হারানো চাকরি
হারানো চাকরি


“কিরে! এখন তো খুব মজা। ছেলে, বৌ, নাতি সবাই বাড়ীতে। আর নিশ্চয়ই তোর একা লাগে না।“ কল্পনার গলাটা কলকল করে উঠলো ফোনের ওপার থেকে।
কল্পনা আর পারমিতা সেই স্কুলের বন্ধু। এখন দুজনেই ষাটোর্ধ। পারমিতা ছেলের সঙ্গে বাঙ্গালোরে থাকে। ছেলে বৌ দুজনে চাকরি করে। একাকীত্ব নিয়ে তার অনুযোগের সীমা ছিলনা। মাঝে মাঝেই কল্পনাকে বলত,” সারাদিন একা ভালো লাগেনা। ওরা সেই সকালে বেরিয়ে যায়। আমি হলুম বেবি সিটার বুঝলি।“
কিন্তু আজ পারমিতার কথায় ও চুপ গেল।
” পারো! শুনতে পাচ্ছিস?”
“ হ্যাঁ ...হ্যাঁ পাচ্ছি।“ পারোর সংক্ষিপ্ত উত্তর।
“ কি ব্যাপার বলত?”
“ না মানে...... তুই ঠিকই বলেছিস। আর...একা নই।“
“তবে?”
“ জানিস ...............দুপুরবেলা স্কুল থেকে ফিরে নাতিটা আমার হাতে ভাত খেত। মাঝে মাঝে স্কুল থেকে চকোলেট নিয়ে আসতো আমরা ভাগ করে খেতাম। তারপর আমার কাছে রূপকথার গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ত। আর এখন... বৌমা খাইয়ে দেয় আর ওর বাবা ওর সাথে ভিডিও গেম খেলে।“ শেষের দিকে পারমিতার গলাটা ধরে এলো যেন।
“ তাহলে বেবি সিটারের চাকরিটা খারাপ ছিল না কি বল?” হেসে বলে উঠলো কল্পনা।
“ হুম্ তাই তো মনে হচ্ছে। এখন দুর্গা বলে মা করোনা গেলে আমি আমার চাকরিটা ফেরত পাই।“