অদ্ভুত ভ্রমণ
অদ্ভুত ভ্রমণ
~~~~~~
দিয়া আর হিয়া,,,
দুই চাচাতো বোন মিলে বেড়াতে গেলো দূরে তাদের এক কাজিনের বাসা।
বাসায় একঘেয়ে জীবন আর ভালো লাগেনা। সারাক্ষণ বন্দী থাকা লাগে। বাইরে কোথাও যাবে সেরকম কোনো পরিস্থিতি ও নেই।
তাই দুজনে প্ল্যান করে বেড়াতে গেলো।
যাদের বাসা গেছে সম্পর্কে তাদের ফুপাতো বোন হয়।
তাদের দুই বোনেরই একমাত্র ফুপ্পির বড় মেয়ের বাসা।
দিয়া বয়সে হিয়ার চেয়ে বড় দুই বছরের, কিন্তু দুজন কে দেখলে হিয়াকেই বড় লাগে কারন শরীর স্বাস্থ্য হিয়ার বেশী ভালো।
দিয়া হলো শুকনা।
তাদের কে দেখে তো ও বাড়ির সকলে খুব খুশি। অনেক দিন যাবৎ কেউ আসেনা, হঠাৎ তারা আসায় অনেকটা খুশি হলো তাদের ফুপাতো বোন মারিয়া।
ফুপাতো বোন হলে কি হবে তারা তাকে নিজের বড় বোনের চোখেই দেখে আর মারিয়া ও তাদের ছোট বোনের মতই স্নেহ করে।
তাদের দিন গুলো অনেক ভালোই কাটছিলো। বেশ মজা করতে পারছিলো দুই বোন মিলে।
শহরাঞ্চল বাইরে ঘুরাঘুরি, সকালে হাঁটতে তাদের বেশ লাগে। বাইরের বাতাশ একদম যাদুময়।
দিয়া হাঁটতে খুব ভালোবাসে, কিন্তু হিয়া তার বিপরীত।
অল্প হেঁটেই ক্লান্ত হয়ে যায়। যেতেই চাইনা খুব বেশী দূরে। তবুও রোজ জোরাজোরি করেই নিয়ে যেতো তাকে।
এভাবেই চলছিলো দিনকাল, রাতের আবহাওয়ায় বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দুজনেই গল্প করতো অনেক রাত অব্দি।
মাঝে মাঝে তাদের বড় বোন মারিয়াও এসে যোগ দিতো তাদের গল্পে। তার দুই ছেলে তাদের সাথেও খেলা করতো দুই বোন।
তাদের ভালো দিন গুলো আর থাকলোনা বেশী দিন।
হঠাৎই একদিন ঘটে গেলো এক অবান্তর ঘটনা।
তারা রোজ যে সকালের সময়টাতে হাঁটতে বের হতো ঐ সময় এক বখাটে গুন্ডার নজরে পড়ে তারা।
কয়েকদিন ফলো করে তাদের পিছু নিয়ে তারা কোন বাসায় ঢুকলো তা দেখে ফেলে।
বেশ কদিন পর গুন্ডাটা তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে সেই বাসার কেয়ার টেকার কে বলে লম্বা মতো দুইটা মেয়েকে এই বাসায় ঢুকতে দেখেছি তাদের তথ্য চাই আমার।
কেয়ার টেকার ছিলো বেশ অমায়িক বললো আপনি কাকে দেখেছেন আমি কিভাবে বুঝবো এই বাসায় তো কতকেউ ই থাকে।
গুন্ডারা আর কিছু না বলে চলে যায় আবার তাদের বের হওয়ার অপেক্ষায় থাকে।
কেয়ার টেকার বুঝে নেয় দিয়ে মারিয়া কে ফোন দিয়ে বলে ম্যাডাম আপনার বোনেরাকে বাইরে যেতে দিয়েন না পরিস্থিতি ভালো না। কিছু বখাটে গুন্ডার নজরে পড়েছে তারা।
মারিয়া ও দিয়ারা কে নিষেধ কিরে দেয় এমনকি বেলকনি যাওয়াও বারন তাদের।
গুন্ডারা নিচ থেকে চেয়ে থাকে কখন দেখে ফেলে তার ঠিক নেই তাই।
দুইবোনের তো মনটা আরো খারাপ হলো। এমনিই একটু আরামে ছিলো। বন্দী জীবন থেকে মুক্ত হতে এসে আরও বন্দী হয়ে গেলো।
খুব মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো তাদের। মনে মনে গুন্ডার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে চলেছে কতোবার
এমনই অনেকদিন কেটে যায়,
একদিন তারা শুনতে পায় গুন্ডা চলে গেছে বিদেশ। হিয়া আর দিয়ার আনন্দ যেনো আর ধরে না।
তারা ইচ্ছা মতো বেলকনি যায়, নেচে গেয়ে বেড়ায় আরো কতকি। এক সময় বাইরে বের হয়ে হাঁসাহাঁসি করছিলো আর হাঁটছিলো।
হঠাৎ দেখে গুন্ডার সাঙ্গ পাঙ্গ রা তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আর ফোন বের করে গুন্ডাকে জানায় তাদের কথা।
তারা তাড়াতাড়ি করে বাসা ফিরে এসে হাঁপাতে থাকে
পরে ভাবে ধুর গুন্ডাতো নেই এরা চেলাপেলা কিছু করতে পারবেনা। তাই পরদিন আবারও বের হয়,
হাঁটতে গিয়ে দেখে দিয়ার পা কিছু তে আঁটকে গেছে আর নড়াতে পারছেনা। নিচে তাকিয়ে দেখে গুণ্ডা তার পা ধরে আছে চেপে।
দিয়ার ভয় যা পেয়েছিলো তার চেয়ে অনেক বেশী রাগ ছিলো গুন্ডার প্রতি সব এক হয়ে মেজাজের বারোটা বেজে গেলো। আরেক পাঁ দিয়ে গুন্ডার হাতে আচ্ছা মতো দিলো এক গুতা।
গুণ্ডা: আঃ মাগো গেলামরে বলে দুরে সরে গেলো।
আর দিয়া হিয়া দুজনেই গুণ্ডাকে কিল ঘুষি দিয়ে ভালো মতো ন্যাকানি চুবানি দিচ্ছিলো।
হঠাৎ কেউ গুতাগুতি করাতে হিয়া ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
দিয়া কে বললো ইস কি সুন্দর সপ্ন টা দেখছিলাম রে ঘুমটা ভেঙ্গে দিলি আমার.....!!
অতঃপর তারা আপাতত বন্দীই থাকলো....!!