অবসর যাপন
অবসর যাপন
সত্যি মাঝেমাঝে নিজেকে সময় দেওয়াটা কেমন যেন অর্থবহ বলে মনে হয়। কর্পোরেট অফিসে কাজ করি,সকাল নটা থেকে সন্ধ্যা সাত টা অবধি কাজ,বাড়ি আসতে রোজই সাড়ে দশটা বেজে যায়। তারপর বাড়ি এসে খাওয়া দাওয়া আর একটু ফেসবুক করতে করতে কখন যে সময়টা কেটে যায়,বোঝাই যায় না। অফিসে কাজের প্রেশার,সকাল গড়িয়ে কখন বিকাল,আর বিকাল গড়িয়ে কখন কাঁচের বাইরে সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসে ,উপলব্ধিই করতে পারা যায় না।
যাই হোক,এখন বিশ্বজুড়ে করোনার তাণ্ডব আর তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে দেশজুড়ে লকডাউন। এখন কিছুটা সময় নিজের জন্য কিন্তু কাটানো যায়। ওয়ার্ক ফ্রম হোম তো আছেই,কিন্তু তার সাথে বাইরের জগতের দৌড়াদৌড়ি,চেঁচামেচি ,ইঁদুর দৌড়ের কম্পিটিশনের বাইরে গিয়ে যদি কিছুটা সময় মেডিটেশন,যে সব বই মনকে আনন্দ ও স্থিরতা দুই দেয়(আমার যেমন পছন্দ স্বামী বিবেকানন্দের গ্রন্থাবলি),জীবনে কিছুটা নিয়মানুবর্তিতা আর কিছুটা নিয়মে খাওয়া দাওয়া ঘুম,পরিবারকে সময় দেওয়া( যেগুলো বাইরের জগতে খুবই কম ঘটে)-এইসব অনন্য অনুভূতির মধ্যেই জীবন অতিবাহিত হচ্ছে। আজ আমার ঘুমই ভাঙল 4-30 এ। এতো আগে এর আগে অনেকদিন উঠিনি, অনেকদিন পরে এই প্রথম।
বাইরে থেকে দেখতে পেলাম পুবাকাশে অরুণ আলোর অঞ্জলি,আমাদের বাড়িটা একটু গ্রামের দিকে হওয়ায় পাখির ডাক শোনা যায়। কাকের কা কা র পর মোরগের ডাক। আজ অনেক দিন পর সবাই মিলে একসাথে টেবিলে বসে খাওয়া দাওয়া। পড়ন্ত দুপুরে মন উদাস করা কোকিলের ডাক। এরপর শেষ বিকালে ছাদের ফুরফুরে হাওয়া মধ্যে সূর্যের ধরণীলোককে বিদায় জানানো রক্তিম আবিরে। একঘেয়েমি কারোরই ভালো লাগে না,হয়তো পরে এই লক ডাউনও নিয়ে আসবে একঘেয়েমি। কিন্তু তথাপি আজ অবসর এক অখণ্ড দিনের এই মুহূর্তগুলি স্মৃতিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সমাপ্ত