চাঁদের পাহাড়
চাঁদের পাহাড়
চাঁদের পাহাড়
অনেক দিন পূর্বে এক উচ্চশৃঙ্গ পর্বত ছিল, যাহার শিখরে আরোহন করিলে চন্দ্রকে স্পর্শ করিবার সম্ভাবনা রহিয়াছিল। জনসাধারণ বলিত, ঐ পর্বতে এক রহস্যময় রমণী বাস করিতেন, যিনি চাঁদের পাহাড়ের রানি নামে পরিচিত। তবে, সেই রানিকে কেহ কখনো প্রত্যক্ষ করে নাই।
একদিন, ঐ গ্রামে এক ভিনদেশীয় ব্যক্তি উপস্থিত হইলেন। কিছুদিন পর তিনি চাঁদের পাহাড় ও তাহার রহস্যময় রানির কাহিনি শুনিলেন। কিন্তু তিনি উহাতে বিশ্বাস স্থাপন করিতে অপারগ ছিলেন।
তাহার কৌতূহল ও অপ্রতিরোধ্য সাহসের বশবর্তী হইয়া তিনি ও তাহার এক বন্ধু রাত্রিকালে চাঁদের পাহাড়ে আরোহনের পরিকল্পনা করিলেন। নির্ধারিত সময়ে তাহারা যাত্রা করিলেন এবং প্রভাতের সূর্যোদয়ের প্রাক্কালে পর্বতের শীর্ষে পৌঁছাইলেন।
শিখরে উপনীত হইয়া তাহারা বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইলেন। সমুন্নত শৃঙ্গে এক বরফ নির্মিত রাজপ্রাসাদ দৃশ্যমান হইল, যাহা চন্দ্রালোকে ঝলমল করিতেছিল। তাহারা আগ্রহে উহা পর্যবেক্ষণ করিতে অগ্রসর হইলেন।
হঠাৎ করিয়াই, এক জ্যোতির্ময় রমণীর আবির্ভাব হইল। তিনি বলিলেন, “আমি কামিনী, চাঁদের পাহাড়ের রানি। তোমাদের সাহস প্রশংসনীয়, কিন্তু ইহা তোমাদের শেষ যাত্রা। আমার রাজ্যের রহস্য বাহিরে প্রকাশিত হইবার নয়।”
অতঃপর, রানি কামিনী তাহার জাদুকরী শক্তি দ্বারা উভয়কেই বরফে আবদ্ধ করিয়া ফেলিলেন। সেই হিমমূর্তিগুলি আজও রাজপ্রাসাদের প্রবেশপথে অম্লান দাঁড়াইয়া রহিয়াছে।
সেই দিন হইতে চাঁদের পাহাড় রহিয়াছে রহস্য ও আশঙ্কার আধার। জনমুখে প্রচারিত রহিয়াছে, “চাঁদের পাহাড়ে গেলে ফিরিয়া আসা যায় না।” আজও, রাত্রিকালে দূর হইতে পর্বতের চূড়ায় ঝিকিমিকি করিয়া উঠা আলো রহস্যময় রানির উপস্থিতি স্মরণ করাইয়া দেয়।

