললো, "শরীরটা খুব ম্যাজম্যাজ করছে, তাই ছুটি নিলাম।" "শরীরের আর দোষ কি? একটা লেমোলেট খাও, কফি করে দিচ্ছি"। জয়ীর কথার উত্তরে দীপ বললো, "তুমি অফিস থেকে ফিরে এলে কেন?" জয়ীর উত্তর, "ঘরে অনেক কাজ জমেছে, তাই আজ ছুটি নিয়েছি। একটু বাজারও করে আনলাম, দুদিনের রান্না করে রাখবো।"



জয়ী রান্নাঘরে, বাসনপত্রের টুৃংটাং আওয়াজ হচ্ছে। দীপ ওষুধ খেয়ে বসে রইলো চুপ করে। জয়ী ঠিকই বলেছে, জ্বর আসতে পারে, সিজন চেঞ্জ হচ্ছে তো!



জয়ী দীপকে এককাপ কফি আর দুটো কুকি দিয়ে নিজেও বিছানার পাশের সিঙ্গল সোফাটায় পা মুড়ে বসে বললো, "সকালে যখন খাওয়া হয়ই নি, তখন ওগুলো তুলে রেখে দুপুরের জন্য একটু খিচুড়ি আর ইলিশমাছ ভাজা করে নিই, কি বলো?" দীপ হালকা ঘাড় নাড়লো। কফি মগদুটো নিয়ে জয়ী রান্নাঘরে ফেরত গেছে। দীপ মনস্থির করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, এই চাপটা আর সে নিতে পারছে না। এই গাড়িটা ও ছেড়েই দেবে।



অনেক দিন পর দুজনে একসাথে বসে দুপুরের খাবার খেলো। আজকাল কাজের চাপে দীপ রবিবারও ল্যাপটপে চোখ রেখে শোবার ঘরে বসেই খেয়ে নেয়। জয়ী আজ দুর্দান্ত রেঁধেছে খিচুড়িটা! খুব তৃপ্তি করে খেলো দীপ। দীপ এবার টেনে একটা ঘুম লাগাবার প্ল্যানে শোবার ঘরে পা বাড়ালো, জয়ী রান্নাঘরে টুকিটাকি গোছগাছ সারছে।



বিকেলের চা নিয়ে জয়ী দীপকে ঠেলে ঘুম ভাঙালো। দীপ উঠে বসে চায়ে প্রথম চুমুকটা দিতেই, জয়ী দীপের হাতে একটা বেশ মোটা প্যাকেট ধরালো, "চাটা খেয়েই ফাইনান্সারের সাথে যোগাযোগ করে ওদের টাকাটা মিটিয়ে দেবে।" দীপ অবাক, "কোথায় পেলে, এতোগুলো টাকা, এতো তাড়াতাড়ি?" "সোনার সেতারটা আর প্রাইজমানির ফিক্সড ডিপোজিটটা দিয়েই ম্যানেজ হয়ে গেলো," জয়ীর নির্বিকার উত্তর।

মাথা নীচু করে বসে আছে দীপ স্থাণুর মতো।



রাতে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমেছে। বৃষ্টির এই সুরেলা মাদক আওয়াজে বুঁদ জয়ী। সেই বৃষ্টির গান ছাপিয়ে রান্নাঘর গোছাতে গোছাতে জয়ী শুনতে পাচ্ছে, রাগ... হংসধ্বনি! "....... লাগি লগন পতি সখী সন্....!


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy