হাসি-রাশি
হাসি-রাশি
১।
"অ্যাই এখুন দাঁত ছিরকু্ট্টে হাসছ। এমন মনিষ্যি আমি জীবনে দেকিনি। আম্ফান তুফানে বাড়ীর দেয়াল ভেঙ্গে গেছে, চাল উড়ে গেছে, পুকুরের সব মাছে ভেসে গেছে। আজ কোথায় রাধব কি খাব ঠিক নেই। আর তুমি ওয় টিভি র মেয়ে মানুষটার সামনে দাইরে দাইরে হাস্তেচ?"
"তা কি করবো ওরা বলল ছপি তুলবে।"
"তো ছপি তুল্বে বলে হাসতে হবে?"
"মা বলত, সাধন ছপি তলার সময় এক্তুন হাসবি, নইলে তোর ছপি ভালো আসে না তাই..."
২।
"হ্যাঁরে বাবু এবারও নমিতার মেয়ে হল। মেয়ের পর আবার মেয়ে।"
"ছাড়ো না মা। মেয়ে তো লক্ষ্মী।"
"না না আমি তা বলি নি । আজকাল মেয়ে ছেলে সব সমান । মেয়েরাও তো আজকাল কিছুতেই কম যায় না।
তাহলে। কি অসুবিধা?"
"না মেয়ের পর মেয়ে , তাই ভাবছিলাম কিছু সমস্যা আছে হয়তো। মানে তোর শাশুড়িরও তিন মেয়ে কিনা।"
বৌমা,"মা আপনি ঠিকই বলেছেন একটা সমস্যা তো আছে। আমার বাবার আর আপনার ছেলের ওই একই সমস্যা। ওই সমস্যার জন্যই আমার মায়ের বার বার মেয়ে হয়েছে আর আমার হচ্ছে।"
৩।
"অ্যাঁ অ্যাঁ অ্যাঁ!!!"
"কি হয়েছে বাবু সোনা কাঁদছ কেন?"
"আমি আজ বুঝতে পেরেছি আমি কেন এত খারাপ দেখতে।"
"অ্যাঁ তুই কি করে বুঝতে পারলি?"
"আজ ক্লাসে মলি মিস জিজ্ঞাসা করলো তোমারা কি জানো তোমরা কোথা থাকে এসেছ? ওমনি ক্লাসে রিয়া বলল যে ওর বাবা মা ওকে আমেরিকার একটা মল থেকে কিনেছে। আর এঞ্জেলা বলল, ওর বাবা মা ওকে হং কং এর একটা ডিজাইনার স্টোর থেকে অর্ডার দিয়ে আনিয়েছে। অ্যাঁ অ্যাঁ......"
"তো ? তাতে কি?"
"আর তোমরা এতো কিপটে যে আমাকে হোকাস ফোকাস করে বাড়ীতেই বানিয়েছ। তাই জন্য তো আমি এতো কালো, দাঁত উচু, চোখে চশমা। তোমরা ডিসাইনারদের মত বিউটিফুল থোড়াই বানাতে পারবে।"
৪।
" বলি শুনছ। কোথায় গেলে...... প্রায় আধ ঘণ্টা হয়ে গেল তোমার কোনও সাড়া শব্দ নেই। বলি গেলে কোথায়?"
" হুম......"
"সেই সকালে বললে ঘর ঝাড়ুু দেবে। তা এখনও হল না ঝাড়ুু দেওয়া? কোথায় তুমি?"
" আমি খাটের তলায়। "
" আবার তুমি ঝাড়ুু দেবার নাম করে খাটের তলায় ঢুকে ঘুমোচ্ছ?"