Rima Goswami

Crime Fantasy Others

4.5  

Rima Goswami

Crime Fantasy Others

ঘনাদা রহস্য উন্মোচন পর্ব বারো

ঘনাদা রহস্য উন্মোচন পর্ব বারো

4 mins
406


জিদ্দি আদমি আমার না পসন্দ.... ভুল করলেন দেবাশীষ বাবু আপনি ...এখন আপনার প্রাণ যাবে আর সাথে আপনার চাচেরা ভাইয়ের ও...


একটা চেনা গলা পেয়ে আমি আর দাদা তাকালাম পিছন দিকে । আমরা নিচের গুপ্তধন দেখে মূর্তি যথাস্থানে নিয়ে ফিরে এসেছি এমন সময় আবির্ভাব ভৈরব সিংয়ের । 

লোকটার হাতে একটা পিস্তল । 

ঘনাদা হেসে বলল , শ্যামাপদ বাবুর প্রাণ নেবার ফন্দি ফিকির করতে করতে একেবারে এই সমাদ্দারের কপালে পিস্তল ঠেকাতে এলেন ভৈরব সিং ?

ভৈরব সিং : বেশি কথার প্যাঁচ দেবেন না দেবাশীষ বাবু । চুপচাপ মরে যান । নাহলে আপনার ওই বেটা মরবে । 

ঘনাদা : আমি জানি আপনি বা আপনার বংশজরা কতটা নিষ্ঠুর । আলাদা করে ওই দুধের বাচ্চাটার নামে ধমকি দিয়ে বুঝিয়ে দেবার প্রয়োজন নেই । 

ভৈরব সিং : জামাই রাজা তো আপনি ব্যানার্জীদের । আমি ওই হবেলীর চপ্পা চপ্পা নজর রাখি। সব শুনে ফেলেছি আগেই । লীনা জি ওই জন্যই আপনাকে দেখে এখানে থেকে গেলেন । নাহলে তো চলে যেতেন দেখা করে । 

ঘনাদা : ওসব বাদ দাও ভৈরব । বলো এই গুপ্ত মন্দিরের রহস্যর অর্ধেক জানার পরেও , মোহর নিজেরা পাবার পরেও কেন মারতে ব্যানার্জি বংশজদের ?

কেন কয়েক জন মারা গেছে মূর্তি গায়েব হবার পর যখন আবার ফেরত পাওয়া যায় ? তারা আসলে মোহর বা ওই গুপ্তধন নিয়ে কিছুই জানে না। 

ভৈরব সিংয়ের চোখে যেন আগুন ছড়িয়ে পড়লো । তারপর হিংস্র ভাবে বলল , বদলা দেবাশীষ বাবু ... বদলা । খুন কে বদলে খুন । 

নকর হয়ে আছি আমরা একের পর এক ওয়ারিশ ।অথচ আমরাও এই পরিবারের খুন আছি । আমার পাঁচ পুরুষ আগে রায়বাহাদুর আমাদের ঘরের ইজ্জতের উপর হাত দেয়। সিং বংশের রক্ত শেষ হয়ে শুরু হয় তাতে ব্যানার্জী পরিবারের রক্ত বইতে শুরু হলো। আমাদের সেই পূর্বপুরুষ কিন্তু নিজের পত্নীর পেটের সন্তানকে বুকে টেনে নেয়। তাকে ফেলে দেইনি । কিন্তু সেই রক্তে মিশিয়ে দেয় বিষ। বদলা নেবার বিষ। একের পর এক ওয়ারিশ দেবী মূর্তি গায়েব হবার পর আবার ফিরে আসার সাথে আশীর্বাদ স্বরূপ পায় মোহর । থেকে যায় ব্যানার্জিদের এই হবেলীতে । আর আসল ওয়ারিশ গুলো চলে যায় বাংলা । সেখানে ঘর বাড়ি পেতে বসে । কিন্তু উনি বলে গিয়েছিলেন ছেলেকে যে যখন যখন মূর্তি সরবে তখন তখন মোহর উঠবে । সেই মোহর যেন কোনদিন ব্যানার্জিদের চোখে না পড়ে । আর মূর্তি গায়েব হলে স্বাভাবিক ভাবেই তারা আসবে খোঁজে । তো কোন ভাবে তাদের মৃত্যু দণ্ড দেওয়া যেন হয়। রায়বাহাদুরের অন্যায়ের শাস্তি তার ওয়ারিশ গুলো পাবে । এবার পালা শ্যামাপদ ব্যানার্জির ।

ঘনাদা : কিন্তু হিডেন ট্রেজার পুরোটা পাবার চেষ্টা করেনি তোমাদের পরিবার ?

ভৈরব : করেছে কিন্তু পারেনি কেউ। আমার দাদাজী এক ট্রেজার হান্টারকে এনেছিল । সে টিলার ওদিকে রাস্তা দিয়ে নেমেছিল । কিন্তু আর সে ফেরেনি । আমরা কোনভাবেই মাটির নিচের রাস্তা খুঁজে পাইনি । সেই হান্টার ও ফেরেনি । হয়ত ওখানেই মরে গেছে । দেবীর প্রকোপ বলে মনে করেন দাদাজি সবটা । 

আর দেবী মূর্তির সাথে যে পরিমাণ মোহর উঠে আসে সেটা প্রচুর । আমার বংশের একের পর এক ওয়ারিশ ভোগ করবে সময়ের সাথে । আমরা রায়বাহাদুরের ঘর বাড়ি আর সম্পদ সব ভোগ করবো । আর আসল ওয়ারিশ পাবে শুধুই মরণ ।

ঘনাদা : এখানে কাজের লোক সেজে পড়ে আছো কেন ? সেই তো আসল মালিকরা এলে তাদের পায়ের তলায় থাকতে হয়।

ভৈরব : চাইলে আমি দুবাই চলে যেতে পারি । এতটাই সম্পদ আমার কাছে আছে । কিন্তু ওই যে আমার বংশের একটা টার্গেট আছে । সেটা এখানে থেকেই পূর্ন হবে । আর আমি ভৈরব সিং এখানে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে থাকি । ওরা আসেনা তেমন একটা ।

ঘনাদা : রায়বাহাদুর যা করেছে সেটা অন্যায় কিন্তু তোমরা যেটা করেছ সেটাও অন্যায় । এই সম্পদ সরকারি তহবিলে জমা হবে । আর কুবের যন্ত্রের স্প্রিং আমি নষ্ট করে দিয়েছি । তাই আগামী দিনে আর মূর্তি নামবে না বা মোহর ও উঠবে না । সব কিছু এখন ওপেন অবস্থায় আছে । আর ওই টিলার দিকের টানেল দুটো পথে গেছে একটা হবেলীর দিকে । আর একটা গেছে মন্দিরের এই ছবিটা মানে এটাই সেই দরজা যেখানে টানেল শেষ হয়েছে । 

ওই ট্রেজার হান্টার মারা পড়ে টানেলেই কঙ্কাল হয়ে পড়ে আছে । আমি ওকে আগেই দেখেছি । নিজেকে পুলিশের হাতে তুলে দাও । এখানেই শেষ হোক এই রহস্য আর খুন জখমের । 

ঘনাদা আর কিছু বলার আগেই লোকটা আমাকে এক ঝটকায় টেনে নিজের কাছে নিলো । আর পিস্তলটা আমার মাথায় ধরলো । আমি তো ভয়ে সিঁটকে রইলাম। ঘনাদা চিৎকার করে বলল , ভৈরব সিং বাবলুকে ছেড়ে দাও ।

ভৈরব সিং একটা বিচ্ছিরি হাসি দিয়ে বলল , আজ সব কটাকে মেরে ফেলি । ওই লীনা আর বাচ্চাকেও । তারপর এই সব মোহর নিয়ে আমার লাজো বিটিয়াকে নিয়ে চলে যাবো । সব খেল এখানেই শেষ হবে। শ্যামাপদ না সই ওদের গুষ্টির তিনটে লোক তো মরবে । ওদের বাড়ির মেয়ে , তার ইয়ার আর বাচ্চা ।

ঘনাদা : তুমি পালাতে পারবে না । পুলিশ কিন্তু চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে এরিয়া । আমি সব খবর আগেই দিয়ে দিয়েছি। শ্যামাপদ বাবুর মৃত্যুর ভুয়ো খবর দিতেই আমি তোমাকে সন্দেহ করেছিলাম । তারপর রাতের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া । আমি ওই হবেলীর সব নথি ঘেঁটে সব কিছু পুলিশকে পাঠিয়ে দিয়েছি ।

ভৈরব : ওই সব করেই কি হবে ? আপনার ভাই আর আপনি এখন মরবেন। আমার কিছুই করার নেই । 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Crime