STORYMIRROR

Dola Bhattacharyya

Abstract Horror Fantasy

3  

Dola Bhattacharyya

Abstract Horror Fantasy

দেউলঘাটার কল্পকথা

দেউলঘাটার কল্পকথা

7 mins
194

জায়গাটা পুরুলিয়ার দেউলঘাটা মন্দির । সকালেই এসেছিলাম এখানে। আবার এসেছি এবেলায় । প্রকৃতির কোলে আগাধ সৌন্দর্যের আকর এই জায়গা। কিছুটা যেন রহস্যের আবরণে মোড়ানো। ইতিহাস থমকে আছে এখানে।অতি প্রাচীন এই মন্দির আজ ধ্বংসের কবলে পড়ে দিন গুনছে হারিয়ে যাবার। 


মন্দিরের কাছেই দেউলঘাটা রিসর্টে উঠেছি আমরা। গত রবিবার ভোরে পুরুলিয়া পৌঁছেছি । রবি আর সোম দুদিন ধরে অযোধ্যা সার্কিট আর গড় সার্কিট দেখা শেষ করে, আজ মঙ্গলবার চলে এসেছি এখানে। পুরুলিয়া শহর থেকে প্রায় তিরিশ কিলোমিটার দূরে দেউলঘাটা, ছোট্ট একটি জনপদ। বেগুনকোদর দিয়ে আমাদের গাড়িটা যখন দেউলঘাটা অভিমুখে চলেছে, হঠাৎ মনে পড়ল, আরে! এই বেগুনকোদর সম্পর্কে তো কত কি শুনেছি। ড্রাইভার কে জিজ্ঞেস করলাম, "ভাই, বেগুনকোদর রেলস্টেশন কি কাছেই"? 

"হ্যাঁ ম্যাডাম" ।একদম শর্টকাট উত্তর। 

"শুনেছি, জায়গাটা নাকী বেশ বদনামী!" 

একটু অসন্তুষ্ট ভাবে জবাব দিল সাঁওতাল যুবক, "ইচ্ছাকৃত কেউ বদনাম দিলে কি করা যায় বলুন! আসলে বেগুনকোদর স্টেশনে অনেক গাড়ি দাঁড়ায় না। তাই বেশিরভাগ মানুষ ট্রেন ধরতে ঝালদা স্টেশনে দৌড়ায়। এদিকে বাইরের লোকে রটিয়ে দিচ্ছে , বেগুনকোদর স্টেশন নাকী পরিত্যক্ত, নানারকমের ভৌতিক ক্রিয়াকলাপের জন্য।" 

তাই তো। আমাদের কাঁকিনাড়ার পাশে জগদ্দল স্টেশনেই তো অনেক ট্রেন দাঁড়ায় না। রেলপথে এরকম অনেক স্টেশনই রয়েছে। সেগুলোকে কোনোমতেই ভৌতিক বলা যাবে না। অথচ এই স্টেশনটার কিরকম বদনাম হয়ে গেছে! 

      একটু আগেই অস্ত গেছেন দিনমণি। কংসাবতীর জলে এখন ঈষৎ লালচে আলোর ঝিলিমিলি। পায়ে পায়ে এগিয়ে চললাম ভাঙা মন্দিরের দিকে। 

এই মুহুর্তে ঘন ঝুপসি ছায়া ঘনিয়েছে চারিদিকে ।গাছপালার আড়ালে ঢাকা অতি প্রাচীন দুটি ভগ্নপ্রায় দেউলমন্দির। ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে বিস্মিত হয়েছি। বিশেষ কোনো তথ্যই সংগ্রহ করতে পারিনি। কিন্তু কেন জানি না, জায়গাটা ভীষণ ভাবে টেনেছে আমাকে। প্রথম মন্দিরটার চাতালে আমি আর অশোক বসলাম পাশাপাশি। চারপাশ এখন ঘন অন্ধকারে ঢাকা। ঝোপে ঝাড়ে জ্বলছে অজস্র জোনাকি ।মন্দিরের ভেতরে নিঃশব্দে পুজা করছেন পুরোহিত। কোনো মন্ত্রোচ্চারণের শব্দ পাচ্ছি না। প্রদীপের ম্লান আলোয় চারপাশ কেমন যেন রহস্যময় হয়ে উঠেছে। একটু পরে সন্ধ্যারতি সেরে প্রদীপ হাতে মন্দিরের বাইরে এলেন পুজারী। আমাদের দেখে বিস্মিত, "আপনারা! সকালেও এসেছিলেন না" ! 

বললাম, "হ্যাঁ। আসলে জায়গাটা ভীষণ ভালো লেগে গেছে। কাল সকালেই চলে যাব। এদিকে আসার আর সময় পাব না। তাই এখনই এলাম"। 

"বেশ বেশ। ভালো করেছেন ।আজ আবার অমাবস্যা। একটু পরেই শুরু হবে ছিন্নমস্তামায়ের পুজো ।পুজো দেখে, প্রসাদ নিয়ে তবে যাবেন।" ঘাড় নেড়ে সায় দিলাম। উনি তখনও বলে চলেছেন," আগে তো এখানে নরবলি হতো। এখনও বলি হয়, তবে মানুষ নয়। আজও বলি দেওয়া হবে "। শিউরে উঠলাম পুজারীর কথায়। অমাবস্যার আকাশ জ্বেলেছে অজস্র তারা। সেই তারার আলোয় পুজারীর চোখ দুটো কেমন চকচক করে উঠল। জিজ্ঞেস করলাম," কি বলি হবে"? রহস্যময় হাসিতে ভরে উঠল পুজারীর মুখমন্ডল ।বললেন," কে জানে মা কি সংগ্রহ করে এনেছেন! নিজের বলি মা নিজেই যোগাড় করে নেন।" কথাগুলো বলে হুংকার ছাড়লেন পুজারী, "মা! মাগো! পাপী তাপী গুলোকে উদ্ধার করিস মা"! নির্জন বনের মধ্যে প্রতিধ্বনি উঠল ওনার কথার। ভয় পেয়ে আঁকড়ে ধরলাম অশোকের হাত। পুজারী বললেন," ভয় পেলে নাকী মা জননী! ভয় পেও না গো। ভয়ের কিছু নেই "। অশোক বলল," চলো, আমরা এবার ফিরি।মেয়েটা একলা রয়েছে রিসর্টে ।ভালোই হয়েছে ওকে আনিনি এখানে। এলে ভয় পেত খুব। " 

আমি কিছু বলার আগেই পুজারী বললেন," কোথায় যাবে! বসো, বসো ।মায়ের প্রসাদ না নিয়ে কেউ যেতে পারে না এখান থেকে। আর একটু বাদেই পুজো শুরু হবে। দেখে যাও। এমনটি দেখো নি আগে "। কি যেন ছিল ওনার কথায়। অমান্য করার সাহস হল না। প্রদীপ হাতে নিয়ে দ্বিতীয় মন্দিরের দিকে হাঁটা দিলেন পুজারী। আমরা অনুসরণ করলাম ওনাকে। 

মন্দিরের ভেতরে নিঃশব্দে পূজা করছেন পূজারী। মন্দিরের পেছন দিয়ে বয়ে চলা কংসাবতীর ছলাৎছল ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই। চারদিকে এত জঙ্গল, অথচ একটা ঝিঁঝির ডাকও শোনা যাচ্ছে না। আশ্চর্য! 

