বুঝার ভুল
বুঝার ভুল


***বিয়ে জিনিস টা কি অনেক ভয়ের একটা ব্যাপার? কেন? অনেকেই তো বিয়ের নাম শুনলে খুশি হয়ে যায়। লজ্জায় লাল হয়ে যায়। এমনকি বিয়ে করতে পাগল ও হয়ে যায়।
তাহলে অদ্রিতা কে এতোটা ভয় পেতে দেখলাম কেন?
সেকি তবে খুশি না এই বিয়েতে?
ওকি আমাকে বিয়ে করতে চাইনা?
কিন্তু কেন?
ও তো ভালো করেই যানে, আমি ওকে কতটা পছন্দ করি, তাহলে কেন ওর ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে সে এই বিষয়ে খুবই ভয় পাচ্ছে!
ওর মুখের দিকে তাকানোই যাচ্ছেনা।
এরকম কেন করছে ও আমার সাথে?
নাহ! আর ভাবতে পারছিনা। আমাকে জানতেই হবে, যে করেই হোক। ওর মনে আসলে চলছেটা কি! ঠিক কি চাইছে ও?
দেখি কাল ই একবার গিয়ে দেখা করে আসবো আর জেনে নিবো কি চাই সে!
একা একা এসবই বিড়বিড় করছিল দ্বীপ।
কিছুদিন পর তার বিয়ে, আর পাত্রী হিসেবে যাকে ঠিক করা হয়েছে, সে আর কেউ নয় তারই একমাত্র প্রেয়সী। যাকে সে ভালোবাসে, অনেক আগে থেকে।
ছোটবেলায় তাদের এক জায়গায় বাসা ছিল।
একসাথে খেলা থেকে শুরু করে সব কিছুই একসাথে।
সবই ঠিক চলছিলো, হঠাৎ একদিন যদি তাদের মাঝে দুরত্ব টা না আসতো সবই ঠিক থাকতো।
আদ্রিতার বাবার পোস্টিং টা বদলে যাওয়ায় তাদের মাঝে এই দুরত্বের সৃষ্টি।
সেদিন তারা খুব কেঁদেছিল, একজন আরেকজনের থেকে দুরে যাওয়ার কষ্টে,
আর আজ সব যখন ঠিক হতে যাচ্ছে, তখন আদ্রিতা পিছু হটতে চাইছে কেন?
তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে অখুশি! এসবই ভাবছিল আর ছোটবেলার স্মৃতি আওরাচ্ছিল।
মনটা তার ভিষন খারাপ, তাই ভাবনা বন্ধ করে দেয়, আর পরদিন গিয়ে জেনে আসবে তাই ভাবে।
তারা যখন আলাদা হয়ে যায় তখন দ্বীপ সবে স্কুল জীবনের চূড়ান্ত পথ
ে আর আদ্রিতা তখন ক্লাস ফাইভ।
তার বাবা মায়েরা তাদের একে অপরের প্রতি টান দেখে মনে মনে ঠিক করে রাখে একদিন তাদের এক করে দেবেন। সঠিক সময় এলেই, আর তাই দ্বীপ যখন পড়াশোনা শেষ করে ব্যবসায় জয়েন করে।
তাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে নিয়ে আসে তার প্রিয়তমা যেখানে আছে সেখানে।
তাদের সারপ্রাইজ এ সে প্রচন্ড খুশি। কিন্তু তার সব খুশি উড়ে যায়, যখন দেখে তার প্রিয়তমার মুখটা শুকনো। হাসির রেসটুকু দেখতে পাইনি তার চেহারায়।
এসব দেখে সে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
যাকে নিয়ে সারাজীবন কাটাবে ভেবে সময়গুলো পার করেছে। কতটা কষ্টে তাকে না দেখেও তাকে একদিন পাবে এইটা ভেবে নিজেকে বুঝ দিয়ে এসেছে,
জীবনের কতো গুলো দিন সে একজন কে নিয়ে ভেবে কাটিয়ে দিল। আজ সে এমন অসন্তুষ্ট।
এইটাই যেন বোধগম্য হয়ে চাচ্ছিলনা দ্বীপের।
পরদিনই উঠে খাওয়া নাওয়া বাদ দিয়েই ফ্রেশ হয়ে রওয়ানা হয় অদ্রির বাসার উদ্দেশ্যে। বের হওয়ার আগে মায়ের মুখোমুখি হয় একবার। তাকে বলে কোথায় যাচ্ছিস না খেয়ে এই সকাল বেলা?
সে বলে এখন খেতে ইচ্ছে করছেনা মা। আমি পরে এসে খাবো।
*সে গিয়ে সরাসরি অদ্রির মুখোমুখি দাঁড়ালো আর বলে ফেললো, তুমি কি খুশিনা আমাদের বিয়েতে?
আর সেতো লজ্জায় মাথা খেয়ে যাচ্ছে, মাথা নিচু করে কি করবে ভাবতে থাকে, আচ্ছা দৌড়ে কি পালাবো!
না আমার কথার আগে জবাব দাও!
সে বলে, আসলে কাল আমার মাথা ব্যাথার কারনে আমি কিছু ভালো মতো উপভোগ করতে পারিনি, তাই কথা বলা হয়নি।
দ্বীপ থ হয়ে যায় এসব শুনে।
কতকি ভেবে বসে আছে সে,
তৎক্ষনাৎ কেটে পড়ে আর নিজেকে বকাবকি করে খুব করে।
আর আদ্রিতা অবাক চোখে চেয়ে থাকে, তার যাওয়ার পথে।
____ক্রমশ______