ভয় নয়:-
ভয় নয়:-


সকাল সকাল কমলা দেবীর মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেলো। সকাল ১০ টা বেজে গেলো এখনও বাসন্তী এলো না। এই দিকে টি.ভি তে দেখাচ্ছে কি নাকি লক ডাউন টাউন চলেছে। কমলা দেবী আগের দিনের মানুষ করোনা টরোনা বা লক ডাউন এসব কিছু তেমন বোঝেন না। বা এসব নিয়ে এত মাথা ব্যথাও নেই কিন্তু সকাল ১০ টা তেও যখন বাসন্তী এলো না তখন রাগে গজ গজ করতে করতে নিজেই বাসন গুলো নিয়ে বসে পড়লেন কল তলায়।
দুলাল বাবু তৃপ্তি দেবী কে কল তলায় বাসন মাজতে দেখে পাশে এসে বললেন
- ও বৌ। বলি জানো কিছু?
- কি জানবো?
- বলছি বাসন গুলো তে তুমি সাবান লাগিয়ে মেজে দাও, জল দিয়ে আমি ধুয়ে দিচ্ছি!
- আ মলো যা! তুমি কেনো হাত লাগবে? তুমি ব্যাটা লোক। বাসন্তী এলো না দেখো, আমরা বুড়ো বুড়ি দুটো কি করে কি করবো এখন? মেয়েটার কোনো আক্কেল আছে?
- আহা বৌ! বাসন্তী আসতে পারবে না! করোনা ভাইরাসের কারণে সকল কে বাড়িতে থাকতে হবে, ছোয়াচে রোগ তো এটা। তাই এইসময়ে কেউ বেরোবে না ঘরে থাকবে সকলে। আর রইলো ঘরের কাজ? এসব আমরা দুজন মিলে করে নেবো!
- কি বলছো? বাড়িতে থাকতে হবে? বাসন্তী সহ খেতে খাওয়া মজুর থেকে যে কেউ এখন বেরোতে পারবে না বাড়ী থেকে?
- না। বেরোনো নিষেধ। দেখছো না টি. ভি তে খবরের কাগজে অহরহ প্রত্যহ দেখাচ্ছে ঘরে থাকতে। তাই বাসন্তী এখন আসতে পারবে না। আমরা দুজনেই কাজ ভাগ করে করে নেবো, বুঝলে বৌ?
- হ্যাঁ গো। হক কথাই তো বলছো তুমি। তবে তাই হবে। আমরা বুড়ো বুড়ি মিলে করে নেবো না হয় ঘরের কাজ গুলো। কি বলো?
- হ্যাঁ গো বৌ।
- আর বাসন্তী যখন কাজে ফিরে আসবে তখন তাকে তার নায্য বেতন টুকু আমরা দিয়ে দেবো। বেচারা কেমন জানি আছে? লোকের ঘরে কাজ করেই তো পেট চালায়। কি বলো?
- একদম। এই তো দেখো কথা বলে কাজ করতে করতে কি সুন্দর ভাবে বাসনকোসন গুলোও ধোয়া হয়ে গেলো। এবার তুমিও ভালো করে হাত ধুয়ে নাও। সকলে মিলে সাবধানতা অবলম্বন করলে করোনা ভাইরাস আমাদের অনিষ্ট করতে পারবে না। আমরা বাড়িতে থাকবো আর করোনা কে হারাবো।