দ্বিতীয় মন্দিরের পূজাও শেষ হল একটা সময়ে। মন্দির থেকে বেরিয়ে এবার আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালেন পূজারী। "এসো আমার সঙ্গে। মায়ের পূজার সময় হল"। যেন আদেশ করলেন আমাদের। সেই আদেশ মানতে আমরা বাধ্য। প্রদীপের কাঁপা কাঁপা আলোয় আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে চললেন উনি। মন্ত্র মুগ্ধের মতো ওঁকে অনুসরণ করছি আমরা। নিজেদের চিন্তাশক্তি যেন লোপ পেয়েছে। 

দূর্ভেদ্য এক জঙ্গলের ভেতর ঢুকে পড়েছি আমরা। সামনেই ভগ্নপ্রায় এক দেউল। ত্রিকোণ আকৃতির মন্দিরের দরজার আগল কবেই ভেঙ্গে পড়েছে। ভাঙা চাতালের ওপর আমাদের বসিয়ে ভেতরে ঢুকলেন পূজারী। প্রদীপের কম্পমান আলোয় দেখতে পেলাম মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী কে। বেদীর ওপর দাঁড়িয়ে দেবীর কবন্ধ মূর্তি, এক হাতে খড়্গ, আর এক হাতে ধরা নিজের ছিন্ন মুন্ড। দুই পাশে দাঁড়িয়ে দুই ডাকিনী যোগিনী ধড়ের কাটা অংশ থেকে উৎক্ষিপ্ত রক্ত পান করছে । কি ভয়ংকর রূপ মায়ের ।পূজায় বসলেন পূজারী। অচেনা, বুক কাঁপানো শব্দে শুরু হল মন্ত্রপাঠ। আমার ভেতর থেকে একটা কাঁপুনি উঠে আসছিল। অশোকও খুব ভয় পেয়েছে বুঝতে পারছিলাম। দুজনে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে আছি। এক একটা মূহুর্ত যেন এক একটা যুগ মনে হচ্ছে। 

     কতক্ষণ কেটেছে জানি না। পূজা শেষ করে উঠে দাঁড়ালেন পূজারী আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে দৃপ্ত কন্ঠে বললেন, এবার বলির সময় হল। সারা কপাল জুড়ে সিঁদুর মাখানো রয়েছে ওনার।দেখে রক্ত বলে ভ্রম হচ্ছে। গলায় জবা ফুলের মালা। কি ভয়ংকর দেখতে লাগছে ওনাকে। ভয়ে কেঁপে উঠলাম আমরা। মন্দির থেকে নেমে অশোকের সামনে এসে দাঁড়ালেন পূজারী, "এসো আমার সঙ্গে"। 

"কোথায়"? কম্পিত স্বরে জিজ্ঞেস করল অশোক। 

"বলির সময় হয়েছে। এসো আমার সঙ্গে"। 

"না না। বলি দেখার দরকার নেই। আমরা বরং যাই এবার"। 

অশোকের হাত ধরে হ্যাঁচকা টানে দাঁড় করিয়ে দিলেন পূজারী, "আর ফেরার রাস্তা নেই। এসো আমার সঙ্গে। বলির সময় হয়ে গেছে "। 

অশোককে আমার সামনে দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছেন পূজারী। চিৎকার করে উঠলাম আমি," কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন ওকে! ছেড়ে দিন প্লিজ "। 

হুংকার দিয়ে উঠলেন পূজারী, "জয় মা! অনেক দিন ধরে তৃষিত রয়েছে আমার মা ।আজ তোকে নররক্ত পান করাবো। আর একটু ধৈর্য্য ধর মা "। 

ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম অশোক কে, আস্তে আস্তে কেমন ঝিমিয়ে পড়ছে ও। লড়াই করার শক্তি টা চলে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।সেই মুহূর্তেই অনুভব করলাম আমি, কেউ যেন নতুন বলে বলীয়ান করে তুলছে আমাকে। চিৎকার করে উঠলাম আমি," থামো ভন্ড পূজারী। নরবলি নিষিদ্ধ। তোমাকে আমি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যাবস্থা করছি, দেখো"। হাতে থাকা স্মার্টফোন টা চালু করলাম। রক্তজল করা দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকালেন পূজারী। পরমূহুর্তে প্রচন্ড এক ধাক্কায় ছিটকে পড়লাম । পাথুরে মাটির ওপর আছড়ে পড়লাম আমি। সাময়িক ভাবে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। জ্ঞান ফিরতে দেখি অশোকের মাথাটা হাঁড়িকাঠে ঢুকিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। নির্জীবের মতোই পড়ে রয়েছে অশোক। আর আমারই ওড়না দিয়ে একটা গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে আমায়। খুব দৃঢ় সে বাঁধন। খাঁড়া হাতে মন্দির থেকে নেমে আসছেন পুজারী। বাঁধন খোলার চেষ্টা করতে করতে গর্জন করে উঠলাম, "ছেড়ে দে আমার স্বামী কে ভন্ড পূজারী"। কে দিল আমার গলায় এত জোর! হা হা করে হেসে উঠলেন পূজারী। একটা মসৃণ পাথরে ঘষে খাঁড়াটায় শান দিতে দিতে বললেন, "তাকিয়ে দেখ হতভাগী, বলি হবে এখন। প্রাণ ভরে আজ নররক্ত পান করবেন মা। আমিও প্রসাদ পাব। তোকেও বঞ্চিত করবো না রে। চেটেপুটে খাবি মায়ের প্রসাদ। অনেকদিন ধরে মা আমার তৃষিত আছেন যে ।"

" উন্মাদ হয়ে গেছো তুমি। বন্ধ করো এসব। ছেড়ে দাও আমাদের"। 

খাঁড়া নিয়ে অশোকের পাশে এসে দাঁড়ালেন পূজারী। বাঁধন খোলার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তখনও । গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে উঠলাম," ছেড়ে দাও। ছেড়ে দাও আমাদের। আমরা তোমার কি ক্ষতি করেছি। কেন এরকম করছো!" 

ভাঙা দেউলের মুখোমুখি একটা গাছের সাথে বাঁধা হয়েছে আমাকে।তাই ছিন্নমস্তা মায়ের বিগ্রহ মূর্তিও আমার মুখোমুখি । মন্দিরের নীচে একটু পাশে রয়েছে হাঁড়িকাঠ। "জয় মা" বলে হুংকার ছেড়ে খাঁড়াটা মাথার ওপর তুললেন পূজারী।দীর্ঘক্ষণের প্রচেষ্টায় নিজের একটা হাত এতক্ষণে মুক্ত করতে পেরেছি । তাড়াতাড়ি অন্য হাতের বাঁধনও খুলে ফেললাম নিঃশব্দে। দ্রুত বেগে নিচে নেমে আসছে খাঁড়া। লোভে চকচক করছে পুজারীর দুই চোখ। "জয় মা! রক্ষা করো মাগো!" বীভৎস এক চিৎকার গলা চিরে বেরিয়ে এল আমার। দুই চোখ নিবদ্ধ দেবী মূর্তির ওপর। একী! এ কী দেখছি আমি। দেবীর এক হাতে ধরা নিজের ছিন্ন মুন্ড আচমকা এইদিকে মুখ ফিরিয়ে তাকাল। আর এক হাতের খড়্গ দেবীর হস্তচ্যুত হয়ে ছুটে এসে আঘাত হানল পূজারীর মাথায়। দেহচ্যুত হয়ে সশব্দে খসে পড়ল পূজারীর মুন্ড ।মূহুর্তের মধ্যেই ঘটে গেল ঘটনা টা। দেহের শেষ শক্তিবিন্দু সঞ্চয় করে ছুটে গেলাম অশোকের কাছে। তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে ও। আমিও ঢলে পড়লাম ওরই পাশে। 

     জ্ঞান ফিরতে, দেখি আমরা দুজনেই রিসর্টে। শুয়ে আছি ।মেয়েটা কাঁদছিল খুব। একটু সুস্থ হতে রিসর্টের ম্যানেজার কিংশুক রায় জিজ্ঞেস করলেন, "আপনারা তো সন্ধ্যার আগে বেরিয়েছিলেন। অত রাত অবধি কি করছিলেন ওখানে?" 

কোনো কিছু না লুকিয়ে সমস্তটাই বললাম। কিংশুক বাবুর কপালে চিন্তার ভাঁজ। বললেন, "ওখানে তো কোনো ছিন্নমস্তার মন্দির নেই। আর ওরকম কোনও পূজারীও নেই। পুজোই হয়না ওই মন্দিরে। গাঁয়ের মেয়ে, বৌ রা যে যেদিন পারে সন্ধ্যায় এসে একটু ধুপ, প্রদীপ দেখিয়ে যায়।"

আমরা ঘটনার কথা ওদের বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। অশোক একবার বলল, "ছিন্নমস্তার মন্দির টা জঙ্গলের অনেকটা ভেতরে রয়েছে।" ওনারা কেউ বিশ্বাস করলেন না। 

সকালে কিংশুক বাবুর সঙ্গে আরও কিছু লোকজন নিয়ে আমরা ফিরে এলাম ভাঙা দেউলের কাছে। সামনের দুটো দেউলমন্দির ছাড়িয়ে প্রবেশ করলাম জঙ্গলের ভেতর। এই সেই জায়গা। এখান দিয়েই গিয়েছি কাল। দিনের বেলাতেও কেমন যেন ছমছম করছে গা টা। সবাই সবার কাছ ঘেঁষে ঘেঁষে চলছি। হঠাৎ কিসে যেন হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলাম। লাগেনি আমার। অজস্র ঝরাপাতা বিছিয়ে পুরু গদির মতো হয়ে আছে পাথুরে জমি। কিংশুক বাবুর লোকেরা সঙ্গে সঙ্গেই কাজে লেগে গেল। ঝরাপাতার স্তুপ সরিয়ে দেখা গেল, সত্যিই একটা হাঁড়িকাঠ রয়েছে এখানে। এদিক ওদিক দেখতে দেখতেই হঠাৎ নজরে পড়ল, আরে! ওটা কি। কাছে গিয়ে জিনিসটা তুলে নিলাম হাতে। আশ্চর্য্য! এ তো ছিন্নমস্তা মায়ের সেই খড়্গ, এটা দিয়েই তো কাল পূজারীর মুন্ডচ্ছেদ হয়েছিল। খড়্গের গায়ে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের দাগ তখনও লেগে রয়েছে। কারো মুখে কথা নেই কোনো। খড়্গ টা নিয়ে এসে কংসাবতীর জলে বিসর্জন দিলাম। মায়ের উদ্দেশ্যে ভক্তিপূর্ণ প্রণাম নিবেদন করে বেরিয়ে এলাম দেউলমন্দির ছেড়ে। এবার পুরুলিয়া ছেড়ে যেতে হবে। 

কলকাতায় ফেরার পর দেউলঘাটা সংক্রান্ত একটা বই হঠাৎ হাতে এল। বইটা পড়তে পড়তে একটা জায়গায় চোখ আটকে গেল। যা খুঁজছিলাম, পেয়ে গেলাম সেটা। ছিন্নমস্তা মায়ের মন্দির ওখানে সত্যিই ছিল। সে বহুযুগ আগের কথা। এক কাপালিক বাস করত ওই বনের মধ্যে। সত্যিই তখন নরবলি হত ওই মন্দিরে, অমাবস্যার রাতে । একদিন নরবলির সময়ে মায়ের হাতের খড়্গ ছুটে এসে আঘাত করে কাপালিক কে। কাপালিক নিজেই বলি হয়ে যায়। তারপর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় নরবলি। তাহলে! একটুকরো অতীত সেদিন ভেসে উঠেছিল আমাদের চোখের সামনে! এরকমও হতে পারে! ভাবতে গেলে আজও কাঁটা দিয়ে ওঠে গায়ে। 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract