হ্যাঁ,আমরা সচেতন:-
হ্যাঁ,আমরা সচেতন:-


তখন ফেব্রুয়ারি মাস। টি.ভি তে খবরের চ্যানেল চালু করলেই চীন দেশের করোনা ভাইরাস নিয়ে খবর দেখাতো। তখন চীনের লোকজনদের দুর্দশা দেখে আহা উহু করে একটু সমবেদনা জানালেও এতটা পাত্তা দেইনি এই রোগটা কে। ঘন ঘন দৈনিক পত্রিকা বা খবরের চ্যানেলে এই করোনা ভাইরাসের খবর পড়ে পড়ে এক রকম ক্লান্ত ও বিরক্তই হয়ে গেছিলাম। কিন্তু তখনো আমি অনভিজ্ঞ যে নিজের দেশেও একদিন করোনা এসে আক্রমণ করবে আর তার ফলে লক ডাউনের উৎপত্তি ঘটবে। তখন মার্চ মাসের শুরু, অফিসের কাজে গিয়েছিলাম ভাইজাগে। এখনো মনে পরে এয়ারপোর্টে এত কড়াকড়ি ছিলো না তখনও। সি. আই. এস. এফ এর জোয়ানরা মাস্ক আর গ্লাভস পরে রাখতেন যদিও কিন্তু আমাদের মতন সাধারণ জনতা তখনও করোনার বিপদ ধ্বনি শুনেও না শোনার মতন অবস্থায়। তখনও জানি না যে মাত্র এক সপ্তাহ পর থেকেই করাল রূপ ধারণ করে করোনা হানা দেবে আমাদের দেশেও।
একটা দুঃস্বপ্নের মতন তাড়া করে এলো খবরটি যে আমাদের দেশেও করোনা ভাইরাসের কব্জা বেড়েছে আর তার সঙ্গে বাড়ছে করোনার দ্বারা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। লোকের মনে ভীতির সঞ্চার হওয়া শুরু। ভয় ভয়,তখন কেবল ভয় লোকের মুখে। কিন্তু কিছু কিছু লোকজন তখনও হেলায় উড়িয়ে দিচ্ছেন করোনা নামক মহামারী কে। এরপর এলো সেই দিন যখন আমাদের দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আচমকা বেড়ে গেলো। প্রশাসন নড়ে চড়ে বসলো। লোকের মনে উদ্বেগ। প্রশাসন থেকে ঘোষণা করা হলো যে ২১ দিনের লক ডাউন। রুদ্ধশ্বাস অবস্থা।
২১দিন পর্যন্ত বাড়িতে থেকেই এই অদৃশ্য শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে আমাদের। প্রথমে সকলে তোয়াক্কা না করলেও এখন সকলেই অনেক সচেতন। আকছার রাস্তায় বেরিয়ে যাওয়া, জটলা বেঁধে আড্ডা দেওয়া, হাত না ধুয়েই খাওয়া, বাড়ি ঘর পরিষ্কার না রাখা সেসব অনেক কমে গেছে। দূষণ এখন অনেক কম, বাতাস নির্মল স্বচ্ছ। করোনার প্রভাবে এখন একটু হলেও আমরা নিজের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের যত্ন নিতেও শিখছি। কিন্তু এটা কি আমরা আজকে থেকে জানি? না, ছোট বেলা থেকেই জানি! কিন্তু সকলে সুচারু রূপে পালন করতাম কি? পালন করলে এরম অবস্থার সম্মুখীন হতে হতো কি আমাদের? আমাদের সামনে এখন আশু বিপদ আর এই বিপদ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সচেতন থাকা। সচেতন থেকেই সুরক্ষিত থাকবো আমরা, তাই নয় কি?