STORYMIRROR

Sharmistha Mukherjee

Horror Thriller

4  

Sharmistha Mukherjee

Horror Thriller

আরশির আতঙ্ক 🧟‍♀️ পর্ব ৪

আরশির আতঙ্ক 🧟‍♀️ পর্ব ৪

4 mins
446


এইভাবে ভালো - মন্দে আনা আমাদের সাথে একবছর কাটিয়ে দেয় । আমাদের সাথে এমনভাবে মিশে গিয়েছিল যে দেখলে মনে হোতো আমাদের সাথে আনার বহু বছরের পরিচয় । প্রথম বছর দূর্গাপূজার সময় আমাদের বাঙালীদের মতো করে শাড়ি পরে হৈচৈ করেছিল খুব । দ্বিতীয় বছর পূজার ঠিক আগে আগে আমরা জানতে পারলাম আনা দুমাসের গর্ভবতী । আমাদের মধ্যে বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে লজ্জায় গলায় দড়ি দিতাম কিন্তু ওদের ঐসব কোনো ব্যাপার না । 

তবে বিয়ের কথা বলতে আনা বলেছিল, ওর বয়ফ্রেন্ডের একটু অসুবিধা আছে তাই নিউ ইয়ারের পর রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করবে । দেখতে দেখতে এসে গেল নিউ ইয়ার । প্রথম বছর নিউ ইয়ারের পার্টিতে আমাদের বারোটা বাঙালী পরিবারকেই নিমন্ত্রণ করেছিল । সে চোখ ধাঁধানো সব আয়োজন । সেই বছরেও আগের বছরের মতোই এলাহী আয়োজন ছিল । আমরা সবাই যথেষ্ট হৈচৈ করে রাত এগারোটা থেকে বারোটার মধ্যে যে যার বাড়িতে ফিরে যাই । তখনও অনেক অথিতি ছিল । যাইহোক পরের দিন খুব ভোরে মোটামুটি পাঁচটা - সাড়ে পাঁচটা হবে , অ্যাপার্টমেন্টে অস্বাভাবিক শোরগোল শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি পুলিশের গাড়ির সাইরেনের শব্দ । আমরা তাড়াতাড়ি করে লিফ্টে করে নীচে গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য । লিফ্টম্যানের মুখে জানতে পারলাম প্রথম দারোয়ান দেখতে পেয়েছে আনার শরীরটা নীচে পড়ে আছে । এই শুনে আমি আর আমার স্বামী মৃতদেহের দিকে ছুটে যাই । আমিতো আনাকে দেখেই ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম । আনা রাতে নিউ ইয়ারের পার্টিতে একটা দুধ সাদা রঙের খুব সুন্দর গাউন পরেছিল । মৃত আনার শরীরে গাউনটা রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল , ঘাড়টা ভেঙে ঘুরে গিয়েছিল । সে এক বীভৎস দৃশ্য, ভয়ঙ্কর দৃশ্য । " এই কথা বলেই মিসেস কর ভয়ে কেঁপে উঠে দুহাতে মুখ ঢেকে নেয় । মিনিট খানেক চুপ থেকে মিসেস কর আবার বলতে শুরু করেন । মিসেস কর একটু ধাতস্থ হয়ে আবার বলতে শুরু করেন । " জানেন , মেয়েটার পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট শুনে আমরা সকলেই আৎকে উঠেছিলাম । মানুষ এতো নিষ্ঠুর ! এতো নৃশংস ! মানে ................... । " 

মোনা বলে উঠলো , " কেনো কি ছিল রিপোর্টে ? " মিসেস কর বললেন , " নিউ ইয়ারের দিন রাতে আনাকে ধর্ষণ করে উপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল । "  

জিৎ বললো , " Rape করেছিল ? কে করেছিল , হবু স্বামী ? " মিসেস কর বললেন, " Exactly কারা করেছিল তা আমরা আজও জানি না , তবে কোনো একজন নয় গণধর্ষণ হয়েছিল । পুলিশের অনুমান ছয়জন , কারণ আনার শরীর থেকে ভিন্ন ভিন্ন ছয়জনের সিমেন্স ( বীর্য ) পাওয়া গিয়েছিল । ভাবতেও অবাক লাগে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা জেনেও ঐ পাষন্ড - জানোয়ারগুলো মেয়েটাকে রেহাই দিলো না । ছয়জন মিলে নির্যাতন করে সাততলার ব্যালকনি থেকে নীচে ফেলে দিয়েছিল । " এবার জিৎ আর মোনা দুজনেই লাফ দিয়ে উঠলো । জিৎ বললো , " ওহ্ ! That means আরশি ব্যালকনি থেকে আনাকেই পড়ে যেতে দেখেছে । আরশিকে বারবার দেখা দিয়ে নিশ্চয়ই কিছু বোঝাতে চাইছে আনার অতৃপ্ত আত্মা । আচ্ছা মিসেস কর , আপনি কি রবার্ট নামে কাউকে চেনেন ? মানে আমি বলতে চাইছি আনার বয়ফ্রেন্ডের নাম কি রবার্ট ? " মিসেস কর একটু ভেবে বললেন , " না, না, আনার বয়ফ্রেন্ডের নাম তো উইলিয়াম । আর তাছাড়া নিউ ইয়ারের দিন সে ভারতবর্ষেও ছিল না । কিন্তু কে বা কারা ঐসব ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা কেউ জানি না । পুলিশও কোনো প্রমাণের অভাবে কাউকে গ্রেফতার করতে না পেরে তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল । " মোনা বললো, " কিন্তু এখন আমরা কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না । আরশিকে এভাবে কষ্ট পেতে দিতে পারি না । কি করবো আমরা কিছুই ভেবে পাচ্ছি 

না । " জিৎ উঠে দাঁড়িয়ে বললো , " তাহলে আমরা এখন আসি মিসেস কর । যদি দরকার হয় আবার একটু বিরক্ত করতে আসবো । " মিসেস কর , " এমা , না, না এতে বিরক্ত হওয়ার কি আছে । আপনাদের কোনো উপকারে লাগতে পারলে খুশিই হবো । " কথা শেষ করে জিৎ আর মোনা চলে গেল নিজেদের ফ্ল্যাটে । আরশি তখন তারার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে আর তারা আরশিকে শক্ত করে ধরে রেখেছে । জিৎ তারা আর উজানকে সব বলার জন্য আলাদা করে ডাকলো । তারা বললো , " মিসেস কর কি বললেন দাদাবাবু ? কিছু জানা গেল ? "

মোনা বললো , " হ্যাঁ অনেক কিছু জানা 

গেছে । এখানে আন্দ্রেয়ানা নামে একটি বিদেশী মেয়ে খুন হয়েছিল । আরশি ঐ মেয়েটিকে পড়ে যেতে দেখেছে । " জিৎ আর মোনা মিলে সমস্ত ঘটনা তারা আর উজানকে খুলে বলে । তারা যথেষ্ট বুদ্ধিমান তা আমরা আগেও দেখেছি । তারা সব শুনে বললো , " দাদাবাবু আমার মনে হয় ঐ আনার আত্মাই আমাদের সঠিক পথ দেখাতে পারে যে আমাদের কাছে সে ঠিক কি চাইছে । আমার মনে হয় আমাদের তাড়াতাড়ি কোনো ওঝার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলা উচিত । "

তারার কথায় উজান আর মোনাও সায় 

দিলো । উজান বললো , " জিৎ আমাদের খুব শীঘ্রই একজন Paranormal Researcher - এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে , পারলে আজই । কথা শেষ হতে না হতেই আবার আরশির চীৎকার শুনে সবাই ছুটে যায় । তখন আরশি আবার ভয়ে কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে । তারা আর মোনা ছুটে গিয়ে আরশিকে জড়িয়ে ধরে । হঠাৎ জিৎ খেয়াল করে আরশির পেট প্রায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীর মতো , চোখ - মুখ ফ্যাকাসে বিবর্ণ । 



 🧟‍♀️🧟‍♀️🧟‍♀️ ক্রমশঃ প্রকাশ্য


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror