দাম্পত্য (শেষ ভাগ)
দাম্পত্য (শেষ ভাগ)
বউয়ের চাকরি নিয়ে আমি আর কোন কথা বলছিলাম না এমনকি ও অফিস সম্বন্ধে কিছু জিজ্ঞেস করলেও না। আমি ভাবলাম ওর যদি ইচ্ছা হয় ও সেটা করতেই পারে, যদি না সেটা খারাপ কিছু হয়। বউয়ের চাকরির জন্য আমার ছোট্ট মেয়েটার বেশ কষ্ট হচ্ছিল কিন্তু আমি বউকে চাকরি ছাড়ার অনুরোধ আর কোনদিন করবো না এটা পণ করে বসেছিলাম। এখন মাঝে মাঝে মনি অফিস র কথা বললে আমি "হু" অথবা "তাই" এই বলে অন্য ঘরে চলে যাই। অশান্তির ভয়ে সুমির কষ্টের কথা আর তুলি না। এভাবেই চলছিল আমাদের দাম্পত্য জীবন। কথা কম কাজ বেশি র মত কিছুটা।
একদিন অফিস থেকে ফিরে দেখি মনি অফিস থেকে ফিরে রান্না ঘরে কি যেনো করছে। সুমি আমাকে দেখেই বাবা বলে ছুটে এলো। আমি সুমিকে কোলে নিয়ে শোবার ঘরে যেতেই মনি আমার চা নিয়ে এসে বললো "ফ্রেশ হয়ে নাও, চা এনেছি"
আমি অবাক হলেও বুঝতে না দিয়ে বলে উঠলাম "আচ্ছা রাখো"
আমার এই কৌতুহল বিহীন সাধারণ কথার উত্তরে যেনো একটু খুন্ন হয়ে বলে উঠল "আচ্ছা সারাদিন বউ কি করে তোমার কি জানতেও ইচ্ছা করে না?"
সিঁদুর
ে মেঘ দেখে গরু রা যেমন ভয় পায় আমার অবস্থাও তাই হলো। আমি কথা না বাড়িয়ে ফ্রেশ হত চলে গেলাম। কিন্তু আমার পরিত্রাণ নেই, ফিরে আসতেই আবার শুরু করলো "তুমি তো একবার জোর করতে পারতে, যে মেয়ের কষ্ট হচ্ছে চাকরিটা আর করতে হবে না, কিন্তু তুমি কথা বলাই প্রায় বন্ধ করে দিলে"
আমি একটু ব্যাঙ্গর হাসি হেসে বললাম " হ্যাঁ, তুমি তো আমার সব কথা এতদিন শুনেই এসেছো, তাই আর বলিনি"
এবার যেনো আগুনে ঘি পড়ল। চিৎকার করে মনি বলে উঠলো " আমার উপর তোমার কি কোনো দাবি নেই? আর মেয়ের কষ্টের কথাও একবার ভাবলে না, আমি যা করব সেটা ঠিক না হলেও কি তুমি মেনে নেবে"
শেষের কথাটা বলার পর কান্নায় গলাটা বুজে এলো। আমি বুঝলাম আমার যে কিছু বলার উপায় ছিল না তা জেনেও সব কিছু আমার উপর চাপিয়ে নিজে হালকা হতে চাইছে। আমি উঠে গিয়ে মনির চোখের জল মুছে বুকের কাছে চেপে ধরে বলে উঠলাম "আমি জানি তুমি এমন কিছু করবে না যা আমার সম্মানহানি হবে," সুমি আমাদের এভাবে দেখে হাততালি দিয়ে বলে উঠলো "বাবা মা খুব ভালো"