গুমনাম হ্যায় কোই।।
গুমনাম হ্যায় কোই।।
শর্মিষ্ঠা কখনো বেশী রাত করে না বাড়ি ফিরতে। কিন্তু আজ হয়ে গেল, শেষ ট্রেন ধরে এখন রাত এগারোটা। কিন্তু, স্টেশন থেকে ওর বাড়ি যেতেও তো অনেকটা পথ। আর এদিকে স্টেশনের চত্বর শুনসান, সব দোকান বন্ধ। কয়েকটা কুকুর ঘুরছে। শর্মিষ্ঠা ভাবছিল হেঁটে বাড়ি যাবে, এমন সময় ওর বুক কেঁপে ওঠে। ও খুব ভয় পায় এদের। ও শুনতে পারছে ষ্টেশন চত্বরের অন্ধকার কোন থেকে ভেসে আসছে কিছু অশ্রাব্য গালিগালাজ, হাসির শব্দ। এই মাতালদের দলকে খুব ভয় পায় ও। এই জন্য একা কখনও এতো রাতে ফেরে না।
ওকে হয়তো ছিঁড়েই খেতো ওই মানুষরুপী কুকুরের দল। ও মাটিতে পড়ে, হাত-পা কেটে-ছড়ে একাকার। ঢুঁকড়ে ঢুঁকড়ে কাঁদছে, ও আশাই ছেড়েই দিয়েছিল, ও ধরেই নিয়েছিল আর কোনোদিন বাড়ি ফিরতে পারবে না। হয়তো, ওর শরীরটা মাংসের দলা হয়ে পড়ে থাকবে কোনো মর্গে...
কিন্তু, এ'সব ভাবনা হয়েই রয়ে যায়। কারন...
শর্মিষ্ঠা একটা ছায়ামূর্তি দেখতে পায়, যে ছায়ামূর্তিকে দেখে ওই লোকগুলো ভূত-ভূত বলে পালিয়ে যায়। পরে থাকে ও, ওর স্পষ্ট মনে আছে একটা হাত এগিয়ে আসে ওর দিকে। কিন্তু, ও আর মানসিক উত্তেজনা নিতে পারেনি অজ্ঞান হয়ে যায়। যখন জ্ঞান ফিরল, ও দেখছে ও ওর নিজের ঘরের বিছানায় শুয়ে। কীভাবে এল? কে এল? মা-বাবা!
শর্মিষ্ঠার বাড়ি ফিলতে রাত হলে মিনুমাসি দরজা খুলে দেয়। তবে আজ যে অবস্থায় আছে অনেক হুলুস্থুল পরে যাওয়া উচিত ছিল! এসব ভাবতে ভাবতে ওর চোখ পরে বারান্দার দিকে, সেই কালো ছায়াটা! ওর দিকেই যেন তাকিয়ে। তারপর চোখের নিমেষে বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিল শর্মিষ্ঠাকে অবাক করে।
অস্ফূটে চেঁচিয়ে ওঠে, ছুটে এগিয়ে যায় বারান্দায়; কেউ নেই রাস্তায়...
পরদিন, সকালে চা খেতে খেতে খবরের কাগজটা চোখ বুলাতে বুলাতে একটা হেডলাইনে চোখ আটকে যায়।
হেডলাইনে লেখা “গুমনাম হ্যায় কোই...” খবরটা পড়তে শুরু করে ও,
“ইদানিং শহরে ভূতুরে কান্ড! শহরে মাঝে মধ্যেই দেখা দিচ্ছে এক অশরীরী রহস্যময়ী। কেউ তার মুখ দেখেনি, কিন্তু বাঁচিয়েছে বেশ কিছু মেয়েকে। শুধু তাই নয়, একটা লোককে ছিনতাইয়ের হাত থেকেও বাঁচিয়েছে সে। কে সে? কোনো মানুষ? নাকি...”
শর্মিষ্ঠার মনেও খটকা লাগে। মানুষ? দরজা না খুলে ওকে ঘরে আনলো কীভাবে? একটা মানুষ তিনতলা থেকে ঝাঁপ দেয় কীভাবে? হাওয়ায় মিলিয়ে গেল কীভাবে? তবে কী সত্যিই সে কোনো