সেলফি
সেলফি
মলিনা আজ মাইনে পেয়েই মুনিয়ার ফটোটা নিয়ে এল, দোকান থেকে - - - এনলার্জ করে বাঁধাতে দিয়েছিল। মেয়েটা ছোট থেকেই একটু সাজতে গুজতে ভালোবাসতো। প্রথম প্রথম মলিনাই এই ক্লিপ, ঐ হেয়ার ব্যান্ড কিনে আনত শখ করে করে। তারপর তাপসের মৃত্যুতে সব এলোমেলো হয়ে গেল। সঞ্চয় বলতে তো কিছুই করে উঠতে পারে নি ওরা, সামান্য মাইনের চাকরিতে। আর বেসরকারি চাকরিতে ক্ষতিপূরণও মেলে নি সেরকম। মলিনা টেলারিং-এর কাজ করে কোনোরকমে সংসার চালাচ্ছিল। কিন্তু মুনিয়া সেসব বুঝতে রাজি ছিল না। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই রোজ অশান্তি লেগেই থাকত। অন্যান্য বন্ধুদের মতো মলিনা তাকে কিছুই দিতে পারত না।
মুনিয়ার খুব শখ ছিল একটা স্মার্টফোনের, বন্ধুদের মতো। সেবার মলিনাকে কিছু না জানিয়েই ওর এক বন্ধুর পুরনো স্মার্টফোন নিয়ে গিয়েছিল - - সে নাকি নতুন ফোন কিনছে - - - ওকে হাজার টাকাতে ফোনট
া বিক্রি করতে রাজি হয়েছে। মুনিয়াও হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো সে সুযোগ লুফে নিয়েছে। কিন্তু মলিনার কাছে হাজার টাকাটাই অনেক - - দিতে পারে নি। বারবার বুঝিয়েছিল মেয়েকে। তাতেও কান্নাকাটি করে যাচ্ছিলো মুনিয়া।
সেদিন মালিকের থেকে হাজার টাকা ধার করেছিল মলিনা, মেয়ের মুখের হাসিটুকুর জন্য।
বাড়ি ফিরে মুনিয়ার শরীরটা ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখেছিল।
অনেকগুলো দিন পেরিয়ে গেছে তারপর। কার ফোন এনেছিল মুনিয়া, জানেও না মলিনা। তবু যত্নে তুলে রেখেছে।
ওতেই পেয়েছে মুনিয়ার ফটোটা - - সেদিন ফোনটা এনেই সেজেগুজে সেলফি তুলেছিল।ওটাই এনলার্জ করে বাঁধাতে দিয়েছিল। দোকানে অবশ্য বলেছিল, ভালো লাগবে না বড় করলে, ফাটা ফাটা আসবে ছবি। তবু মলিনা শোনে নি।
একটা রজনীগন্ধার মালাও নেয় আজ। মেয়েটা যে সাজতে বড্ড ভালোবাসতো।