চুড়ি
চুড়ি
- চুড়ি নেবে চুড়ি, হরেকরকম চুড়ি আছে।
দৌড়ে চলে মেয়েটি চুড়িওয়ালার কাছে।একটার পর একটা চুড়ি দেখতে থাকে মেয়েটি। লাল চুড়ি, নীল চুড়ি, প্যাঁচানো গোলাপী চুড়ি, পুতি বসানো সাদা চুড়ি, সবুজ মোতি বসানো মোটা চুড়ি, বাঁশের চুড়ি, জরি বসানো চকচকে চুড়ি, সোনালি রঙের তামার চুড়ি আর নানানরকম...
তার বাবা বলেছে আজ তাকে চুড়ি কিনেই দেবে, গত বছর সেই যে কাচের চুড়ি ভেঙেছিল, তারপর থেকে হাতটা খালিই থাকে। হাঁটতে, দৌড়তে, কুটনো কাটতে, ঝাট দিতে দিতে চুড়ির আওয়াজ না আসলে কি আর ভালো লাগে?
ওদিকে মেয়েটির ভাই বিশু খেলনা এরোপ্লেন নিয়ে নাচতে নাচতে চ
ললো মেলা থেকে বাড়ির দিকে।
- "ও বাবা, চুড়ি নিবোনে?"
পকেট হাতড়ে বাবা দেখে মাত্র দশ টাকা পড়ে আছে। মাথা নীচু হয়ে যায় তার, বাবার শুকনো মুখ দেখে মেয়েটি সব বোঝে।
- "ও বাবা, বাবা।"
- "হা খুকি।"
- "থাক,চুড়ি আমার লাগবেনি। কাজের সময় ঝনঝন করি ওঠে, তার চেয়ে চনো পাঁচ টাকার বাদাম কিনে নিগে!"
বাদামের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে মেয়েটি এগোয় বাড়ির দিকে। পেছন থেকে শোনা যায়...
- "চুড়ি নেবেন চুড়ি!"
মেয়েটি তার খালি হাত বাবার হাতে লুকিয়ে এগিয়ে চলে, চোখের জলে মেলাপ্রাঙ্গণ ঝাপসা হতে থাকে তার চোখে।