বাকরুদ্ধ
বাকরুদ্ধ
( লিখতে গিয়ে মাঝে মধ্যে বানান ভুল হয় , সমালোচনা না করে ক্ষমা করে দেবেন , যেটা বলতে চেয়েছি সেটা বোঝার চেষ্টা করলে খুশি হবো ।)
কয়েকদিন ধরেই ভাবছি , সারা দেশ যখন উত্তাল ঠিক সেই মুহূর্তে আমি বাকরুদ্ধ । কারণ অনেক সন্মানীয় - সন্মানীয় সাহিত্যিক রয়েছেন তাদের প্রতিবাদের ভাষা আর আমার সাধারণ কলম জানিনা ঠিক কি বলবো ? কতটা গুছিয়ে বলতে পারবো ?
জানেন তখন আমি খুব ছোট, মুখের দুই মারিতে একটাও দাঁত নেই । মুখে কোনো ভাষা নেই , শুধু কাঁদতে পারি । ধরুন এক তরফে বোবাই বলা চলে । ববাদের ভাষা আমরা যেমন বুঝতে পারিনা ঠিক সেই সময় হয়তো আমি কি বলতে চাইছি সেটা কেউই বুঝে উঠতে পারত না। শুধু মাত্র একজন বুঝতে পারতেন সেটা হলো আমার মা । আজ 45 বছর বয়সে যখন সেই দিনটার কথা আজ ভবি বড্ড অবাক লাগে । পৃথিবীর একটা মাত্র মানুষ যেকিনা আমার কান্না শুনেই বুঝতে পারতেন কোনটা আমার খিদের কান্না আর কোনটা ঘুমের ? কোন কান্নাটা তাকে বলে দিতো আমার শরীরটা মোটেও ভালো নেই । হবেনা বা কানো বলুন — 10 মাস আমাকে তার পেটের মধ্যে রেখে আমাকে তিল তিল করে বড় করে তুলেছেন । একটা কথা ভাবলে আজও আমার অবাক লাগে , আমাদের দেহে একটা ফুসকুড়ি অথবা একটা ফোড়া হলে কতটা যন্ত্রনা হয় । অথচ একটা মা একটা আস্ত প্রানকে দেহের মধ্যে ধারণ করে হাঁসি মুখে সেই যন্ত্রনা সহন করেন ।
জানেন সেদিন আমার নারী অঙ্গের প্রতি কোন ধারনা ছিলোনা , শুধু এটুকু জানতাম ওই নারির বুকের মাঝে আমি হয়তো সুরক্ষিত ছিলাম , এতোটাই সুরক্ষিত যে যেখানে মৃত্যু ভয় পর্যন্ত নগন্য। কারণ সেদিন আমার মনে হয়েছিল ওই নারী নিজে মরে যাবে কিন্তু আমার ক্ষতি হোতে দেবেনা।
আজ আমি নারীদের হয়তো বহু অঙ্গের সম্বন্ধে জানি । মায়ের কাছথেকে যে দুগ্ধ পান করে বড় হয়েছি , শুদ্ধ বাংলায় তাকে বলে স্থান , আজ আমি জানি তাদের দেহের যোনি সম্বন্ধে , আজ আমি জানি তাদের গোপন সকল অঙ্গের সম্বন্ধে এর বাইরেও আর একটা বিষয় জানি তাদের মানসিক শক্তির সম্বন্ধে । তাদের যুদ্ধের পারদর্শিতা সম্বন্ধে , হয়তো দোহিক শক্তিতে তারা আমাদের থেকে সামান্য দূর্বল কিন্তু মানসিক শক্তিতে পুরুষের থেকে একশত গুন এগিয়ে তারা , তারা সংসারের সকল পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে তারা ।
আজ আমি বিবাহিত তাই আমি জানি তাদের দেহের অনুভূতি সম্বন্ধে , জানি সহবাস সম্বন্ধে , জানি মাসিক সম্বন্ধে , হয়তো আরো অনেক কিছুই জানি , তার সাথে জানি সামাজিক সম্পর্ক গুলোর সম্বন্ধে । আমি জানি অঙ্গ - প্রত্যঙ্গ যতই এক হোক বোন মনে সে বোন , মা মানে সে মা আর স্ত্রী মনে সে স্ত্রী ।
এতগুলো কথা বলার কারণ , ওদের আমি কিছুতেই চিনতে পারছিনা কিছুতেই বুঝতে পারছিনা , যারা বন্ধু , ভাই বা দাদার ছদ্মবেশে থেকে পৈশাচিক দৃষ্টিতে দেখে একটা মেয়েকে । এদেরকে সারমেও বললেও হয়তো একটু না একটু কেনো অনেকটা ভুল বলা হবে । হ্যাঁ , এটা ঠিক সরমেও প্রজাতির কাছে , কোন সম্পর্কের ঘেরা টোপ নেই কিন্তু এইরুপ হিংস্রতা ওদের মধ্যেও দেখা মেলা বিরল ঠিক সেখানে দাড়িয়ে কিছু শিক্ষিত মানুষ , যাদের ঝুলিতে অনেক বড় বড় ডিগ্রি রয়েছে , তারাওতো কর না কার অন্ত্রে 10 মাস কাটিয়েছে । ওই জঘন্য , কদর্য মানুষগুলোকি মায়ের কোলের স্পর্শ পায়নি কোনদিন , তাদের কারো ঘরেকি মা - বোন ছিলোনা ? তারাকি রাখির বন্ধনে আবদ্ধ হয়নি কোনদিন , তাদের দীর্ঘ প্রাণ কামনা করেকি কোন বোন ভাইফোঁটা দেয়নি কখনো? তার পরেও তারা কীকরে এত টা নিসংস হয়ে উঠতে পারে , একটি মেয়ের দেহে আঘাত হানার আগে একটি বড়কি তাদের চোখের সামনে তাদের মা - বোনের মুখটা ভেসে ওঠেনি ?
ওঠেনি , কারণ ওরা এই সমাজে বেঁচে থাকার মত মানুষই নয় । মানুষ বললে মানব সমাজের অপমান করা হয় । তাহলে এরা করা ? আমার মনে হয়েছে এরা সাজের সেই কিট যাদের কীটনাশক দিয়ে শেষ করে দিতে হয় । ওরা এই সমাজের ঘুন পোকা , যতদিন বেঁচে থাকবে সমাজটাকে খুবলে খুবলে খাবে । তাই এদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যু দণ্ড । সমাজের বুক থেকে এদের সম্পূর্ন ভাবে বিনাস না করতে পারলে , ধীরে ধীরে সমাজটাই ঘুন পোকাতে ভরে উঠবে , কঠিন হয়ে উঠবে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা , কঠিন হয়ে উঠবে সম্পর্কের টিকে থাকা ।
এটা আমার অভিব্যক্তি , জানিনা আপনারা ঠিক কি ভাবেন ? আমি যদি কিছু ভুল বলে থাকি তাহলে ক্ষমা করে দেবেন , আর যদি মনেহয় আমি ঠিক বলছি তাহলে পাশে থেকে একটা সমর্থন জানাবেন ।
নমস্কার
