Sanchaita Roy Chowdhury

Romance Inspirational Others

3  

Sanchaita Roy Chowdhury

Romance Inspirational Others

অন্যরকম ভালোবাসা

অন্যরকম ভালোবাসা

8 mins
156


অন্যরকম ভালোবাসা 

পর্ব-৪৩


বিকেল বেলা থেকে কত দামী গাড়ির মেলা বসলো রায় বাড়ির সামনে। কত নামীদামি সেলিব্রিটি, বিজনেসম্যানের আগমন ঘটলো ; কত প্রেস, মিডিয়ার ভিড় জমলো রায় বাড়ির অন্দরে । এদের মধ্যে কাউকে আর্য টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছে আর নয়তো কারোর নাম তার লোকমুখে শোনা।পত্রলেখার দিদা অদৃতের বাবা-মায়ের বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে দিল্লিতে এলেও তার শরীর খারাপ থাকার দরুন সে এই পার্টিতে যোগদান করতে পারেননি। সকলেই একে একে ইন্দ্রনীল আর শ্রেয়সীকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

সৌনক আর্যকে দেখে বলল,'আর্য আজ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে ।'

আর্য মৃদু হেসে বলল,'ধন্যবাদ।'

সৌনক দেখলো আর্যকে খুব অস্থির দেখাচ্ছে , তার দুটি চোখ যেন অবিরতভাবে কাউকে খুঁজে চলেছে।

সৌনক আস্তে করে বলল,'আর্য তুমি কাউকে খুঁজছো?'

আর্য বলল ,'হু?'

সৌনক বলল,'কাউকে খুঁজছো?'

আর্য বলল,'না আসলে অদৃতকে অনেকক্ষণ থেকে দেখতে পাচ্ছি না । তাই ভাবছিলাম......'

সৌনক বলল,'আচ্ছা । ও এখনও আসেনি। তৈরী হতে হয়তো একটু সময় লাগছে।

কিন্তু ওকে খুঁজছো কেন?'

আর্য বলল,'না এমনি।'

সৌনক বলল,'এমনি? কিছু বলার আছে?'

আর্য বলল,'না না কিছু বলার নেই।'

হঠাৎ সৌনক তাকিয়ে দেখলো অদৃত এবং পত্রলেখা পার্টিতে প্রবেশ করছে।

সৌনক আর্যকে বলল,' ওই তো অদৃত এবং পত্রলেখা একসাথে আসছে।'

আর্য তাকিয়ে দেখলো অদৃত আর পত্রলেখা সত্যি একসাথে আসছে এবং তাদের দু'জনকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে।

অদৃত তার মা-বাবার বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে কালো রঙের পাঞ্জাবি এবং মেরুন রঙের ধুতি পড়েছে। বেশ দারুন মানিয়েছে তাকে। অপরদিকে পত্রলেখা পড়েছে ইন্দো - ওয়েস্টার্ন ডিজাইনের কালো রঙের শাড়ি। দু'জনকে বেশ ভালো লাগছে।

পত্রলেখাকে অদৃতের সাথে আসতে দেখে আর্যর মনটা খারাপ হয়ে গেল। সে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো একটা কোণে। প্রেস মিডিয়া সবাই তখন তাদের দু'জনের ওপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে।

সবাই বলল,' ওদের দু'জনকে পাশাপাশি দারুণ মানিয়েছে, একদম পারফেক্ট কাপল।'





আর্য দেখলো শ্রেয়সী তার বন্ধুদের সাথে পত্রলেখার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে ।

শ্রেয়সী তাদের বন্ধুদের বলল ,'এই মেয়েটি হল আমার হবু বউমা। অদৃতের বাগদত্তা ।'

সবাই দেখে বলল ,'তোকে আর আলাদা করে পরিচয় করাতে হবে না শ্রেয়সী। ওকে কে না চেনে কত বড় অভিনেত্রী ওকে সবাই এক ডাকে চেনে। তোর ছেলের সাথে সত্যি খুব ভালো মানিয়েছে। দু'জনেই খুব শিক্ষিত। সত্যিই দুটিকে খুব ভালো মানিয়েছে। '

আর্য এও দেখলো আজকে অদৃত পত্রলেখার সাথেই রয়েছে সারাক্ষণ। তাদের দু'জনকে দেখেই মনে হচ্ছে তারা একে অপরের সঙ্গ ভীষণ ভালোভাবে উপভোগ করছে।

আর্য মনে মনে ভাবলো, হয়তো আমি সত্যিই অদৃতের যোগ্য নই। হয়তো পৃথিবীতে একটা ছেলেই একটা মেয়েকে বুঝতে পারে,ভালোবাসতে পারে; একটা মেয়ে আরেকটা ছেলেকে বুঝতে পারে,ভালোবাসতে পারে; একটা ছেলে হয়তো আরেকটা ছেলেকে বুঝতে পারে না,ভালোবাসতে পারে না । হয়তো আমার কপালটাই খারাপ আমার ভাগ্যে সুখটাই নেই, কিন্তু আমি সত্যিই অদৃতকে খুব ভালোবাসি। আমি জানিনা এখান থেকে আমি কিভাবে পিছিয়ে আসবো কিন্তু আমি যখন কথা দিয়েছি তখন তো আমাকে সরে আসতেই হবে । 

আর্য অদৃতকে দেখে বলল ,'অদৃত তোমায় আজকে খুব সুন্দর লাগছে।'

অদৃত স্বল্প হেসে বলল,' ধন্যবাদ।'

অদৃত আর্যকে আরো কিছু বলতে যাবে এমন সময় পত্রলেখা বলল,' অদৃত এই দিকটা একবার এসো, সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।'

অদৃত পত্রলেখার সাথে গেল। 

আর্য দেখলো অভ্রতনু এবং প্রেরণাও এই পার্টিতে এসেছে ।

সৌনক-অলিভিয়া, অভ্রতনু-প্রেরণা, এবং অদৃত ও পত্রলেখা একই সাথে ফটো তুলল কিন্তু সেখানে আর্যর কোথাও স্থান হলো না।









কেক কাটার অনুষ্ঠান হল। কেক কেটে শ্রেয়সী এবং ইন্দ্রনীল একে অপরকে খাইয়ে দিল। তারপর অদৃতকে খাওয়ালো এবং পত্রলেখাকে খাওয়ালো। পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু অতিথি বলল,' দ্যাখো দ্যাখো পত্রলেখা এবং অদৃতকে একে অপরের সাথে কি সুন্দর মানিয়েছে। সত্যিই শ্রেয়সী আর ইন্দ্রনীলের ভাগ্যটা খুব ভালো এরকম ছেলে এবং বউমা পেয়েছে ।'

কেউ আবার বলল,' সত্যিই দুটিকে দারুন মানিয়েছে।'

এই সমস্ত কথা আর্যর কানে গেল।

এরপর হঠাৎই ঘোষণা হল কাপল ডান্সের কথা। সবাই সেখানে কাপল ডান্স করবে । শ্রেয়সী -ইন্দ্রনীল, সৌনক-অলিভিয়া, অভ্রতনু - প্রেরণা, সুব্রত- পিয়ালী এবং অদৃত-পত্রলেখা। অদৃত এবং পত্রলেখার কাপল ডান্স আর্য দেখার সময় ভাবলো,'সত্যিই তোমাদের দুইজনকে খুব ভালো লাগছে একসাথে । হয়তো আমি চলে গেলে তোমরা ভালো থাকবে,তুমি বিয়ে করলে আঙ্কেল-আন্টিও খুশি হবে, সমস্তকিছু আবার আগের মতোই হবে। আর এটাই তো হওয়া উচিত। আমার কাছে তোমাকে পাওয়া অনেকটা স্বপ্নের মতোন,যাকে দেখা যায় অনুভব করা যায় কিন্তু ছোঁয়া যায় না, সারাজীবন আগলে রাখা যায় না । আমার কাছে খুশি,আনন্দ এগুলো কেবলই প্রহসন মাত্র। আমার সাথে ভালো থাকার যে বড্ড আড়ি।'

আর ভাবতে পারলো না আর্য। কেমন যেন একটা অদ্ভূত কষ্ট হলো তার মনের মধ্যে।

ব্যস্ততার দরুণ অদৃতের আজ আর্যর সাথে কথা বলার একটুও সময় হল না । 







শ্রেয়সীর এক বান্ধবী বলল,' আরে শ্রেয়সী অদৃত আর পত্রলেখা কি সুন্দর কাপল ডান্স করল। ওদের দু'জনকে কি সুন্দর লাগছিল ।'

আরেকজন বান্ধবী বলল,'ওদের আশীর্বাদ তো আর এক সপ্তাহ পরেই। তাহলে তো খুব ব্যস্ত আর

ওদের দুইজনের মধ্যেও যথেষ্ট টেনশন রয়েছে।'

শ্রেয়সী বলল,' হ্যাঁ আমরা তো আশীর্বাদ নিয়ে ব্যস্ত আছি, আর ওদের দু'জনের মধ্যেও বেশ চিন্তা রয়েছে । যতই হোক এত বছরের সম্পর্ক হলেও কোথাও গিয়ে এতদিন ওরা বন্ধু ছিল এখন জীবনসঙ্গী হতে চলেছে। তাই এখন আরো ভালোভাবে একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করে এমনিতে ওদের দুইজনের বোঝাপড়া খুব ভালো।'

তার বন্ধু বলল,'তাই তো দেখছি। একে অপরের প্রতি খুব যত্নশীলও।'

শ্রেয়সী বলল,'যত্নশীল তো থাকতেই হবে। আর তাছাড়া ওদের দায়িত্ব একটু একটু করে বাড়ছে। একটু তো চিন্তায় আছেই। কিন্তু হ্যাঁ অদৃত এই সবের সাথে তাল মিলিয়ে চলার সত্যিই খুব চেষ্টা করছে পত্রলেখাও যথেষ্ট চেষ্টা করছে। '

শ্রেয়সী বলল,' তোরা সবাই কিন্তু আসবি আমার ছেলের আশীর্বাদে। '

তার বান্ধবী বলল,' অবশ্যই আসবো । তোর ছেলের আশীর্বাদ বলে কথা আর আমরা আসবো না তুই ভাবলি কি করে?

এইসব শুনে আর্য সেই স্থান ত্যাগ করে নিজের ঘরে চলে গেল। 









আর্য ঘরে এসে অন্ধকারে বসে রইলো। 

সে ভাবলো,হয়তো এবার সত্যিই তার চলে যাওয়াটা ভীষণ দরকার। হয়তো সত্যিই অদৃতের ইচ্ছা আছে পত্রলেখাকে বিয়ে করার । কিন্তু সে আছে বলে হয়তো সে পত্রলেখাকে ভালবাসতে পারছে না অথবা সে হয়তো পত্রলেখাকে বিয়ে করতে চায়। সে এখানে আছে বলে হয়তো অদৃত সত্যিই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা । বিভিন্ন রকমের ভাবনা ভাবতে থাকলো আর্য । তার বারবারই মনে হতে থাকলো শ্রেয়সীর বলা কথাগুলো ঠিক। হয়তো সে চলে গেলেই অদৃতের জীবনটা ঠিক হয়ে যাবে , এত ওঠাপড়া থাকবে না অদৃতের জীবনে।









এইসব কথা ভাবতে ভাবতে আর্য নিজের ফোনটা হাতে তুলে নিলো। সে তার বাবাকে ফোন করবে বলে ঠিক করল ,কিন্তু কোথাও গিয়ে যেন তার হাত চলল না। সে বারবারই ভাবলো যদি সে অদৃতকে ছেড়ে চলে যায় তবে এই পৃথিবীতে তার আর কে থাকবে? সে জীবনে একমাত্র একজনকেই ভীষণভাবে ভালবেসেছে আর সেই মানুষটা হল অদৃত ।

সে তার বাবাকে ফোন করলো।

তমাল সেন ফোন ধরে বলল,' হ্যালো !'

আর্য বলল,' হ্যালো ! আমি আর্য বলছি।'

তমাল সেন বলল ,'বলো কি বলার আছে? কিছু ভাবলে?'

আর্য বলল ,'হ্যাঁ ভেবেছি। '

তমাল সেন বলল,' কি ভাবলে? কলকাতায় ফিরছো নাকি ফিরছো না ?'

আর্য বলল ,'বাবা তুমি ঠিকই বলেছো আমি এখানে থাকলে অদৃত এবং অদৃতের পরিবারের অনেক ক্ষতি হবে আর তার সাথে এটাও ভেবে দেখলাম আমি যদি এখানে থাকি আর আমাদের সম্পর্কের বিষয়ে যদি সবটা সবাই জানতে পারে তাহলে তো কোথাও গিয়ে তোমারও ক্ষতি হবে । তাই আমি সব দিক চিন্তা করে ঠিক করেছি আমি কলকাতায় ফিরে যাবো।'

তমাল সেন খুশি হয়ে বলল,'বাহ্! তুমি যে এই কথাটা এতো তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে আমি তা ভাবিনি আমি কালকেই তোমাকে গিয়ে নিয়ে আসবো।'

আর্য বলল,'হ্যাঁ কিন্তু কাল নয় পরশু দিন ।'

তমাল সেন বলল,'ঠিক আছে তুমি যেদিন বলবে সেদিনই যাবো। এখন রাখছি।'

আর্য বলল ,'দাঁড়াও বাবা তুমি তো আমার আসল কথাটাই শুনলেই না।'

তমাল সেন বলল,'আবার কি কথা?'

আর্য বলল,'আমি কলকাতায় ফিরবো কিন্তু আমার দুটো শর্ত আছে।'

তমাল সেন বলল,' শর্ত ?'

আর্য বলল ,'হ্যাঁ শর্ত। তুমি যদি মেনে নাও তবেই আমি কলকাতায় ফিরবো নতুবা নয়।'












পরদিন সকালে আর্যর যখন ঘুম ভাঙলো তখন বাজে সকাল দশটা । ঘুম থেকে উঠে দেখলো আজ তার ঘুম থেকে উঠতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে । সে তাড়াতাড়ি করে তৈরি হলো আর্ট গ্যালারিতে যাওয়ার জন্য। কারণ আজ তার জীবনের একটা খুব বড়ো গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ তার আর্ট গ্যালারিতে একজিবিশন আছে।

নিরঞ্জন এসে বলল ,'আর্য বাবা তুমি ব্রেকফাস্ট খাবে না?' 

আর্য বলল ,'না থাক। আসলে আমার দেরি হয়ে গেছে , আজকে আমার একটা একজিবিশন আছে। আমি একদম দুপুরের খাবার খেয়ে বেরোবো।' নিরঞ্জন বলল,' তাহলে তো তোমার আরো দেরি হয়ে যাবে।'

আর্য বলল,' কেন?'

নিরঞ্জন বলল,' আরে বাবা আজকে তো অদৃতবাবা রান্না করছে সকলের জন্য।'

আর্য হেসে বলল ,'অদৃত রান্না করছে?'

নিরঞ্জন বলল,' হ্যাঁ সে তো আজ সকাল থেকেই রান্নাঘরে খুব ব্যস্ত। সেখানে কাউকে সে ঢুকতে দিচ্ছে না । এমনকি শ্রেয়সী ম্যাডামকেও নয়।'

আর্য বলল,' আচ্ছা । ঠিক আছে ।'









দুপুর বেলায় যখন সে খেতে নামলো তখন দেখলো পত্রলেখা এবং তার মা- বাবা, সৌনক ,অলিভিয়া শ্রেয়সী এবং ইন্দ্রনীল সবাই ডাইনিং টেবিলে বসে আছে ।

পত্রলেখা আর্যকে দেখে বলল,'আরে আর্য তুমি চলে এসেছো। এসো এখানে বসো ।'

আর্য নিজের জন্য একটা চেয়ার খুঁজে নিয়ে বসলো। অদৃত এরপর একে একে তার রান্না করা খাবারগুলো টেবিলের উপর রাখলো।

পত্রলেখা খাবারের ঘ্রাণ পেয়ে বলল,'আহ্!খুব সুন্দর গন্ধ বেরিয়েছে । মনে হচ্ছে দারুণ হয়েছে। অনেকদিন পর আমরা অদৃতের হাতে রান্না করা খাবার খাবো। এই সুযোগ ভাগ্য করে আসে।'

সৌনক বলল,' যা বলেছো। কতদিন পর আবার ওর হাতের রান্না করা খাবার খবো। আসলে সত্যি বলতে কত বছর ওর হাতের রান্না খাইনি কলকাতার ফ্ল্যাটে যখন গিয়েছিলাম তখন তো মাসি সমস্তটা নিজের হাতে করেছিলো। অনেক বছর পর আমরা আবার তোর হাতের রান্না খাবো ।'

অলিভিয়া বলল,'গন্ধটাতো দারুণ বেরিয়েছে । আমার তো ক্ষিদে পেয়ে গেল রীতিমতো। তার ওপর আবার এই প্রথম আমি তোমার হাতের রান্না করা খাবার খাবো,তাইজন্য আরো এক্সাইটেড ।'

অদৃত বলল,' হ্যাঁ এটা তোমার প্রথমবার কারণ এর আগে আমি তোমাকে কখনো রান্না করে খাওয়াইনি।'

পত্রলেখা অলিভিয়াকে বলল ,'একবার আমার বয়ফ্রেন্ডের হাতের রান্না খেয়ে দ্যাখো দারুন লাগবে।'

অদৃত একটু বিরক্তির দৃষ্টি নিয়ে পত্রলেখার দিকে তাকালো। আর্য চুপ করে রইল।

অদৃত আর্যকে বলল ,'আর্য তোমাকে হাক্কা নুডলস দিই?'

আর্য অন্যমনস্ক হয়েছিল বলে কথাটা শুনতে পেলো না।

অদৃত পুনরায় একটু জোরে বলল,' আর্য তোমাকে হাক্কা নুডলস দিই?'

আর্য বলল ,'হুম?'

অদৃত বলল,'হাক্কা নুডলস দিই?'

আর্য বলল ,'হ্যাঁ।' 

পত্রলেখা বলল,'অদৃত খুব ভালো ইটালিয়ান এবং চাইনিজ ডিস বানাতে পারে । ইন্ডিয়ান খুব একটা ভালো বানাতে পারে না কিন্তু ও চিকেন খুব ভালো রান্না করতে পারে। আমি তো ওর হাতে বানানো খাবারের অপেক্ষা করি । সত্যি বলতে ও বড় বড় রেস্টুরেন্টের শেফদেরও হার মানাবে।'

আর্য মনে মনে ভাবলো,'সত্যিই তাই। এত সুন্দর রান্না একটা ছেলে যে করতে পারে আমি যদি অদৃতকে না দেখতাম তাহলে হয়তো জানতামই না।' আজকে আর্যকে অন্যদিনের তুলনায় একটু বেশি মনমরা এবং উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে । অদৃত বুঝতে পারলো না কি হয়েছে আর্যর? খাওয়া হয়ে গেলে অদৃত একটু ফাঁকা পেয়ে আর্যকে বলল,' আর্য তোমার কিছু হয়েছে ?'

আর্য শান্ত গলায় বলল,' না তো ।'

অদৃত বলল,' কেমন মনে হচ্ছে।'

আর্য বলল,' আজকে একজিবিশন আছে। তুমি আমার সাথে যাবে তো ?'

অদৃত বলল ,'আমার তো তোমার সাথে একসাথে যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল । কিন্তু এখন আমি যেতে পারবো না। আসলে হঠাৎ করেই আমাদের একটা ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান পড়ে গেছে। আমি জানতাম না সমস্তটা অলিভিয়া প্ল্যান করেছে। '

আর্য গম্ভীর গলায় বলল,' আমাদের মানে?'

অদৃত বলল,'আমার আর পত্রলেখার সৌনকদের সাথে একটু বেরানোর ছিল। এটাতে না করলে অলিভিয়া আর সৌনকের খারাপ লাগবে।'

আর্য শান্ত সুরে বলল ,'ও।'

আর্য ভাবলো,'তুমি সবার খারাপ লাগার গুরুত্ব দাও কেবল আমারটা ছাড়া।'

অদৃত বলল ,'কিন্তু তুমি চিন্তা করো না তোমার একজিবিশন বলে কথা আমি ঠিক সময় মতোন পৌঁছে যাবো। '

অদৃত আর্যর মাথায় হাত রেখে বলল,'আজকে দারুণ লাগছে দেখতে ।'

আর্য হাসলো।

আর্যর খুব খারাপ লাগলো সে ভেবেছিলো, তার জীবনের এত বড় দিনটা সে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অদৃতের সাথেই কাটাবে। কিন্তু তার আশা যে আশাই থেকে গেল,বাস্তবে রূপান্তরিত হল না । 

অদৃত বলল,'আমি যেতাম না মা - বাবা বারবার........'

অদৃতের কথাটার মাঝখানেই আর্য বলল ,'ঠিক আছে বারবার আমাকে এত কৈফিয়ত দিতে হবে না আমি বুঝতে পারছি ।'

কথাটা যেন অদৃতের মনে সজোরে আঘাত করল।



কিছুক্ষণ পর আর্য আর্ট গ্যালারির উদ্দেশ্যে রওনা হল।








To be continued.......................


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance