Sanchaita Roy Chowdhury

Romance Inspirational Others

4  

Sanchaita Roy Chowdhury

Romance Inspirational Others

অন্যরকম ভালোবাসা

অন্যরকম ভালোবাসা

8 mins
30


অন্যরকম ভালোবাসা 

পর্ব-৪৪


আর্য আর্ট গ্যালারিতে গেল ঠিকই কিন্তু তার যে পরিমাণ খুশি হওয়ার কথা ছিল , সে ঠিক সেই পরিমাণ খুশি হতে পারল না। তার বারবারই মনে হল আজও অদৃতের কাছে অন্যের করা আবদারই বড়ো হল।

ত্রিদিব আর্যকে বলল,'আরে আর্য তুমি এখনও এখানে দাঁড়িয়ে আছো। চলো ওইদিকে যেতে হবে তো । সবাই তোমার সাথে কথা বলবে বলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে । আর তুমি এইখানে দাঁড়িয়ে আছো ।'

আর্য বলল ,'হ্যাঁ যাচ্ছি।'

আর্য একজিবিশনে এসে হাসিমুখে সবার সাথে কথা বলছে ঠিকই কিন্তু তার মনের মধ্যে এক অশান্তির ঝড় চলছে, তার দুটি চোখ অবিশ্রান্তভাবে খুঁজে চলেছে একজনকে । আর সেই মানুষটি হল তার অদৃত তার সবথেকে বড় ভরসার জায়গা । জীবনে আজকে সে হয়তো এতদূর আসতে পেরেছে এই একটা মাত্র মানুষের জন্য। সে কখনো কল্পনাও করতে পারেনি যে সে তার চিত্রকলা নিয়ে কাজ করতে পারবে। এইটা তার স্বপ্ন ছিল। আর তার এই স্বপ্নটাকে সত্যি করেছে অদৃত । কিন্তু যে তার স্বপ্নের কান্ডারী সেই মানুষটাই আজকে তার জীবনের এতোবড় একটা গুরুত্বপূর্ণ দিনে তার পাশে নেই ,এই কথাটা ভেবেই আর্যর খুব কষ্ট হল। সেই ভেবেছিলো হয়তো আজকের দিনটা অন্তত অদৃত তাকে দেবে। কিন্তু তা হয়নি , হয়তো তার ভাবনায় ভুল হয়ে গেছে।

আর্য বারবার বাইরে দরজার দিকে তাকাচ্ছে দেখে ত্রিদিব বলল,' আর্য তুমি কি কাউকে খুঁজছো ?' আর্য বলল,'কই না তো।'

ত্রিদিব বলল,' কারোর জন্য অপেক্ষা করছো?'

আর্য আলগা হেসে বলল,'না আমি কেন কারোর জন্য অপেক্ষা করতে যাবো? কারোর জন্য অপেক্ষা করছি না । সত্যি বলছি ।'

ত্রিদিব বলল,'সত্যিই কি তুমি সত্যি কথা বলছো? কারণ তোমার চোখ কিন্তু অন্য কথা বলছে। সে কিন্তু বলছে তুমি কারোর জন্য অপেক্ষা করছো ।'

আর্য এবার মাথাটা একটু নীচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো ।

ত্রিদিব বলল,' কি হল কার জন্য অপেক্ষা করছো ?' আর্য তখনও কিছু বলল না।

ত্রিদিব বলল,' যখন কিছু বলছোই না তখন বুঝে নিচ্ছি তুমি কারোর জন্য অপেক্ষা করছো কারণ মৌনতাই যে সম্মতির লক্ষণ ।'

তারপর ত্রিদিব বলল,' যদি খুব ভুল না করি তাহলে বলবো তুমি অদৃতের জন্য অপেক্ষা করছো তাই তো?' 

আর্য মাথা নেড়ে বলল,'হ্যাঁ ।'

ত্রিদিব বলল ,'চিন্তা কোরো না ও ঠিক আসবে আমি জানি ও তোমাকে ভালোবাসে।

যতই সমস্যা হোক না কেন তোমরা দু'জন দু'জনকে কিন্তু ভুল বুঝোনা।'

আর্য চুপ করে রইলো ।

ত্রিদিব আর্যর কাঁধে হাত রেখে বলল,' অদৃত ঠিক আসবে তুমি দেখো আর্য ।'









অদৃত, সৌনক , অলিভিয়া এবং পত্রলেখা বেলার দিকে ঘুরতে বেরোলো ।

অলিভিয়া অদৃতকে বলল,' আজকের এই ঘুরতে বেড়ানোটা বিশেষত তোমার আর পত্রলেখার জন্য।'

অদৃত বলল,' কেন?'

অলিভিয়া বলল ,'আরে তোমাদের সামনেই আশীর্বাদ । আর কিছুদিন পরেই বিয়ে তো সেক্ষেত্রে কোথাও গিয়ে তোমাদের ব্যাচেলরস্ পার্টি দেওয়া উচিত নয় কি? হ্যাঁ মানছি আমি আর সৌনক ব্যাচেলরস্ নই তাই যদি দাও আমরা সেখানে থাকতে পারবো না । তাই পার্টিটা বাদ দিয়ে আমরা জাস্ট নরমাল ঘুরতে বেড়ালাম । '

পত্রলেখা উৎসাহ নিয়ে বলল,' একদম ঠিক বলেছো আর তাছাড়া তোমাদের সাথে তো বেরোনোই হয়না স্পেশালি তোমাদের দুজনের সাথে সৌনকদা তো এখন আর আসেই না। আর তোমার সাথে তো এই প্রথমবার সামনাসামনি দেখা হল। এর আগে কত ভিডিও কল করেছি , চ্যাট করেছি কিন্তু সামনাসামনি সেভাবে কথা হয়নি। খুব ভালো লাগছে জানো তোমার সাথে সামনাসামনি পরিচয় হয়ে। '

অলিভিয়া বলল,'তাই!'

এই সবকিছুর মধ্যে অদৃত বড্ড অন্যমনস্ক এবং মনমরা হয়ে রয়েছে। অদৃত ভেবেছিলো, আর্যর এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ দিনে সে প্রথম থেকে আর্যর সাথে থাকবে, পাশে থাকবে। কিন্তু তা আর হচ্ছে কই?






তাদের গাড়িটা থামলো একটা বাগান বাড়ির সামনে। জায়গাটা বেশ নির্জন। বাগান বাড়ির চারপাশটা বিভিন্ন ছোট ছোট গোলাপী,বেগুনি,হলুদ রঙের ফুল দিয়ে সাজানো। 

অলিভিয়া বলল,'বাহ্! কি সুন্দর জায়গাটা । এটা অদৃতদের বাগান বাড়ি?'

অদৃত বলল,'না , এটা পত্রলেখাদের।'

পত্রলেখা বলল,'আরে ভেতরে এসো সবাই । '

সবাই ভেতরে গেল। বাড়ির চারপাশটা সকলে ঘুরে দেখলো বাড়িটা খুব বড়ো না হলেও বেশ সুন্দর। সুইমিং পুলের ধারে অলিভিয়া আর অদৃত পাশাপাশি বসে গল্প করছিল। 

হঠাৎ অলিভিয়া বলল,'অদৃত একটা কথা বলবো?'

অদৃত বলল,'হ্যাঁ বলো।'

অলিভিয়া বলল,'তুমি এই বিয়েটা নিয়ে খুশিতো?'

অদৃত বলল,'না।'

অলিভিয়া বলল,'আমি শুনেছি সবটা সৌনকের কাছ থেকে।'

অদৃত বলল,'তাহলে আবার জিজ্ঞাসা করছো কেন?'

অলিভিয়া বলল,'দেখো অদৃত আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই। অনেকদিন হল আমার পত্রলেখার সাথে পরিচয়। হ্যাঁ আমি মানছি তোমার থেকে আমার ওর সাথে অনেক কম দিনের পরিচয় কিন্তু তাও আমার মনে হয়েছে ও তোমাকে খুব ভালোবাসে । ওর তোমার প্রতি একটা অন্যরকম অনুভূতি রয়েছে। '

অদৃত বলল,'তুমি এতোটা জোর দিয়ে বলছো কিভাবে?'

অলিভিয়া বলল,'আমি একটা মেয়ে । আর একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের অনুভূতি বুঝবো না! মানছি তুমি আমার থেকেও ওকে বেশি চেনো। কিন্তু আমি এটা খেয়াল করেছি।'

অদৃত বলল,'আচ্ছা ।'

অলিভিয়া বলল,'তাছাড়াও তোমাকে এইসব বিষয় মানায় না । এতো সুন্দর ব্যক্তিত্ব, এতো সুন্দর দেখতে কোথায় একটা সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করবে...'

অদৃত রূঢ় দৃষ্টিতে অলিভিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,'আমাকে কোনটা মানাবে আর কোনটা মানাবে না সেটা কি আজকাল অন্যরা ঠিক করে দেবে? আমি বুঝতে পারছি না আমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্যদের এতো কিসের মাথাব্যাথা?'

অলিভিয়া বলল,'না আসলে মেয়েটা খুব ভালো । আমার মনে হয় ও সত্যিই তোমার জন্য উপযুক্ত। হয়তো প্রথমে অসুবিধা হবে তারপর দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে । এক্ষেত্রে তোমাকে কিছুটা মানিয়ে নিতে হবে ।'

অদৃত বাঁকা হাসি হেসে বলল,'আমার জীবনটাতো এখন মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়া এই দু'টোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে।'









কিছুক্ষণ পর সৌনক এসে বলল,'চলো এবার হোটেলে খেতে যেতে হবে তো?'

তারা দিল্লির একটি নামী রুফটফ হোটেলে খেতে গেল। হোটেলের ছাদে বসে তারা দিল্লির সন্ধ্যার পরিবেশটি উপভোগ করল,কত গল্প করল তারা। পত্রলেখা বলল,'এরপর আইসক্রিম পার্লারে যাবো।'

অদৃত বলল,'সরি ! আমার হবে না । আমাকে এবার বেড়াতে হবে।'

সৌনক বলল,'সেকি! এখনই?'

অদৃত বলল,'হ্যাঁ আমি বলেছিলাম আমার আজকে একটা কাজ আছে। আমার আজকে আসার ইচ্ছাই ছিল না । শুধুমাত্র তোমরা ওইভাবে বললে বলে এসেছি ।'

পত্রলেখা বলল,'কেন কি আছে?'

অদৃত বলল,'বললাম তো একটা কাজ আছে।'

পত্রলেখা বলল,'কি কাজ?'

অদৃত বলল,'দরকারি কাজ আছে। আমি এখন উঠলাম।'

অদৃত উঠে দাঁড়িয়েছে এমন সময় পত্রলেখার ফোনে একটা ফোন এলো। 

পত্রলেখা ফোন ধরতেই তার বাবা চিন্তিত কন্ঠে বলল,'পত্রলেখা তোর দিদার হঠাৎ করে খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাই আমরা হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি। তুই তাড়াতাড়ি সিটি হসপিটালে চলে আয় তোর দিদাকে আমরা সেখানেই নিয়ে যাচ্ছি।'

ফোন ছেড়ে পত্রলেখাকে বেশ চিন্তিত দেখালো।

অদৃত বলল,'কি হয়েছে পত্রলেখা? তোমাকে এরকম চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?'

পত্রলেখা উদ্বিগ্ন মুখে বলল,'অদৃত এক্ষুনি আমাকে সিটি হসপিটালে যেতে হবে ।'

অদৃত বলল ,'কেন কি হয়েছে?'

পত্রলেখা বলল,'বাবা ফোন করে বলল দিদার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাই দিদাকে হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছে।'

কথাটা শুনে অদৃত বলল,'চলো এক্ষুনি আমাদের বেড়াতে হবে তাহলে।'

পত্রলেখা বলল,'তোমার তো কাজ আছে, তুমি.....'

অদৃত বলল,'এখন কথা বলে সময় নষ্ট করার মতোন সময় আমাদের নেই । চলো।'

তারা আর একমুহূর্ত দেরী না করে পত্রলেখাকে নিয়ে সিটি হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা হল।









হসপিটালে পৌঁছে দেখলো পত্রলেখার দিদাকে ডাক্তাররা এমারজেন্সিতে চিকিৎসা করছেন। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে জানালো, তার দিদা আগের থেকে অনেকটা সুস্থ আছে। অদৃত নিজের হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো তখন বাজে রাত আটটা। 

সে বলল,'পত্রলেখা এখনতো দিদা অনেকটা সুস্থ আছেন আমার মনে হয় এবার আমাদের বাড়ি ফেরা উচিত ।'

পত্রলেখার বাবা সুব্রত বলল,'হ্যাঁ আমারও তাই মনে হয় । এক কাজ কর পত্রলেখা তুই বরং অদৃতের সাথে চলে যা। আমরা সৌনক আর অলিভিয়াকে নিয়ে যাচ্ছি ।'

অদৃত পত্রলেখাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আর্ট গ্যালারির উদ্দেশ্যে রওনা হল।









অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে দেখে আর্য অদৃতকে ফোন করল, কিন্তু তাকে ফোনে পেল না। তার অভিমানের পাহাড় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলো । 

রাত সাড়ে আটটার সময় ত্রিদিব বলল,'বাড়ি যাবে না?'

আর্য চারপাশটা তাকিয়ে দেখলো আর্ট গ্যালারি প্রায় জনশূন্য হয়ে গেছে, সে আর ত্রিদিব ব্যতীত তৃতীয় আর কোনো ব্যক্তি নেই। 

ত্রিদিব আর্যর কাঁধে হাত রেখে বলল,'মন খারাপ কোরো না । আমার মনে হয় অদৃত কোনো বিশেষ কাজে আটকে পড়েছে । নয়তো কথা দিয়ে কথা রাখবে না এরকম ছেলে ও নয়।'

আর্য কিছু বলল না।

ত্রিদিব বলল,'তবে আজকে সকলের তোমার আঁকা খুব পছন্দ হয়েছে, সকলে খুব প্রশংসা করেছে তোমার ছবি আঁকার ।'

আর্য সামান্য হাসলো।

ত্রিদিব বলল,'বাড়ি যাবে তো? চলো আমি পৌঁছে দেবো।'

আর্য বলল,'ত্রিদিব দাদা আমার তোমার সাথে কিছু কথা বলার ছিল ।' 

ত্রিদিব সামান্য ভুরু কুঁচকে বলল ,' এখন?'

আর্য বলল,'হ্যাঁ।'

ত্রিদিব বলল,' বলো।'

আর্য বলল,'তুমি আমাকে অনেক সাহায্য করেছো তোমার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি তোমাকে আমি কোনোদিনও ভুলবো না। একদিকে যেমন দাদার মতোন ভালোবেসেছো আমাকে তোমার ভাইয়ের স্থান দিয়েছো আবার অন্যদিকে তেমন গুরুর মতোন শিক্ষা দিয়েছো, শাসন করেছো। এই আর্ট গ্যালারিটা আমার কাছে নিজের বাড়ির মতোন যখনই ইচ্ছা হয়েছে চলে এসেছি । মন খারাপ করলে এখানে চলে এসেছি ঘন্টার পর ঘন্টা একমন দিয়ে কত ছবি এঁকে গিয়েছি তার কোনো ঠিক নেই । এখানে এলে সমস্ত মন খারাপ কোথায় উধাও হয়ে যেত তা বুঝতেই পারতাম না।'

ত্রিদিব বলল,'তোমাকে শেখানোটাই তো আমার কাজ। আমি চাই তুমি আমার থেকেও অনেক বড়ো চিত্রশিল্পী হও। আমি সবাইকে জোর গলায় বলবো তখন ওই দেখো, আর্য ও আমার ছাত্র । এতো বড় হও যাতে তোমাকে দেখে আমার গর্বে বুকটা ফুলে ওঠে।'

আর্য বলল,'চেষ্টা করবো দাদা।'

ত্রিদিব বলল,'কিন্তু আজ হঠাৎ এমন কথা কেন বলছো আর্য?'

আর্য বলল,'দাদা আমি কাল থেকে আর আসবো না।'

ত্রিদিব বলল,'কেন? কি হয়েছে? '

আর্য বলল,'আমি কাল কলকাতায় ফিরে যাচ্ছি। আজকে এই আর্ট গ্যালারিতে আমার শেষদিন ছিল।'

ত্রিদিব বলল,'শেষদিন ছিল মানে? এটা তোমারও স্টুডিও তোমার যখন ইচ্ছা হবে তখন আসবে। আমি জানি না কি বলবো শুধু একটা কথাই বলবো ভালো থেকো আর্য অনেক বড়ো হও। আর দিল্লিতে এলে অবশ্যই দেখা কোরো আমার সাথে । আর আজকের যে পাওনা টাকা আছে আমি তা তোমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবো।'

আর্য বলল,'ঠিক আছে।'

ত্রিদিব বলল,'অদৃত জানে?'

আর্য বলল,'না।'

ত্রিদিব বলল,'বলোনি এখনও?'

আর্য বলল,'না।'

ত্রিদিব বলল,'অভিমান করেছো ওর ওপর। ওকে জানিয়ে যেও । এইভাবে ওকে না জানিয়ে যেও না ।'

আর্য বলল,'আমি জানিয়ে যাবো।'

ত্রিদিব বলল ,'চলো তোমাকে পৌঁছে দিই।'

আর্য বলল,'না দাদা আমি চলে যাবো।'

ত্রিদিব বলল ,'সাবধানে থেকো।'










আর্য আর্ট গ্যালারির রাস্তা ধরে একমনে হাঁটছিল এমন সময় অদৃতের গাড়ি এসে থামলো তার সামনে। 

অদৃত গাড়ি থেকে নেমে বলল,'আর্য !'

আর্য গম্ভীরমুখে বলল ,'একজিবিশন শেষ হয়ে গেছে ।'

অদৃত বলল,'আমার ক্ষমা চাওয়ার ভাষা নেই। আসলে আমি তাড়াতাড়ি ফিরছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে পত্রলেখার দিদার শরীরটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাই হসপিটালে যেতে হয়েছিল।'

আর্য গম্ভীর মুখে বলল,'ও।'

অদৃত বলল ,'চলো বাড়ি যাবে তো?'

আর্য বলল,'যাবো কিন্তু তার আগে আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে ।'

অদৃত বলল,'ঠিক আছে গাড়িতে বসে বলবে । চলো।'

আর্য রেগে গিয়ে একটু জোরে বলল,'না। আমি এখানেই বলবো।'

অদৃত একটু অবাক হয়ে বলল,'এতো জোরে কথা বলছো কেন?'

আর্য বলল ,'আজকে আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন ছিল । কিন্তু দ্যাখো সেইদিনও তোমার আমার জন্য সময় হল না। আজও তোমাকে ওই মেয়েটার সরি! তোমার হবু বউয়ের আবদার রাখতে হল।'

অদৃত বলল,'তুমি এইভাবে কেন কথা বলছো আর্য? আর আজকে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টা অলিভিয়া ঠিক করেছিল, পত্রলেখা নয়।'

আর্য বলল,'ও এবার তুমি ওর হয়ে কথা বলবে? আজ না হয় অন্য কেউ বলেছিল, অন্য সময় তো ওই বলে তাহলে? কেন সবসময় তুমি ওর আবদার মেটাও একটু বলবে?

আমি তো তোমাকে আগে বলেছিলাম আমার একজিবিশনের কথা। তাহলে তুমি সবটা জানার পরও কেন ওদের সাথে ঘুরতে গেলে আজকে?

আচ্ছা তুমি কি ওকে ভালোবাসো?'

অদৃত রেগে গিয়ে বলল,'আর্য ! অনেকক্ষণ থেকে আমি তোমার বাজে কথা শুনে যাচ্ছি। তোমার কি মনে হয় আমার এইসব করতে খুব ভালো লাগছে? আমি খুব এনজয় করছি? আরে কখনো তো একটু বড়োদের মতোন কথা বলো। আমি এইসব নিয়ে খুব ক্লান্ত। সত্যিই আমি খুব ক্লান্ত। আমি জানি না আমি কি করবো। আমি তো এটাও জানতাম না যে পত্রলেখা আমাকে ভালোবাসে। আমি চাই না আমার বাবা-মা'কে কষ্ট দিতে, আর না চাই তোমাকে কষ্ট দিতে। সত্যি বলছি আমি কি করবো আমি কিছু বুঝতে পারছি না।'

আর্য কঠোর গলায় বলল,'আমার মনে হয় তোমার এই বিয়েটা করা উচিত।'











To be continued.....................


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance