STORYMIRROR

Mitali Chakraborty

Abstract Inspirational

2  

Mitali Chakraborty

Abstract Inspirational

বেষ্টনী:-

বেষ্টনী:-

2 mins
406


নিজের হাত ঘড়ির দিকে তাকায় সুশ্রুতি। আরো এক ঘন্টা তাকে থাকতে হবে হাসপাতালে। তার আজকে ইভিনিং ডিউটি। যা ধকল যাচ্ছে বিগত ১০-১৫ দিন ধরে ডাক্তারদের উপর তা বলাই বাহুল্য। করোনা ভাইরাস আর লকডাউন মিলে সমগ্র ভারতের তথা বিশ্বের ডাক্তারদের এখন সব চেয়ে কঠিন সময় চলছে। যেখানে সকলকে বাড়িতে থাকার আবেদন করছেন ডাক্তাররা তেমনি করোনা আক্রান্তদের জন্যও সুনিশ্চিত করতে হচ্ছে উপযোগী চিকিৎসাও।

সুশ্রুতির হাসপাতালেও এসেছে দুটো করোনা কেস। তাছাড়াও হাসপাতাল চত্বরে রোগীদের ভিড় কম বেশি থাকেই। ডাক্তারদের এখন সব চেয়েয়ে বেশি ভয় আক্রান্ত হয়ে যাওয়ার। সুশ্রুতি হাসপাতালের পেছন দিকের করিডোরের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। ভাবছে উত্তরোত্তর বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা, কিভাবে মোকাবিলা করবে তারা? তার কষ্ট হয় নার্সদের জন্যও। প্রাথমিক শুশ্রূষা থেকে রোগীর ঠিক হওয়া পর্যন্ত তটস্থ থাকতে হয় নার্সদের। সে যখন এই সব এলোমেলো চিন্তায় ব্যস্ত তখুনি মোবাইলটা বেজে ওঠে। তার ৬ বছরের শিশুকন্যাটি ফোন করছে বাড়ির ল্যান্ড ফোন থেকে। সুশ্রুতি যখন হাসপাতালের জন্য বেরোচ্ছিল তখন খেলতে খেলতে বাবার কাছেই ঘুমিয়ে পড়েছিল ছোট্ট মিশু। এখন ঘুম ভেঙ্গেছে বোধ হয়, মায়ের কথা মনে পড়ছে বোধ হয় তার। ডক্টরস আ্যপ্রনের ভেতর থেকে মোবাইলটা নিয়ে কথা বলছে সুশ্রুতি।

- বলো মামনি? 

- মা, আমার তোমাকে খুব মনে পড়ছে।

- আমি খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবো সোনা। তুমি উঠে কিছু খেয়েছো?

- হ্যাঁ মা! বাপি বিস্কুট দিয়েছি

ল, খেয়েছি।

- তোমার বাপি কে ফোন টা দাও!

- হ্যাঁ মা।

- বলো সু...তুমি তো আর ঘণ্টাখানেক পরে ফিরবে? আমি আর মিশু ঠিক আছি,তুমি সাবধানে এসো। 

- হ্যাঁ গো। আমি সাবধানেই আছি। আসছি আর এক দেড় ঘণ্টা পরে।

ফোন টা কেটে দিল সুশ্রুতি। মিশু আর কর্তার সঙ্গে কথা বলে তার মনের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া দুশ্চিন্তাটা কমলো একটু। বাকি যা কাজ ছিল সব সেরে সময় মতো বেরিয়ে গেলো সুশ্রুতি।এখন যা পরিস্থিতি বাইরে যত কম থাকা যায় ততই মঙ্গল, কিন্তু তার তো বাড়িতে বসে থাকলে চলবে না। তাকে যে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। তবুও এত মন খারাপিয়া অবস্থাতেও সুশ্রুতি ভাবে তার পরিবার তাকে সাহায্য করছে যথাসম্ভব ভাবে। সে যখন হাসপাতালে চলে আসে তার কর্তা ঘর সহ বাচ্চার সমস্ত দায়িত্ব নিজে সামলাযন। তার কর্তার অফিস লক ডাউনের কারণে বন্ধ, কিন্তু বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করা ছাড়াও ঘরের কাজে যথেষ্ট যোগদান দেন তিনি নিজে। সুশ্রুতি ভাবে পরিবারের বেষ্টনীতে ভালোবাসার ছায়ায় আবদ্ধ আছে বলেই এই গুরু গম্ভীর সময়েও নিজের দায়িত্ব নিজে সুচারুভাবে পালন করে যেতে পারছে সুশ্রুতি। নাহলে দিনান্তে সেও করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বাড়তে থাকা রোগীদের সংখ্যার কথা ভাবতে ভাবতে নিজেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ত, এক ঋনাত্মক বা নেতিবাচক চিন্তা গ্রাস করতো তাকেও। এই জায়গা থেকে নিজেকে মানসিকদিক দিয়ে সে সুস্থ রেখে রোগীর সেবায় নিমজ্জিত হতে পেরেছে কেবল তার পরিবার তার পাশে থেকে দৃঢ়চেতার ভূমিকা পালন করছে বলে। 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract