অণুগল্প: অনাদৃতা
অণুগল্প: অনাদৃতা


মেয়েটি কালো। চেহারাও খুব আকর্ষণীয় নয়। ছেলেটি পাত্তা দেয় না। সিগারেটের ধোঁয়ায় উড়িয়ে দেয়।
মেয়েটি দ্যাখে।
টিকালো নাক, উন্নত গ্রীবা। রোজ লাঞ্চের সময় ব্যালকনিতে আসে ছেলেটি। দূরের আকাশ দেখতে দেখতে ধোঁয়ার কুন্ডলি পাকাতে থাকে সে নিজের মনে। আর নিজের অজান্তেই মুগ্ধতা তৈরী করতে থাকে অন্য কারুর মনে।
মেয়েটি দ্যাখে। একদিন আরও কয়েকটি ছেলে আসে সেখানে। সিগারেট ভাগ হয়। সেই ছেলেটির সাথে কাউন্টার দেওয়া-নেওয়া হয়। ফ্লোরের কয়েকটি সুন্দরীকে নিয়ে সরস মন্তব্য শোনা যায়। কত সহজেই ছেলেরা বন্ধু হয়ে যায়।
সেদিন রাত্রে নিজের ঘরে বসে দরজা-জানলা সব এঁটে নতুন কেনা একটা সিগারেট ধরায় মেয়েটি। জীবনে প্রথমবার। পারে না। গলায় কাশি উঠে আসে। কীভাবে খায় ওরা কে জানে! একটু ধৈর্য্য ধরে আবার চেষ্টা করে সে। চেষ্টা করতে করতে নিশ্চয়ই হবে।
এরপর একদিন লাঞ্চের সময়। ছেলেটির পাশে গিয়ে দাঁড়ালো সে। জানে খুব একটা পাত্তা পাবে না। তবু।
দূরের আকাশ দেখতে দেখতে সিগারেট ধরালো সেও। ছেলেটি তাকিয়ে শুধু দেখলো একবার। কিছু বললো না।
"এখান থেকে পুরো শহরটা দেখা যায়, কী সুন্দর - তাই না ?"
ছেলেটির মুখে হালকা হাসির ছোঁয়া। আরেকবার তাকালো সে মেয়েটির দিকে। একটু ভেবে বললো, "দূর থেকে সবই হয়তো সুন্দর লাগে।"
"তা ঠিক।"
ছেলেটির সিগারেট শেষ হয়ে গিয়েছিলো। মেয়েটি হাত বাড়িয়ে তার নিজেরটা অফার করলো - "চলবে ?"
"নিশ্চয়ই, থ্যাঙ্কস।" ছেলেটি নির্দ্বিধায় নিলো সেটা তার হাত থেকে। দু'টান মেরে ফিরিয়ে দিলো আবার।
এইবা মন্দ কী। মেয়েটি ভাবলো। আর কিছু না হোক, কাউন্টারে ঠোঁটের ছোঁয়াটুকু অন্ততঃ পাবে।
~~~