Sanchaita Roy Chowdhury

Abstract Romance Others

4  

Sanchaita Roy Chowdhury

Abstract Romance Others

অন্যরকম ভালোবাসা

অন্যরকম ভালোবাসা

8 mins
43


অন্যরকম ভালোবাসা 

পর্ব - ৪২


অদৃত আর্যর পাশে গিয়ে বসলো। 

অদৃত বলল,'আজকে রাত্রিবেলা খাওনি কেন? কোথা থেকে খেয়ে এসেছো? আমাকে তো জানাওনি একবারও যে তুমি খেয়ে আসবে?'

আর্য একটি কথারও উত্তর করল না। অদৃত দেখলো আর্য নিঃশব্দে চোখবুজে ঘুমিয়ে থাকার অভিনয় করছে ।

অদৃত বলল,'আমি জানি আর্য তুমি ঘুমাওনি তাই খামোখা নাটক করার দরকার নেই। কথা বলতে না চাইলে বলে দাও আমি চলে যাচ্ছি। এমনিতেও আজকাল আমরা যখনই কথা বলি অশান্তি হয়।'

আর্য উঠে বলল,'কি জানতে চাও?'

অদৃত বলল,'তুমি খাওনি কেন? আমি ভালো মতোন জানি তুমি বাইরে খাওনি তাহলে কেন খেলে না?'

আর্য বলল,'আমার খেতে ইচ্ছা হচ্ছিল না তাই। আর আমি তোমাকে সব কথা বলবোই বা কেন ? তুমি কি আমাকে সব কথা বলো? এই যে তুমি পত্রলেখার সাথে ডিনারে যাবে এই কথাতো আমাকে আগে বলোনি।'

অদৃত বলল,'এই ব্যাপারটা মা-বাবা হঠাৎ করে ঠিক করেছিল । আমার যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু বাবার শরীরের কথা চিন্তা করে আর না করতে পারিনি। আমি যদি না যেতাম সেটা নিয়ে যথেষ্ট অশান্তি হত, আমি চাইনা আর কোনো অশান্তি হোক কারণ ডাক্তার বারবার বলে দিয়েছে বাবাকে কোনোভাবেই কোনোরকমের চিন্তা দেওয়া যাবে না ।তাই গিয়েছিলাম নয়তো আমার যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিল না। '

আর্য বলল,'সত্যিই কি আঙ্কেলের শরীর খারাপ ছিল বলে গিয়েছিলে?'

অদৃত বলল,'মানে? সবকিছু শোনার পর এই প্রশ্ন করাটা অর্থহীন না?'

আর্য কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর বলল,'এতো দেরী হল কেন?'

অদৃত বলল,'ডিনারে গিয়ে আচমকাই আমার আর পত্রলেখার কিছু পুরোনো বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গিয়েছিল তাই ফিরতে দেরী হল।'

অদৃত বলল,'ওহ্! আরেকটা কথা বলার ছিল সেইদিন রাতে ওইরকম আচরণ করাটা আমার উচিত হয়নি তার জন্য আমি সত্যিই ক্ষমা চাইছি।'

আর্য শান্ত হয়ে ম্লান হেসে বলল,'আমি জানি কথাগুলো তুমি ইচ্ছা করে বলোনি। হয়তো আমিও তোমার জায়গায় থাকলে ওইরকমই করতাম । '









যতদিন যাচ্ছে ততই অদৃতের মুখের মধ্যে একটা গভীর চিন্তার ছাপ খুব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে। অদৃতের মুখের হাসিটাও আগের মতোন আর প্রাণোচ্ছল নেই । 

আর্য ভাবলো,'আমি জানি তুমি ভালো নেই। তোমার চোখমুখ বলছে তুমি ঠিক নেই। তাও তুমি আমাকে নিয়েই ভেবে যাচ্ছো। একদিন তুমি আমাকে বলেছিলে আমি নাকি প্রবলভাবে ভালোবাসতে পারি। কিন্তু তুমি তো তার চেয়েও বেশি ভালোবাসতে পারো। শুনেছি মানুষ জীবনকে নাকি যতটুকু দেয় জীবনও মানুষকে ঠিক ততটুকুই দেয়। আমি জানি না আমি আমার জীবনকে ঠিক কতটুকু দিয়েছি? কিন্তু জীবন আমাকে অনেক দিয়েছে। তোমার মতোন একজন ভালোবাসার মানুষকে দিয়েছে। এই জন্মে আমার যদি কোনো ভালো প্রাপ্তি থেকে থাকে তাহলে সেটা তুমি।'

অদৃত দেখলো আর্য তার দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে কিছু ভাবছে।

অদৃত বলল,'কি ভাবছো?'

