Sanchaita Roy Chowdhury

Romance Inspirational Others

4  

Sanchaita Roy Chowdhury

Romance Inspirational Others

অন্যরকম ভালোবাসা

অন্যরকম ভালোবাসা

14 mins
58


অন্যরকম ভালোবাসা 

পর্ব - ৪৮


তমাল সেন এবং আর্য অদৃতের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে অদৃত সদর দরজার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে পাথরের মূর্তির মতোন দাঁড়িয়ে রইলো। সে কি করবে কিছু বুঝতে পারল না । তার চারপাশটা ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। 

শ্রেয়সী বলল,'ভগবান যা করেন তা মঙ্গলের জন্যই করেন । এইবার দেখো ইন্দ্রনীল সব ভালো মতোন মিটবে। আমরা ধুমধাম করে আমাদের অদৃতের বিয়ে দেবো।'

ইন্দ্রনীল একটা কথাও বলল না।






অদৃত নিজের ঘরে গেল। তার খুব কষ্ট হচ্ছে আজ । সে কখনো ভাবেনি তার জীবনটা এমন একটা গহীন খাদের সামনে এসে উপস্থিত হবে, যার কোনো তল খুঁজে পাবে না সে। সে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলো আর্যকে নিয়ে।

নিরঞ্জন এসে বলল,'অদৃতবাবা নীচে তোমাকে সবাই খেতে ডাকছে।'

অদৃত বলল ,'আমার ক্ষিদে নেই নিরঞ্জন কাকা ।তুমি চলে যাও।'

নিরঞ্জন নীচে গিয়ে জানালে শ্রেয়সী বলল,'ও মা! একি কথা? খাবে না কেন? সকাল থেকে কিচ্ছু খায়নি তাহলে কেমনভাবে ক্ষিদে পাবে না ? দেখি আমি গিয়ে বলি তো একবার ।'

ইন্দ্রনীল শ্রেয়সীকে বাঁধা দিয়ে বলল,'যেও না। ওকে একটু একা থাকতে দাও । সময় হলে ও ঠিক খাবে।'







দুপুরে খাওয়ার পর সৌনক অদৃতের ঘরে এসে দরজা ঠক্ঠক্ করলে, অদৃত বিরক্ত হয়ে বলল,'বললাম তো নিরঞ্জন কাকা আমি খাবো না। তারপরও তুমি........' কথাটা বলতে বলতে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো,সৌনক এসেছে ।

সে বলল,'ও তুই। আয়।'

সৌনক অদৃতের পাশে বসে তার কাঁধে হাত রেখে বলল,'সমস্তকিছু আমাদের হাতের মধ্যে থাকে না অদৃত। আর্যর চলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তাই। দেখিস ওর রাগ কমলে ঠিক ফিরে আসবে।'

অদৃত বলল,'রাগ করে চলে গেলে আমার ভয় লাগতো না আমি জানতাম তা কমবে। কিন্তু ও তো রাগ করে যায়নি ও তো অভিমান করে চলে গেছে। কেউ অভিমান করে ছেড়ে চলে গেলে সেখানে আশা রাখা যায় না । '

সৌনক বলল,'এইভাবে ভেঙে পড়িস না। এই অদৃত যে আমার কাছে বড্ড অচেনা । একটু বিশ্বাস রাখ আর্যর ওপরে।'

অদৃত চোখে জল নিয়ে বলল,' আমি যে আর্যকে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছিরে । আমি ওকে ছেড়ে কিভাবে থাকবো আমি জানি না । আমি কি করতাম একটু বলতে পারিস? আমার একদিকে বাবা-মা আরেক দিকে আর্য । আমি কখনো চাইনি আর্যকে ছেড়ে দিতে আর না চেয়েছি ও আমাকে ছেড়ে চলে যাক।'








রাত্রিবেলা খাওয়ার টেবিলেও অদৃত খেতে এলো না । শ্রেয়সী বলল,'ও এখনও এলো না। আমি একবার কথা বলে আসি।'

শ্রেয়সী অদৃতের ঘরে গিয়ে বলল,'একি তুই এইভাবে এখানে শুয়ে আছিস কেন? খাবি না?'

অদৃত বলল,'না।'

শ্রেয়সী বলল,'কেন নয়? চল খেতে চল।'

অদৃত রেগে গিয়ে বলল,'আমি বললাম তো খাবো না ।তুমি প্লিজ চলে যাও। আমাকে একটু একা থাকতে দাও প্লিজ! '

শ্রেয়সী নিরাস মুখে বেরিয়ে এলো।






রাতে শোয়ার সময় ইন্দ্রনীল শ্রেয়সীকে বলল,'অদৃতের জন্য কিছু খাবার পাঠিয়েছিলে?'

শ্রেয়সী কিছু একটা ভাবতে ভাবতে বলল,'হুম্ ।'

ইন্দ্রনীল বলল,'খেয়েছিলো?'

শ্রেয়সী অন্যমনস্ক হয়ে বলল,'না।

আচ্ছা তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?'

ইন্দ্রনীল বলল,'হ্যাঁ বলো।'

শ্রেয়সী বলল,'আমরা অদৃতের এই সম্পর্কটা ভেঙে দিয়ে ঠিক করেছি না? '

ইন্দ্রনীল বলল,'সেটা সময় আসলেই বোঝা যাবে। সময় খুব বড়ো উত্তরদাতা । আমার মতে জীবন এবং সময় আমাদের জীবনের সবথেকে বড় শিক্ষক। সময়ই আমাদের ভালোমন্দ,ঠিক, ভুল প্রয়োজনীয়তা এবং অপ্রয়োজনীয়তাগুলো বুঝতে সাহায্য করে।'

শ্রেয়সী বলল,'তুমি এমনভাবে বলছো কেন? 

হ্যাঁ, আমরা ঠিক করেছি এই সম্পর্কটা ভেঙে দিয়ে । পত্রলেখা যথেষ্ট ভালো মেয়ে । ও অদৃতকে খুব ভালো রাখবে ।'

ইন্দ্রনীল বলল,'তুমি কি নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছো?'

শ্রেয়সী ঝাঁঝিয়ে উঠে বলল,'কি?'

ইন্দ্রনীল বলল,'না মানে আমরা সম্পর্ক ভাঙার কে? যদি ওরা সত্যিই একে অপরকে ভালোবেসে থাকে তাহলে পৃথিবীর কেউ ওদের আলাদা করতে পারবে না । আমরা ওদের হয়তো একে অপরের থেকে শারীরিকভাবে আলাদা করে দিতে পারবো, কিন্তু মানসিকভাবে কি পারবো? না তা পারবো না । আমরা অদৃতের বাহ্যিক কাঠামো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি কিন্তু আভ্যন্তরীণ কাঠামো তার মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।'

শ্রেয়সী বলল,'তুমি ভুল বলছো। দূরে গেলে দূরত্ব বাড়ে।'

ইন্দ্রনীল বলল,'না। মনের মিল থাকলে, একে অপরের প্রতি ভালোবাসার টান থাকলে দূরত্বটাও কিছু নয়। সবসময় দূরে গেলেই যে ভালোবাসা কমে বা দূরত্ব বাড়ে তা নয়। অনেক সময় দূরত্বও দুটো মানুষকে কাছাকাছি নিয়ে আসার সেতু হিসাবে কাজ করে। দূরত্ব ভালোবাসার গুরুত্বও বোঝায়।'

শ্রেয়সী বলল,'আমি ওতোশতো জানি না আমি এইটুকু জানি পত্রলেখার সাথে আমার অদৃতের বিয়ে হলে ও ভালোই থাকবে। পত্রলেখা ওকে ভালো রাখবে ।'

ইন্দ্রনীল বলল,'তুমি নিশ্চিত অদৃত ভালো থাকবে?

শ্রেয়সী একটা মানুষের ভালো থাকাটা নির্ভর করে সেই মানুষটার নিজস্ব চাওয়া পাওয়ার ওপর। অন্যের চাওয়া পাওয়া বা অন্যের ভালো রাখার ওপর নয়।'

শ্রেয়সী চুপ করে রইলো ।

ইন্দ্রনীল বলল,'অনেক রাত হয়ে গেছে । এবার শুয়ে পড়ো।'







অদৃতের রাতে শুয়ে আর্যর সাথে কাটানো সমস্ত সুখস্মৃতি মনে পড়তে থাকলো। হাজার চেষ্টা করেও তার ঘুম এলো না। সে উঠে ছাদে গেল পাইচারি করে পুনরায় তার ঘরে এলো কিন্তু তাও তার ঘুম এলো না কেবল বারবারই মনে পড়তে থাকলো আর্যর সাথে কাটানো স্মৃতিগুলোর কথা। এই বাড়ির আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে তাদের ভালোবাসার স্মৃতি । পরের দিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই বেশ অসুস্থ বোধ করলো অদৃত। সে নিজের ঘরে ল্যাপটপে কাজ করছিল।

শ্রেয়সী গিয়ে জিজ্ঞাসা করল,'অদৃত বলছি কাল থেকে তুই কিচ্ছু খাসনি। আজকে অন্তত কিছু মুখে দে।'

অদৃত বিরক্ত হয়ে বলল,'আমার ক্ষিদে নেই। আমি কিচ্ছু খাবো না ।'

শ্রেয়সী বলল,'এইভাবে চললে কি করে হবে ? আর একদিন পরই তোর আশীর্বাদ কোথায় তুই পত্রলেখার সাথে ঘুরতে যাবি, বাইরে খাওয়া দাওয়া করবি একে অপরকে সময় দিবি কিন্তু তুই ওইসব না করে নিজেকে এইভাবে ঘরের মধ্যে বন্দী করে রেখেছিস।'

অদৃত বলল,'হাতজোড় করে বলছি মা আমাকে একটু একা থাকতে দাও। প্লিজ!'








বেলার দিকে ইন্দ্রনীল শ্রেয়সীকে জিজ্ঞাসা করল,'অদৃত কিছু খেয়েছে?'

শ্রেয়সী উদ্বিগ্ন মুখে বলল,'না কাল থেকে কিচ্ছু খায়নি ছেলেটা। কিছু বলতে গেলেই বলছে একা থাকতে দাও আমাকে। বলছিলাম একবার পত্রলেখাকে ডাকলে হয় না?'

ইন্দ্রনীল বলল,'না তার কোনো দরকার নেই । আমি গিয়ে একবার দেখছি।'

ইন্দ্রনীল ওপরে অদৃতের ঘরে গিয়ে দেখলো অদৃত অচৈতন্য অবস্থায় বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে । সে তা দেখে আতকে উঠে চিৎকার করে বলল,'শ্রেয়সী তাড়াতাড়ি ডাক্তারকে একটা ফোন করো।'

শ্রেয়সী বলল ,'কেন কি হল? 

অদৃত! আমার অদৃত..।' কথাটি বলতে বলতে সে দ্রুত পায়ে হেঁটে অদৃতের ঘরে গেল।




ইন্দ্রনীল অদৃতের চোখেমুখে জল ছিটিয়ে ডাকলো, অদৃত ! অদৃত! ওঠ বাবা।'

ইন্দ্রনীল এবং শ্রেয়সীর চোখেমুখে তখন ধরা পড়ছে ভয়ের ছাপ। অদৃত ধীরে ধীরে চোখ খুলল। শ্রেয়সী তাকে বুকে জাপটে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,'কি হয়েছিল তোর চোখ খুলছিলিস না কেন? জানিস আমাদের কত চিন্তা হচ্ছিল?'

ডাক্তার এসে অদৃতকে দেখে বলল,'ওনার প্রেসার যথেষ্ট হাই ।আপনি কি কিছু নিয়ে খুব চিন্তায় আছেন?' 

ইন্দ্রনীল এবং শ্রেয়সী একে অপরের দিকে তাকালো। অদৃত চুপ করে রইলো।

ডাক্তার বললেন ,'ঠিক করে খাওয়া দাওয়া করবেন। বেশি চাপ নেবেন না,ঠিকমতো ঘুমাবেন। এইভাবে যদি প্রেসার বাড়তে থাকে তাহলে তো স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। আমি কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি সেগুলো একবার আনিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।'

ইন্দ্রনীল ডাক্তারকে এগিয়ে দিতে গেল।

শ্রেয়সী অদৃতের পাশে বসে বলল,' এইভাবে চললে কি করে হবে একটু তো কিছু খেতে হবে বল ? আমাদের তুই ছাড়া আর কে আছে বল।'

অদৃত শান্তসুরে বলল ,'আমি ছাড়া তোমাদের কেউ নেই বলেই তো এত কিছু করলাম। আমার ভালোবাসার মানুষটাকে কষ্ট পর্যন্ত দিলাম।'

শ্রেয়সী চুপ করে রইলো।

ইন্দ্রনীল ঘরে ঢুকে বলল ,'শ্রেয়সী তুমি জিজ্ঞাসা করেছিলে না তুমি ওদের সম্পর্কটা ভেঙে ঠিক করেছো কিনা আমি বলেছিলাম সময় তার উত্তর দেবে। সেই সময়টা মনে হয় এসে গেছে। আমার মনে হয় এটা ভেঙে খুব ভুল হয়েছে। '

শ্রেয়সী বলল,' এমন করছো যেন তুমি চাওনি।' ইন্দ্রনীল বলল,' হ্যাঁ আমি চেয়েছিলাম কিন্তু শেষ দিন আর্যর কিছু কথা আমাকে বুঝিয়েছে গুরুজনরাও ভুল করে, গুরুজনরাও ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। আর মানুষ ভুল থেকেই তো শিক্ষা নেয় আমিও তাই করেছি। ছেলেটা যথেষ্ট ভালো ছিল আমার মনে হয় ওর থেকে উপযুক্ত অদৃতের জন্য আর কেউ হতে পারে না।'

অদৃত অবাক দৃষ্টিতে তার বাবার দিকে তাকালো। শ্রেয়সী বলল ,'না এটা হতে পারে না। এটা অন্যায়।'

ইন্দ্রনীল বলল,'কেন হতে পারে না? ওরা দু'জন ছেলে বলে? আমার মনে হয় না ভালোবাসা শুধু একটা ছেলে আর একটা মেয়ের মধ্যেই হতে পারে ভালোবাসা এমনই একটা জিনিস যেটা সবার মধ্যেই হতে পারে। এক্ষেত্রে ওরা তো কোনো অন্যায় করেনি বরং অন্যায় যদি করতেই হয় সেটা আমরা ওদের দু'জনের সাথে করেছি। আমরা আমাদের ইচ্ছাগুলো ,ভালোলাগাগুলো ,খারাপ লাগাগুলো ওর কাঁধের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিয়েছি। আমরা আমাদের সন্তানের চাওয়াটাকে গুরুত্ব দিই নি। তাই অন্যায় যদি কেউ করে থাকে তবে সেটা আমরা ওদের দুইজনের প্রতি করেছি।'

শ্রেয়সী বলল,'তুমি কি বলছো এইসব? পরশু ওর আশীর্বাদ । আর আজ তুমি এইসব বলছো? দ্যাখো যা হওয়ার তা হয়ে গেছে এখন আমরা চাইলেও আর আটকাতে পারবো না ।'

কথাগুলো বলে শ্রেয়সী চলে গেল ।







ইন্দ্রনীল বলল,'অদৃত আমাকে ক্ষমা করিস আমি চাইনি তোকে এইভাবে দেখতে। আমি তোকে সবসময় আনন্দে দেখতে চেয়েছিলাম, হাসিখুশি দেখতে চেয়েছিলাম । বুঝতে পারিনি আমার চাওয়াটা এতো বড় ক্ষতি করে দেবে। আমাকে ক্ষমা করিস বাবা ।'

অদৃত বলল ,'না বাবা তুমি ক্ষমা চাইছো কেন? তুমি ক্ষমা চেয়ো না, দোষটা আমার। আমি ভুল করেছি সবার খেয়াল রাখতে গিয়ে আমি আর্যর খেয়াল রাখতে পারিনি।'

ইন্দ্রনীল বলল,' না রে, তোদের সম্পর্কটা আমাদের জন্য ভেঙেছে। আমরা স্বার্থপরের মতোন জোর করে আমাদের ইচ্ছাগুলো তোর ওপর চাপাতে চেয়েছিলাম। আমরা কখনো ভেবে দেখিনি তুই কি চাস ? দেখ আমরা যখন সমস্যা তৈরি করেছি তখন সমস্যার সমাধানও আমাদেরই করতে হবে। আমার আর্যকে চিনতে দেরি হলেও আমি চিনেছি ও তোকে বড্ড ভালোবাসেরে ওকে ফিরিয়ে নিয়ে আয়।'

অদৃত বলল ,'এখন আর হয়তো সময় নেই ।'

ইন্দ্রনীল বলল ,'একবার চেষ্টা করে দেখ। আশীর্বাদ এখনো দেরী আছে পরশুদিন । আমাদের হাতে এখনো সময় আছে, একবার চেষ্টা কর।'

অদৃত বলল ,'বাবা আমি আর্যকে অনেকবার ফোন করেছি। ও ফোন ধরেনি।

আর তাছাড়া যদি আমি আবার আর্যকে ফিরিয়ে নিয়ে আসি মা হয়তো খুশি হবে না। আর হয়তো ও আসবে না ।'

ইন্দ্রনীল বলল ,'অদৃত এবার একটু নিজের কথা ভাব সারাজীবন তো আমাদের কথাই ভেবে গেলি। আমাদের জন্য আজ নিজের এত বড় ক্ষতি করলি আমাদের জন্য তুই সব থেকে বড় ত্যাগ করলি তোর জীবনের আর কত ত্যাগ করবি? তুই একজন্মে সবাইকে খুশি করতে পারবি না। এত জীবনতো আমাদের জন্য ভেবে এলি অন্তত এবার নিজের জন্য ভাব না হয় এবার তোর মা খুশি হল না কিন্তু তুই তো খুশি হবি,ভালো থাকবি । আর একজন বাবা হয়ে আমার আর কি চাওয়ার থাকতে পারে ।আজ তোর মা রাগ করছে ঠিকই কিন্তু পরে হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে যেমন আমার ক্ষেত্রে হয়েছে । আরেকবার চেষ্টা করে দেখ।'







সেদিন রাত্তিরেও আর্যকে ফোন করল অদৃত কিন্তু আর্য ফোন ধরল না । শেষমেষ একপ্রকার বাধ্য হয়েই সে তমাল সেনকে ফোন করলো । ফোন ধরে তমাল সেন বলল ,'হ্যালো!'

অদৃত বলল,'হ্যাঁ হ্যালো, আমি অদৃত বলছি । বলছিলাম আর্য.......'

কথাটা শেষ হওয়ার আগেই তমাল সেন বলল,' তোমার সাথে আমার সব সম্পর্ক শেষ । আর্যর কথা মতোন আমি তোমাকে জমি দিয়ে দিয়েছি। এরপরে তোমার সাথে আমার আর কোনো কথা থাকতে পারে না তাই বেকার আমার সময় নষ্ট কোরো না।' বলে ফোনটা কেটে দিলো।

অদৃত বলল,'হ্যা....হ্যালো শুনুন।'

অদৃত বলল,' কি বলল আর্যর কথায় জমিটা ফেরত দিয়েছে।'








রাতে শোয়ার পর ইন্দ্রনীল শ্রেয়সীকে বলল,' একবার ভেবে দেখো পত্রলেখার সাথে বিয়ে দেওয়াটা ঠিক হচ্ছে না । এতে ওরা কেউ সুখী হবে না।'

শ্রেয়সী বলল,' আমি যা করছি আমার সন্তানের ভালোর জন্যই করছি আমি জানিনা তোমার কি হলো হঠাৎ করে।'

ইন্দ্রনীল বলল,' এই বিয়েটা করলে না সুখী হবে অদৃত না সুখী হবে পথলেখা। তুমি তো চাও বলো আমাদের অদৃত খুশি থাকুক ,আনন্দে থাকুক তুমি চাও না বলো? '

শ্রেয়সী বলল ,'হ্যাঁ অবশ্যই চাই ।'

ইন্দ্রনীল বলল,'যদি সত্যিই তাই হয় তাহলে এই বিয়েটা দিও না । ও খুশি হবে না এই বিয়েটা নিয়ে। এমনিতেও অদৃত বড্ড চাপা স্বভাবের জীবনে যত ঝড়ঝাপ্টা আসুক না কেন কাউকে কিছু বলে না। তাই বিয়েটা হয়ে গেলে ও হয়তো খারাপ থাকলেও তা প্রকাশ করবে না আমাদের কথা ভেবে। তাই বলছিলাম বিয়েটা দিও না।'

শ্রেয়সী বলল,' তুমি কি চাও ?'

ইন্দ্রনীল বলল,'আর্যকে ফিরিয়ে আনতে । ওদের দুইজনকে একসাথে রাখতে চাই।'

শ্রেয়সী বলল,'আমাদের সমাজে একটা ছেলের একটা মেয়ে বিয়ে করে ইন্দ্রনীল । একটা ছেলের সাথে আর একটা ছেলের বিয়ে হয় না। আর আমি জানি ওরা সুখে থাকবে।'

ইন্দ্রনীল বলল ,'তুমি মন থেকে বিশ্বাস করো তো যে অদৃত সত্যিই পত্রলেখার সাথে ভালো থাকবে ?'

শ্রেয়সী চুপ করে রইলো।

ইন্দ্রনীল বলল,' যেদিন অদৃত এসে বলেছিল যে আর্য চলে যাবে সেদিন ওর মুখটা দেখেছিলে? কি কষ্টদায়ক লেগেছিল। নিরুপায়ের মতোন কাঁদছিল আমি জীবনে ওকে এরকম অবস্থায় দেখিনি। মনে হচ্ছিল যেন একটা ভয়ের হাহাকার কাজ করছে ওর মধ্যে, যেন মনে হচ্ছে কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। আর যখন আর্য চলে গেল তখন তাকিয়ে দেখেছিলে ওর মুখের দিকে কি বীভৎস্য লাগছিল ওকে। আমি এরকম কখনো দেখিনি আমার বুকের ভেতরটা ফেটে যাচ্ছিল আমার সন্তানের কষ্ট দেখে । তোমার কষ্ট হয়নি শ্রেয়সী?'

শ্রেয়সী বলল ,'হুম হয়েছিল কিন্তু এটা ঠিক নয়। এই ভালোবাসাটা ঠিক নয় ইন্দ্রনীল। এরকম হলে আমরা লোকের কাছে ,সমাজের কাছে মুখ দেখাবো কি করে?'

ইন্দ্রনীল বলল,' নিজের সন্তানের বাবা হিসেবে বলতে পারি আমার ছেলে তো কোন খারাপ কাজ করেনি। তোমার মনে হয় ও কোন খারাপ কাজ করেছে ?'

শ্রেয়সী বলল,' তোমার কি হয়েছে? তুমি এখনও বলছো খারাপ কাজ করেনি। ও যা করেছে সেটা নোংরামি। এটা ঠিক নয়।'

ইন্দ্রনীল বলল ,'সমস্ত বেঠিক বিষয়গুলোকে আমাদের ঠিক করে নিতে হয় শ্রেয়সী। ঠিক করতে জানতে হয়। শ্রেয়সী ও তোমার ছেলে হয়। তুমি ছেলের জন্য ভাবছো ভালো কথা কিন্তু তুমি যদি একটু ঠিক করে দেখো দেখবে তুমি তোমার ছেলের ভালো করতে গিয়ে ওকে কষ্ট দিচ্ছো । তুমি ভাবছো ওদের ভালবাসাটাকে অপমান করলে ওদের ভালোবাসা শেষ হয়ে যাবে কিন্তু এটা বুঝতে পারছো না মনের টান থাকলে সেই ভালোবাসা সারা জীবন অটুট থাকে যাই হয়ে যাক না কেন । আর তুমি ওদের ভালবাসাকে অপমান করছো মানে কোথাও গিয়ে তুমি পরোক্ষভাবে তোমার নিজের সন্তানকে অপমান করছো শ্রেয়সী। আর আমি আমার সন্তানের অপমান কিন্তু মেনে নেব না শ্রেয়সী।'

শ্রেয়সী অবাক দৃষ্টিতে ইন্দ্রনীলের দিকে চেয়ে রইল। ইন্দ্রনীল বলল ,'আমাদের হাতের পাঁচটা আঙ্গুল সমান নয় । আমাদের সমাজের প্রত্যেকটা মানুষকেই যে একই রকম হতে হবে তা তো নয়। একই রকম ভাবে একটা ছেলে একটা মেয়েকেই বিয়ে করবে এটা তো নাও হতে পারে শ্রেয়সী। আমরা যদি আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশ না ঘটাই, আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন না করি তাহলে তো সমাজ পিছিয়ে থাকবে। সমাজ তো আমাদের সকল মানুষের ভাবনার হাত ধরেই এগোচ্ছে।আমাদের মতোন মা - বাবাদের হাত ধরে যদি এগোয় তাতে ক্ষতি কি । হয়তো আমাদের দেখে অন্যরাও এগিয়ে আসবে। আর এটা ভেবে আমার গর্ব হচ্ছে।'

শ্রেয়সী বলল,' এই বিষয়টা নিয়ে তোমার গর্ব হয়?' ইন্দ্রনীল বলল ,'হ্যাঁ । কেন নয়? এই ভালোবাসাটাও তো আর পাঁচটা ভালবাসার মতোই ।আচ্ছা আজ যদি পত্রলেখার সাথে তোমার ছেলের বিয়ে হয় তাহলে তুমি গর্বিত হবে না? আনন্দ পাবে না?' শ্রেয়সী বলল ,'অবশ্যই । কেন নয় ?'

ইন্দ্রনীল বলল,'আমার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই ।আজ আর্যর সাথে অদৃত থাকলে আমি খুব আনন্দ পাবো। আমি গর্ব অনুভব করব কারণ আমার ছেলে তার ভালোবাসাকে নিয়ে বাঁচবে এইটা ভেবে। দেখো আর্য আজ প্রতিষ্ঠিত নয় কিন্তু কাল ঠিক প্রতিষ্ঠিত হবেই আর প্রতিষ্ঠিত হতে হওয়া মানে যে তাকে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করতে হবে তা তো নয় । প্রতিষ্ঠিত হওয়া মানে নিজেকে সঠিকভাবে এবং স্বাধীনভাবে গড়ে তোলা আমার মতে এটাই। তোমার মতে কি বলোতো ?'

শ্রেয়সী একটা কথারও জবাব দিতে পারল না






পরের দিন সকালে সৌনক অদৃতের ঘরে গিয়ে বলল,' আরে অদৃত আমি তো বাড়িতেই ছিলাম না আসলে কালকে ওই পিসতুতো মাসির মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাই জানতাম না তুই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলিস ।এখন ঠিক আছিস ?'

অদৃত বলল,' হ্যাঁ।'

সৌনক বলল,' ঠিক করে খাওয়া - দাওয়া কর। তুই ঠিক করে ঘুমাচ্ছিস না কেন?'

অদৃত বলল,'জানিনা ভালোভাবে ঘুমাতে পারবো কিনা একটা কষ্ট আমাকে কুড়েকুড়ে খাচ্ছে ।আমার জন্যই আর্য গেছে জানিস তো। '

সৌনক বলল ,'তুই নিজেকে দেখেছিস আয়নাতে তোর অবস্থাটা কি করেছিস তুই এই দুইদিনে ?তোকে দেখা যাচ্ছে না। চোখগুলো ঢুকে গেছে চোখের তলায় কালি পড়ে গেছে। সামনেই আশীর্বাদ তুই এরকম অবস্থায় আছিস?'

অদৃত বলল,' আমার সত্যি কিছু ভালো লাগছে না। সত্যিই ভালো লাগছে না।'




বেলার দিকে অদৃত গার্ডেনের ফ্রেঞ্চ হাইড্রেনঞ্জিয়া গাছগুলোতে জল দিচ্ছিল।

জল দিতে দিতে অদৃত নিরঞ্জন কাকাকে বলল,' নিরঞ্জন কাকা গাছগুলোয় তো কত জল দিচ্ছি এখনো ফুল হচ্ছে না কি ব্যাপার বলতো ?'

নিরঞ্জন কাকা তার পিঠে হাত রেখে বলল,'অদৃত বাবা ধৈর্য্য ধরো ঠিক ফুল হবে সব কিছুতেই একটু সময় দিতে হয়। যদি সময় না দাও তাহলে সে কি করে বুঝবে তুমি তার জন্য কতটা যত্ন করছো,খেয়াল রাখছো,তাকে কতটা দিচ্ছো তুমি ? তাকে যতটা দেবে তোমাকেও সে ঠিক ততটাই দেবে। তাই অপেক্ষা কর যদি তুমি ঠিক করে যত্ন নাও তোমায় ঠিক ফুল দেবে।'

কথাটা অদৃতের মনে সজোরে যেন আঘাত করল। ইন্দ্রনীল সামনে এসে বলল,' একদম ঠিক বলেছিস নিরঞ্জন। তুমি যতটা দেবে তোমাকেও সে ততটাই দেবে। '

অদৃত ভাবলো, 'ঠিক তাই। আমি আর্যকে যতটা দুঃখ দিয়েছিলাম ঠিক ততটাই দুঃখ আমি পাচ্ছি। হয়তো আর্যও আমার জন্য খুব কষ্ট পাচ্ছে। আর্য তোমাকে ছাড়া আমার দমবন্ধ লাগছে । '

এইসব ভাবতে ভাবতে অদৃতের চোখ থেকে একফোঁটা জল ঝরে পড়ল।

ইন্দ্রনীল জিজ্ঞাসা করল ,'তুই ফোন করেছিলিস?' অদৃত বলল,'হ্যাঁ বাবা । ফোন ধরেনি আমার মন বলছে ও খুব অভিমান করেছে ।'

ইন্দ্রনীল বলল,'ও রাগ করেছে।'

অদৃত বলল,'না বাবা ও রাগ করলে আমি চিন্তা করতাম না কারণ জানতাম রাগ কমে যাবে কিন্তু ও আমার ওপর অভিমান করে চলে গেছে।অভিমান ভুলে শুরু করা কঠিন হয়।'

ইন্দ্রনীল বলল,'আমি জানি তুই পারবি।'

অদৃত বলল ,'জানি না । আমি তো এটাও জানিনা আমি ওকে ছাড়া কি করে থাকবো?'

ইন্দ্রনীল বলল,'একবার কলকাতায় গিয়ে দেখতে পারিস। দেখ অদৃত বিয়েটা এখনো আটকানো যায় আশীর্বাদ মানেই বিয়ে হয়ে যাওয়া নয়, অদৃত এখনো সময় আছে কালকে আশীর্বাদ পরশু গেলে হয় না ? দরকার হলে আমিও যাবো তোর সাথে ।'

অদৃত অধৈর্য্য হয়ে বলল,'বাবা আজকে গেলে হয় না?'

ইন্দ্রনীল বলল,'না একটু ধৈর্য্য ধর। কালকে আশীর্বাদ আজ বাড়িতে অনেক লোকজন আসবে । সবাই তোর কথা জিজ্ঞাসা করবে। সেখানে তুই না থাকলে কথা উঠবে। তাই বলছি আজ আর কালকের দিনটা অপেক্ষা করে যা তারপর আমরা কলকাতায় ওর বাড়িতে খোঁজ করতে যাবো।'








পরের দিন রায় বাড়ি সেজে উঠলো অদৃতের আশীর্বাদের জন্য । কত মিডিয়া , কত প্রেসের ভিড় জমলো রায় বাড়িতে, দারুন লাগছে আজ পত্রলেখা এবং অদৃতকে । অদৃতের মুখের মধ্যে একটা গভীর দুঃখের ছাপ খুব স্পষ্ট। পত্রলেখা আজকে লাল রঙের একটা কাঞ্জিভরম পড়েছে আর অদৃত পড়েছে ধুতি এবং পাঞ্জাবি। ভালো লাগছে দু'জনকে কিন্তু কোথাও গিয়ে অদৃতকে দেখে মনে হচ্ছে এইসব কিছু নিয়ে সে খুশি নয়। কারণ সে তো চাইনি এগুলো হোক । 

পত্রলেখা অদৃতকে জিজ্ঞাসা করল,' তুমি ঠিক আছো? '

অদৃত বলল,'হ্যাঁ ।কেন?'

পত্রলেখা বলল,' না তোমার চোখমুখ কেমন বসে গেছে। চোখের তলায় কালি পড়ে গেছে ।দেখে মনে হচ্ছে তুমি ভালো নেই। '

অদৃত বাঁকা হাসি হাসলো।

একের পর এক সবাই আশীর্বাদ করল তাদের দুইজনকে। আজকে খুশির আবহাওয়া কিন্তু এই খুশির মধ্যে অদৃতের মনে হয়তো খুশি অধরাই রয়ে গেল।অদৃতের কাছে এই খুশির আবহাওয়া যেন অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে। আশীর্বাদের পর্ব মিটে গেলে কিছুক্ষণ পর একজন বয়স্ক ভদ্রলোক ক্যুরিয়ার দিতে এলে নিরঞ্জন বলল ,'অদৃত বাবা তোমার নামে একজন ক্যুরিয়ার দিতে এসেছে।' অদৃত বলল,' আমি দেখছি।'

পত্রলেখা বলল,' এই অদৃত এদিকে এসো একটা ফটো তুলবো।'

অদৃত বলল,'দাঁড়াও আমার একটা কাজ আছে।'

পত্রলেখা জেদ করে বলল,'এক্ষুনি এসো।'

অদৃত রেগে গিয়ে বলল,' সব সময় জেদ কোরো না যথেষ্ট বড় হয়ে গেছো।' 

অদৃতের বলা কথাটা পত্রলেখার খুব গায়ে লাগলো।

শ্রেয়সী বলল ,'কেন রে অদৃত একটাই তো ছবি একটা ফটো তুলেই চলে যা।'

অদৃত আর কথা না বাড়িয়ে তাদের কথা মতোন পত্রলেখার সাথে একটা ফটো তুলে ক্যুরিয়ারটা নিতে গেল। লোকটি ক্যুরিয়ারটা অদৃতের হাতে দিলো। 

অদৃত নিজের ঘরে গিয়ে দেখলো বক্সটির ওপর আর্যর নাম দেওয়া। অদৃত একরাশ উৎসাহ নিয়ে ক্যুরিয়ারটা খুলল । খুলে দেখলো সেটির ভিতর রয়েছে তার সব থেকে পছন্দের একটি বই ।জেমস প্যাটারসনের লেখা' হোপ টু ডাই ' বইটি। যে বইটি তার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কেনা হয়ে ওঠেনি। সে ভাবলো,' আর্য টাকা পেল কোথা থেকে?'

তার মনে পড়ল, আর্য তাকে একবার বলেছিল সে উপার্জনের পয়সা দিয়ে তার জীবনের প্রিয় মানুষের জন্য কিছু কিনতে চায় কথাটা মনে পড়তেই তার চোখে জল এলো। সে বইটি বুকে জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কাঁদতে থাকলো। সে জানে না, সে কি করবে সে বুঝতে পারছে না তার এরপর ঠিক কি করা উচিত ?








কিছুক্ষণ পর একটু ফাঁকা হলে অদৃত পত্রলেখার কাছে গিয়ে বলল ,'পত্রলেখা আমার তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।'

অভ্রতনু ,অলিভিয়া এবং প্রেরণারা সবাই বলল,' কি অদৃত এখন থেকেই পত্রলেখাকে চোখে হারাচ্ছো?' অদৃত চুপ করে রইলো।

পত্রলেখা লজ্জা পেয়ে বলল,'কি বলবে বলো?' অদৃত বলল,' একবার আমার ঘরে আসবে?'

অভ্রতনু বলল ,'ও হো আবার ঘরে কি ব্যাপার?' অদৃত বিরক্ত হয়ে রেগে বলল,' সব সময় ইয়ার্কিটা সাজেনা।'

তার আচরণে সবাই একটু অবাক হল কারণ অদৃতের মতোন ঠান্ডা মাথার ছেলে কখনো কারোর সাথে এরূপ আচরণ করে না ।

পত্রলেখা বলল ,'আচ্ছা, ঠিক আছে। চলো যাচ্ছি।' অদৃত এবং পত্রলেখা অদৃতের ঘরে গিয়ে কথা বলল।







To be continued...................


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance