চিঠি:-
চিঠি:-


গোমড়া মুখ করে বসে আছি রাশি। তার বাপি অনিমেষ আর মা তনয়া দুজনেই প্রচন্ড ব্যস্ত অফিসের কাজে। একা একা খেলনা দিয়ে খেলতে আর ভালো লাগেনা ৫ বছরের রাশির। তবুও রাশির বাপি একটু সময় দেয় রাশি কে কিন্তু তার মামনি তো ঘরকন্নার কাজের সঙ্গে নিজের অফিসের কাজের চাপে চরম ব্যস্ত। তারমধ্যে ১ সপ্তাহ পরেই আবার তনয়া অফিসের কাজে ৩ দিনের জন্যে বাড়ির বাইরে যাবে।
রাশি খুব মন খারাপ করে কত বলছে তনয়া কে না যেতে, কিন্তু সে অপারগ, অফিসের ট্যুরে যেতেই হবে। রাশির বাপি আর ঠাম্মা তখন সামলাবেন রাশি কে, কিন্তু মা কে তো মিস করব রাশি তাই না? রাশিকে গোমড়া মুখে বসে থাকতে দেখে তার মামনি কম্পিউটারে কাজ করতে করতেই তাকে ডাকলো নিজের কাছে। এক ছুটে মায়ের কোলে গিয়ে উঠলো রাশি। মায়ের গলা জড়িয়ে কত আদর, কত অনুনয় যে মা যেনো আগামী সপ্তাহে না যায় তাকে এখানে রেখে অফিস ট্রিপে। তনয়া ওর গাল টিপে দিয়ে খুব আদর করে বলে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে সে রাশির কাছে সব কাজ সমাধা করেই।
ক্রমে ক্রমে সেদিন আগত যেদিন তনয়া কে যেতে হবে। রাশির চোখে শুধু জলের ধারা, মামনি কে এয়ারপোর্টে বাই বাই করে এসে ঠাম্মার কোলে মুখ গুজে কাঁদতে থাকে রাশি। তখুনি অনিমেষ এসে হাত রাখে রাশির মাথায়। অনিমেষের দিকে তাকিয়ে ডুকুরে কেঁদে উঠে আবার রাশি। অনিমেষ বলে একটা জিনিস দেখবি সোনা?
- কি জিনিষ বাপি?
- মা কে চিঠি পাঠাতে চাস?
- চাই তো।
- আয় তাহলে।
অনিমেষের সঙ্গে বসে একটি সাদা কাগজে বড় বড় করে রাশি লিখলো "মামনি তোমাকে খুব ভালোবাসি, ইতি- তোমার রাশি..."
অনিমেষ কাগজটি ভাজ করে বানিয়ে ফেলল সুন্দর একটি কাগজের উড়োজাহাজ। রাশি ভীষণ খুশি অনিমেষের বানানো কাগজ-প্লেন দেখে। বাবা মেয়ে মিলে দাঁড়ালো বাড়ির ছাদে আর ছাদ থেকে রাশি উড়িয়ে দিল ছোট্ট কাগজ প্লেইনটা তার মায়ের কাছে। দামাল হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে কাগজের উড়োজাহাজ আর সানন্দে হাততালি দিচ্ছে রাশি।