আর্য বলল,'কিছু না ।

তোমাকে একটা কথা বলার ছিল ।'

অদৃত বলল,'হ্যাঁ বলো।'

আর্য বলল,'রবিবার দিন ত্রিদিব দাদা আমার আঁকার একটা একজিবিশন রেখেছে।'

অদৃত বলল,'তাই। বাহ্! এটাতো খুব ভালো খবর।'

আর্য বলল,'তুমি যাবে তো?'

অদৃত বলল,'অবশ্যই যাবো। তোমার একজিবিশন বলে কথা আমাকে তো যেতেই হবে।

কিন্তু এবার চলো একটু কিছু খেয়ে নেবে।'

আর্য বলল,'না আমি খাবো না।'

অদৃত বলল,'আমি বলছি অন্তত একটু খেয়ে নেবে চলো।'

অদৃতের জোরাজুরিতে অল্প কিছু মুখে দিলো আর্য। 







আর্যর ঘরে গিয়ে অদৃত বলল,'আর্য আমাকে এবার যেতে হবে । 

আরেকটা কথা পরশুদিন আমার বাবা-মায়ের বিবাহ বার্ষিকী । '

আর্য বলল,'জানি। '

অদৃত বলল,'তুমি জানো?'

আর্য বলল,'হ্যাঁ । আমি তো প্রথম দিন থেকেই জানি।'

অদৃত বলল,'কি করে? '

আর্য বলল,'আন্টি আঙ্কেল বলেছিলো না যে আমার বাবাকে নেমন্তন্ন করবে। মনে আছে?'

অদৃতের মনে পড়লো আগের কথা, তার মা-বাবা আর্যর বাবাকে এই অনুষ্ঠানে নেমন্তন্ন করতে আগ্রহী ছিলেন কিন্তু তখন তারা জানতেন না আর্যর বাবা তমাল সেন । 

আর্য বলল,' ভালো হয়েছে জেনে গেছে আমার বাবা তমাল সেন নয়তো আবার তোমাকে আমার জন্য মিথ্যে কথা বলতে হত।'










সকালবেলায় আর্য আর্ট গ্যালারিতে বেড়ানোর সময় দেখলো পত্রলেখা এসেছে।

পত্রলেখা বলল,'আন্টি তোমার ছেলেকে বলে দাও ও যেন শপিংয়ে বেরিয়ে আমাকে তাড়া না দেয়।'

অদৃত বলল,'আমি দেবো না । আর তাছাড়া আমি তো দু'দিন ছুটি নিয়েছি। এখন চলো দেরী হয়ে যাচ্ছে ।'

শ্রেয়সী বলল,'সমস্তকিছু তোদের দুইজনের দায়িত্ব তোরা দুইজনে যেটা ভালো বুঝবি সেটাই করিস।'

পত্রলেখা হেসে বলল,'ঠিক আছে আন্টি । এখন আসছি আমরা।'

আর্য ভাবলো,'এতো সকাল সকাল ওরা দুইজনে একসাথে কোথায় বেড়ালো? আমাকে তো কাল রাতে কত কথা বলল কিন্তু বেড়ানোর ব্যাপারে কিছু বলেনি তো অদৃত ।'









অদৃত শপিং মলে গিয়ে বলল,'তুমি শপিং করো আমি ওইদিকটাতে আছি।'

পত্রলেখা বলল,'ওইদিকে আছি মানে? তুমিও তো উপহার কিনবে আঙ্কেল - আন্টির জন্য । চলো একসাথে কিনবো।'

অদৃত বলল,' না আমি পরে কিনবো। আমি আর্....' কথাটা বলে অদৃত থেমে গেল।

পত্রলেখা বলল,'না এক্ষুনি কিনবে চলো বলছি।'

অদৃত বলল,'না বললাম তো।'

পত্রলেখা অদৃতের কথা না শুনে জোর করে অদৃতকে নিয়ে গেল ।

আর্য আর্ট গ্যালারিতে গিয়ে ত্রিদিবকে বলল,'দাদা তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো ?'

ত্রিদিব বলল,'হ্যাঁ করো।'

আর্য বলল,' কালকে আঙ্কেল আর আন্টির বিবাহ বার্ষিকী আছে। ওনাদের কি উপহার দেবো তা ঠিক বুঝতে পারছিনা।'

ত্রিদিব বলল,'তুমি তো ভালো ছবি আঁকতে পারো তুমি ওদের দুজনের একটা ছবি এঁকে দিতেই পারো।'

আর্য বলল ,'আমি অদৃতের জন্মদিনে ওকে একটা ছবি এঁকে দিয়েছিলাম। তাই সেটা আরেকবার দেওয়াটা কি ঠিক হবে?'

ত্রিদিব বলল,'কেন ঠিক হবে না? তুমি তো আর একই ছবি উপহার দেবে না। তার থেকেও বড়ো বিষয় হল নিজের সৃষ্টি কাউকে উপহার দেওয়াটা সবথেকে বড় আনন্দের আর সেটাই সবথেকে বড় উপহার হয় আর্য। সেখানে কোটি টাকার উপহারও হার মানে।'

আর্য চুপ করে রইলো ।

ত্রিদিব বলল,'নাহলে তুমি একটা কাজ করতে পারো তুমি অদৃতের সাথে গিফ্ট কিনতে যেতে পারো। ওর বাবা-মা ও ভালো জানবে ওরা কিরকম গিফ্ট পছন্দ করে । আর এর মাঝখানে তোমাদের দুইজনের একটু সময় কাটানোও হয়ে যাবে। কেমন বুদ্ধিটা?'

আর্য উজ্জ্বল মুখে বলে উঠলো,'সেরা।'






দুপুরে আর্য অদৃতকে ফোন করলো । ফোন ধরতেই অদৃত বলল,'হ্যাঁ আর্য বলো।'

আর্য বলল,' আজ সন্ধ্যেবেলায় তুমি ফাঁকা আছো।' অদৃত বলল,' হ্যাঁ আছি । কেন বলোতো?'

আর্য বলল,' আসলে ভাবছিলাম আমি আঙ্কেল আর আন্টির জন্য কিছু কিনতে যাবো। কিন্তু কি দেবো বুঝতে পারছি না ।'

অদৃত বলল,'তুমি আবার কেন দিতে যাবে ?'

আর্য বলল,'আমার ইচ্ছা হয়েছে আমি দেব ।'

অদৃত বলল,' ঠিক আছে তুমি বাড়ি ফেরো তারপর একসাথে বেড়াবো।'

আর্য অদৃতের সাথে বেড়াবে বলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরলো আর্ট গ্যালারি থেকে। 

আর্য তৈরী হয়ে নিচে নেমে দেখলো অদৃত আর পত্রলেখা কোথাও বেড়াচ্ছে।

আর্য অদৃতকে বলল ,'অদৃত তুমি কোথাও বেড়াচ্ছো?'

অদৃত বলল,' ও আর্য! তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি একটুখানি পত্রলেখার সাথে কেকের অর্ডারটা দিয়েই আসছি । তুমি একটু অপেক্ষা করো কেমন?' সোফায় বসে আর্য অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করল অদৃতের জন্য । কিন্তু অনেক রাত হয়ে গেলেও অদৃত বাড়ি ফিরল না। কিছুক্ষণ পর শ্রেয়সী এসে দেখলো আর্য সোফায় বসে আছে।

সে জিজ্ঞাসা করল,' কি হল আর্য তুমি বসে আছো এখানে? কোথাও যাবে?'

আর্য বলল ,'হ্যাঁ....এই মানে একটু বেড়ানোর ছিল।' শ্রেয়সী বলল ,'যদি কোথাও বেড়ানোর হয় তাহলে এখন বেড়িয়ে যাও নয়তো আর কখন বেড়োবে! অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে তো ।'

আর্য ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ঘড়িতে তখন বাজে রাত আটটা।

আর্য ভাবলো,'এতোটা রাত হয়ে যাচ্ছে অদৃত কখন আসবে?'

শ্রেয়সী বলল,' কোথায় বেড়াবে আর্য?'

আর্য বলল,' আসলে কালকে তো তোমাদের বিবাহ বার্ষিকী তাই ভাবছিলাম যদি......'

কথাটার মাঝখানে আর্যকে থামিয়ে দিয়ে শ্রেয়সী বলল,' তোমার আমাদেরকে কিছু দিতে হবে না। আমরা তোমার কাছ থেকে যেটা চেয়েছি সেটা যদি তুমি দাও আমরা তাতেই খুশি হবো আর আলাদা করে বিশেষ কিছু দেওয়ার দরকার নেই।'

সে অনেক উৎসাহ নিয়ে ভালোবেসে তাদেরকে কিছু দিতে চেয়েছিল কিন্তু শ্রেয়সীর এইরূপ আচরণে আর্যর খুব খারাপ লাগলো । 

আর্য বলল ,'ঠিক আছে ।'







অদৃত যখন বাড়ি ফিরলো, তখন বাজে রাত দশটা। অদৃত বাড়ি ফিরে দেখলো আর্য তখনও সোফায় বসে অপেক্ষা করছে তার জন্য । অদৃত আর্যকে দেখে কপালে হাত দিয়ে বলল,' ও সরি! আমি একদম ভুলে গিয়েছিলাম তোমার সাথে বেড়ানোর ছিল। তোমাকে বলেছিলাম আমি তোমার সাথে উপহার কিনতে যাবো । আই এম রিয়েলি ভেরি ভেরি সরি! এক কাজ করা যায় কাল সকালে গেলে হয় কিন্তু কাল সকালে একটু ব্যস্ত আছি ঠিক আছে সেরকম একটা অসুবিধা হবে না।'

আর্য গম্ভীর মুখে বলল,' থাক তার আর কোনো দরকার নেই।'

অদৃত বলল ,'আমি সত্যি বলছি পত্রলেখার সাথে কেনাকাটা করতে গিয়ে আমি পুরোপুরি ভুলে গিয়েছিলাম। আসলে এই অনুষ্ঠানের সমস্ত দায়িত্বভার আমার আর পত্রলেখার উপরেই মা-বাবা দিয়েছেন । ওয়ানস এগেইন আই এম রিয়েলি ভেরি সরি !'

আর্য বলল ,'বললাম তো থাক । '

অদৃত বলল,' রাগ করার কি আছে ? আজকাল তুমি সব কথায় কেমন রাগ করো।'

আর্য একটা কথাও আর বলল না। আর্য ঘরে গেলে অদৃতও তার সাথে সাথে যায় ।

অদৃত বলল ,'আসলে পথলেখার সাথে কেকের অর্ডার দিতে গিয়ে ডেকোরেশনের কিছু জিনিস কেনা বাকি ছিল । সেগুলো কিনতে গিয়ে অনেকটা দেরি হয়ে গেল।'

আর্য বলল,' তোমার গিফ্ট কেনা হয়ে গেছে?'

অদৃত সঙ্কোচ করে বলল,' হ্যাঁ মানে সকালে পত্রলেখা বলল ওর সাথে গিফ্টটা কিনে নিতে। আমি বলেছিলাম আমি এখন গিফ্ট কিনব না ।আমার ইচ্ছা ছিল তোমার সাথে কেনার কিন্তু ও....'

আর্য বলল,' ও এমন ভাবে আবদার করল তোমার কাছে যে তুমি ফেলতেই পারোনি তাই না ? ওকি সত্যিই তোমার শুধু বন্ধুই হয় নাকি ......'

অদৃত রেগে গিয়ে বলল ,'এবার তুমি আমাকে সন্দেহ করবে নাকি ? আজকাল তোমার সাথে দেখছি কোনো কথাই বলা যায় না প্রত্যেকটা কথাতেই তুমি একটা না একটা কিছু বার করবে। কেন??'

আজকাল অদৃত সামান্য বিষয় নিয়ে ভীষণ রেগে যায় হয়তো তাকে সমস্ত ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হচ্ছে তাইজন্য । সে না পারছে আর্যকে ভুলে থাকতে না পারছে তার মা-বাবার কথা ফেলতে তাই হয়তো তার কষ্টটা একটু বেশিই হচ্ছে । 

আর্য বলল,'আমি তোমাকে সন্দেহ করছি না শুধু জিজ্ঞাসা করছি।'

অদৃত বলল,'আমি তোমাকে আগেও বলেছি এখনও বলছি ও আমার খুব কাছের একজন বন্ধু হয় ব্যস্।' 

কথাটা বলেই অদৃত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। 







পরদিন সকাল থেকেই রায় বাড়ি এক নতুন রূপে সেজে উঠছে। সবাই আজ খুব ব্যস্ত একমাত্র আর্য ছাড়া। বাড়িতে সকাল থেকেই কত লোকের আগমন। আজ সকাল থেকে অদৃত একবারও আর্যর ঘরে যেতে পারেনি, তার সাথে দেখাও করতে পারেনি। অদৃত আর পত্রলেখার আজ দাঁড়ানোর সময় পর্যন্ত নেই। সারাক্ষণ বিভিন্ন কাজ নিয়ে ছোটাছুটি করছে তারা । বাড়ির ডেকোরেশনের সমস্ত দায়িত্ব অদৃত এবং পত্রলেখার ওপর। 

একটু ফাঁকা হয়ে অদৃত তার ঘর থেকে একটা ব্যাগ হাতে বেরাচ্ছিল সেইমূহূর্তে ইন্দ্রনীল এবং শ্রেয়সী অদৃতের ঘরে আসছিল।

অদৃত তাদের দেখে বলল,'তোমরা?'

শ্রেয়সী বলল,'হ্যাঁ কোথাও যাচ্ছিস?'

অদৃত বলল,'না।এই...'

ইন্দ্রনীল বলল,'তোমার হাতে ওটা কি?'

অদৃত বলল,'ও এটা। সেরকম কিছু নয়। ওই আর্যর একটা পাঞ্জাবী কিনেছিলাম সেটাই ওকে দিতে যাচ্ছিলাম।'

ইন্দ্রনীল এবং শ্রেয়সী কথাটা শুনে একে অপরের দিকে তাকালো । 

ইন্দ্রনীল বলল,'হাতজোড় করছি এগুলো বন্ধ করো। অন্তত আজকের দিনটা তুমি পত্রলেখার সাথে থাকো। সবাই জেনে গেছে তোমাদের আশীর্বাদের কথাটা আর তুমি....'

অদৃত বলল,'আমি তো তোমাদের কথা মতোন এখন ওর সাথেই আছি। এতক্ষণ তো ছিলাম। তারপরেও....'

শ্রেয়সী বলল,'এতো উত্তেজিত হয়ে পোড়োনা তোমার শরীরের পক্ষে ভালো নয়। আমি কথা বলছি ওর সাথে।'

শ্রেয়সী অদৃতকে বলল,'পাঞ্জাবীটা আমাকে দে আমি দিয়ে আসছি।'

অদৃত পাঞ্জাবীর ব্যাগটা তার মায়ের হাতে দিতে গিয়ে দোটানায় পড়লো। 

শ্রেয়সী তার হাত থেকে ব্যাগটা জোরপূর্বক নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলল,'আজকে একটু পত্রলেখার সাথে থাক।'

অদৃত বলল,'মা আমিতো ওর সাথে আছি সকাল থেকে ।'

শ্রেয়সী বলল,'আমি জানি তাও বলছি। '

পাঞ্জাবীর ব্যাগটা দেখিয়ে শ্রেয়সী বলল,'আর এটার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।'








বেলার দিকে শ্রেয়সী নিরঞ্জনকে পাঞ্জাবীর ব্যাগটা দিয়ে বলল,'নিরঞ্জন এটা আর্যর ঘরে গিয়ে দিয়ে এসো। বোলো অদৃত পাঠিয়েছে।'

আর্যর ঘরে গিয়ে নিরঞ্জন পাঞ্জাবীর ব্যাগটা দিয়ে বলল,'এটা অদৃতবাবা পাঠিয়েছে ।'

আর্য বলল,'আমার জন্য?'

নিরঞ্জন বলল,'হ্যাঁ ।'

অদৃত বলল,'আচ্ছা।'

গতরাতের অশান্তির পর থেকে আর্যর সাথে তার আর কথা হয়নি।

আর্য ভাবলো,'হঠাৎ নিরঞ্জন কাকার হাত দিয়ে পাঠালো কেন? এর আগে যতবার উপহার দিয়েছে প্রতিবার নিজে হাতে করেই দিয়েছে । মনে হয় খুব রাগ হয়েছে ।'







To be continued.....................


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract