বৃদ্ধাশ্রম
বৃদ্ধাশ্রম


বেশ কয়েকদিন "অবসর" - এ আসা হয় নি। মেয়েটার পরীক্ষা চলছে। আবীরও জ্বরে পড়ে আছে। তাই আর এই ক'দিন পেরে ওঠে নি মৌটুসী। পাপিয়া, সৌরভ যথেষ্ট দায়িত্বশীল - - জানে, সবটুকু সামলে নেবে ।তবু নিজেরই অতৃপ্তি লাগে। এই "অবসর" ওর কাছে আরেক সন্তানের মতোই প্রিয়। এটা শুধু ব্যবসা নয়, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করেছে মৌটুসী। তবে আবীরের সমর্থন না করলে হয়তো পেরে উঠতো না।
অবসরের প্রত্যেকে অপেক্ষা করে থাকে মৌটুসী কখন আসবে বলে। সংসারে অনেক আঘাত পেয়ে মানুষগুলো শেষ বয়সে এখানে আসে তারা মৌটুসী-র সামান্য যত্নের স্পর্শ , ভালোবাসার কথার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।
আজও এসে অফিসে একটু কথা বলেই ওঁদের সঙ্গে দেখা করে মৌটুসী। সবশেষে যায় যিনি নতুন এসেছেন তাঁর ঘরে, এখনও তো আলাপই হয় নি।
ঘরে ঢুকেই চমকে ওঠে মৌটুসী। চমকে ওঠেন বৃদ্ধাও।
মৌটুসী অবশ্য সামলে নিয়ে সাধারণ কথা বলে। বেরিয়ে আসার আগে বৃদ্ধা মৌটুসীর দু'হাত ধরে কেঁদে ফেলেন - - "ক্ষমা করে দিও মা।"
পাপিয়া জিজ্ঞেস করে বাইরে মৌটুসীকে, "উনি কি তোমার পূর্ব পরিচিত!"
মৌটুসী শুধু ঘাড় নাড়ে। বলতে পারে না,একদা এই মহিলা তাঁকে বৌমা হিসেবে মানতে রাজি হন নি, শুধু তার গায়ের রং কালো বলে।
আজ আর কষ্ট হয় না এসব ভেবে---জীবন মৌটুসীকে অনেক দিয়েছে।
গাড়িতে উঠতে উঠতে দেখে, অপরাহ্নের আলোয় রাঙা হয়ে হাসছে" অবসর বৃদ্ধাশ্রম"।