ভুতুড়ে পুতুলটার প্রতিশোধ
ভুতুড়ে পুতুলটার প্রতিশোধ
বাবা আমাকে একটা পুতুল কিনে দিয়ে ছিল । নীল চোখ , সোনালী চুল , কাঠি কাঠি হাত পা আর পরনে একটা সবুজ জামা । ওর নাম দিয়েছিলাম তান্না , ওকে নিজের বিছানায় শুইয়ে রাখতাম । তার পর সেবার কি হলো , আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়ি । নতুন একটি মাস্টার মশাই আমার জন্য বহাল করা হলো , আমার বাবা অফিসে যান সকালে ফেরে সেই রাত করে । মা আমার খুব সুন্দরী, কি মিষ্টি গায়ের গন্ধ । মা আমি বাড়িতে থাকতাম , আমি পঙ্গু তাই স্কুলে যাই না বাড়িতেই পড়াশোনা করি । তো যা বলছিলাম সেই মাস্টার টির নাম আলী সাহেব , খুব ভালো মাস্টার উনি । আমাকে এসে কিছু ক্ষণ পড়াতেন তার পর আমাকে এত এত চকলেট , চিপস দিয়ে মায়ের ঘরে গিয়ে গল্প করতেন । আগের মাস্টার গুলোর মত খালি খালি পড়া আর মারধর করতেন না । রোজদিনের মতন আমাকে পরিয়ে মায়ের সাথে আলী সাহেব গল্প করছিলেন আমি আমার পুতুলটা নিয়ে খেলছিলাম । হঠাৎ আমার পুতুলটার বিনুনি দুটোর গার্ডার গুলো ছিড়ে যায় আর আমি অন্য গার্ডার দিয়ে চুলটা বাঁধতে গেলে পুতুলের সব বিনুনিটাই নষ্ট হয়ে যায় ।
আমি মা মা করে অনেক ডাকি তবে মা সাড়া দেয় না । আমি বুক ঘষে ঘষে ঘর থেকে বেরিয়ে মায়ের ঘরের বাইরে পর্যন্ত যাই । দরজাটা ভেজানো ছিল , আমি বুক ঘষে ঘষে ঘরে ঢুকে দেখি মা আর আলী সাহেব কেউ কোন জামা কাপড় পরে নেই । কেন জানি আমি ভয় পেয়ে যাই , আর মুখ ফসকে বলে ফেলি মা আমি বাবাকে বলে দেব । কি বলবো আর কেন বলব তা আমি নিজেই জানতাম না কিন্তু কথাটা মুখ থেকে বেরিয়ে আসে । আর ওটাই আমার জন্য কাল হলো , মা বললো দেখ আলী এই পঙ্গু টার জন্য আমার সব বরবাদ হয়ে গেছে , তবু সহ্য করছি কেন জানো ওর পড়াশোনার অছিলায় তবু তোমার সাথে একটু কোয়ালিটি টাইম কাটতে পাড়ি ।
আর তা হবার নয় এই শয়তানটা ওর বাবাকে সব বলে দেবে ওর বাবা আমাকে হয়ত তাড়াতে
পারবে না , তাড়ালে ওর এই মেয়েকে কে দেখবে ? কিন্তু তোমাকে তাড়িয়ে দেবে । আলী সাহেব বিশ্রী হেসে বললেন , জান আমি তোমার কোলে একটা সুন্দর সুস্থ তুলে দিতে পারি তার জন্য এই পথের কাঁটা তোমাকে সরিয়ে দিতে হবে । আর তার পর আমার সামনেই বাবাকে ফোন করে আলী সাহেব বললেন আমি আজ পড়াতে যেতে পারছি না আমার শরীর খারাপ , অথচ তখন উনি আমাদের বাড়িতেই দাঁড়িয়ে । তার পর ফোন কেটে মাকে বললো একে মেরে ফেলে দিয়ে তোমাকে সামান্য আঘাত করে কিছু সোনাদানা নিয়ে আমি চলে যাবো । ওর বাবা ফিরলে তোমাকে আহত আর মেয়েকে মৃত পাবে , বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র গায়েব থাকবে । সবাই ভাববে চোর এসে এ সব করে গেছে , তুমি ও এই একই কথা বলবে । এসব প্ল্যান করার সময় আমি পুতুলটা কোলে নিয়েই বুক ঘষে ঘষে পালাতে চেষ্টা করছিলাম তবে পারলাম না । আলী নামের বদমাশটা আমাকে এসে গলা টিপে হত্যা করলো । তার পর আমার নিথর শরীরটা ওই পুতুলটাকে ধরেই পড়ে রইলো মেঝেতে । বাড়ি ফিরে পরিস্থিতি দেখে বাবা ও মায়ের কথায় বিশ্বাস করে । আমার শেষকৃত্য করে দেয় , ভুল ওদের একজায়গায় হয়ে ছিল আমার শরীরটা পুড়িয়ে দিলো ওরা আর আমার আত্মা যাতে বন্দি ওই পুতুলটা ওরা আমার স্মৃতি সাজিয়ে বাড়িতেই রেখে দিল । কাল পূর্নগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ , আলীর কৃপায় পোয়াতি হওয়া আমার মা হবে আমার শিকার । এর আগে আমি আলীকে মেরেছি , ওর চোখ দুটো খুবলে , নখ দাঁত ছাড়িয়ে তরপে তরপে ওর মুন্ডু ছাড়িয়ে নিয়েছি শরীর থেকে । ওর এই বীভৎস মরণের পর আমার মা এমনিতেই অসুস্থ আর কাল তো মাকেও আমি ঐ একই ভাবে আলী সাহেবের কাছে পৌঁছে দেব । বাবা আমাকে খুব মিস করে আমার ভৌতিক পুতুলটা বুকে জড়িয়ে ধরে শুইয়ে থাকে রাতে । বাবা তুমি চিন্তা করো না দুষ্ট পচা গুলোকে নরকে পাঠিয়ে দিয়ে শুধু আমি আর তুমি দুজনে থাকবো । হি হি হি খুব মজা হবে তাই না !