বহিরাগত
বহিরাগত
বেশ কিছুদিন ধরে হাঁপিয়ে উঠেছে সুতপা। লকডাউন চলছে। করোনা নামক এক ভাইরাসের ভয়ে সে বাড়ির বিভিন্ন কাজে যারা সাহায্য করে তাদের আসতে বারণ করেছে। এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রেরমাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। শুধু তাই না দুধের প্যাকেটেও এই ভাইরাস সবার অজান্তে গোপন শ্ত্রুর মত বাড়ির অন্দরমহলে প্রবেশ করতে পারে।
সারাদিন সুতপার কাজের শেষ নেই। দুধের প্যাকেট এলে তাকে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে। সারাদিন রান্না করে, ঘর মুছে, কাপড় কেঁচে সে ক্লান্ত। ছেলে ও ছেলের বাবা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত ছেলের বাবার সারাদিন চোখ টিভির পর্দায়। নতুন কোনও খবর পেলেই ফেসবুকে আপডেট দিতে ব্যস্ত। ছেলে অনুরাগ ক্লাস নাইনে উঠেছে। একদিন রেগে ছেলেকে বলে মপ দিয়ে ঘরটা মুছতে। ছেলে মুছতে শুরু করে । কোথা থেকে ছেলের বাবা এসে বলে ‘ও কী পারবে? কোনদিন করেনি। বাচ্চা ছেলে।’ সুতপা জানায় ‘ক্লাস নাইনে উঠেছে।কিছুদিন পর বাইরে পড়তে যাবে। সব কাজ জানা ভালো। ’সেদিন ছেলে মুছলেও পরেরদিন থেকে সুতপার ঘর ঝাঁট দেওয়া হলেই অনুরাগের বাবা সৌরভ ছুটে আসে মপ নিয়ে ঘর মুছতে।
সুতপা ভাবে এই বাড়িকে সে নিজের মনে করলেও যার হাত ধরে এই বাড়িতে এসেছে তার কাছে সে এখনো বহিরাগত। না হলে এই কদিন রোজ বিকেল চারটের সময় স্নান খাওয়া করলেও সৌরভের একটুও খারাপ লাগেনি।