STORYMIRROR

Sharmistha Mukherjee

Horror Thriller

4  

Sharmistha Mukherjee

Horror Thriller

আরশির আতঙ্ক 🧟‍♀️ অন্তিম পর্ব

আরশির আতঙ্ক 🧟‍♀️ অন্তিম পর্ব

10 mins
272


বিক্রম উঠে দাঁড়িয়ে ওদের সাথে করমর্দন করে বললো , " Nice to meet you . তোমরা আরশির বন্ধু তাহলে তো তোমরা আমারও বন্ধু । Let's enjoy . " 


কথা বলতে বলতে আরশি, মোনা আর উজান তিনজন পরিকল্পনা মতোই বিক্রমকে আরশির ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়ার ছক কষতে লাগলো । আরশি আর মোনা একটু নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ার অভিনয় করতে শুরু করলে উজান বিক্রমকে বলে " বিক্রম এখানে আমি আমার এক বন্ধুর ফ্ল্যাটে আছি, আমার আর মোনার আজ রাতে ওখানেই যাওয়ার কথা । তুমি আর আরশি চলো আমাদের সাথে, সারারাত ভালো করে আড্ডা দেওয়া যাবে । আর কালকে তো Sunday , অফিস ছুটি । মোনা আর আরশির ড্রিংকস করে যা নেশা হয়েছে ওদের একা ছাড়াও যাবে না এতো রাতে । "


বিক্রম : " But অন্যের বাড়িতে আমাদের যাওয়া কি ঠিক হবে ? "


উজান : " কোনো কিন্তু নয়, চলো ওঠো । বিক্রম তুমি আরশিকে ধরো আর আমি আমার মোনাকে ধরছি । বাইরে আমার গাড়ি আছে কোনো অসুবিধা হবে না । "


উজানের কথামতো বিক্রম আরশির একটা হাত নিজের ঘাড়ের পিছনে দিয়ে ধরে ধরে রওনা দিলো আর উজানও একইভাবে মোনাকে ধরে নিয়ে রওনা দিলো পার্কিং লটের দিকে । 


পার্কিং লটে পৌঁছে উজান ও বিক্রম গাড়ির পিছনের সীটে মোনা ও আরশিকে বসায় , তারপর বিক্রম সামনের সীটে বসলে উজান গাড়ি নিয়ে রওনা দিলো আরশির ফ্ল্যাটের দিকে । রাস্তায় যেতে যেতে ওরা দুজনে নানা ধরনের গল্প করতে থাকে, অন্যদিকে মোনা তাড়াতাড়ি জিৎকে ম্যাসেজ করে দেয় " আমাদের পরিকল্পনা মতো কাজ হয়েছে । আমরা আসছি বিক্রমকে নিয়ে । তারাকে বোলো তৈরী থাকতে । কিন্তু অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার সময় দারোয়ান বা অন্য কেউ দেখতে পেলে কি হবে বলোতো ? " অপরদিক থেকে জিৎ উত্তর দিলো " আনা সব সামলে নেবে , don't worry . " ম্যাসেজ করেই মোনা ও আরশি ঘুমের ভান করে গাড়ির পিছনের সীটে পড়ে রইলো । আধ ঘন্টার মধ্যে উজানের গাড়ি এসে থামলো আরশির অ্যাপার্টমেন্টের সামনে । উজানের ডাকে আরশি আর মোনা গাড়ি থেকে নামলো । ওরা তিনজন অবাক হয়ে দেখলো কোনো এক অশরীরী মন্ত্রে যেন পুরো অ্যাপার্টমেন্ট ঘুমন্তপুরীতে পরিণত হয়েছে । এমনকি দুটি দারোয়ানও ঘুমে আচ্ছন্ন । গাড়ি পার্ক করে উজান মোনাকে আর বিক্রম আরশিকে ধরে নিয়ে লিফ্টে উঠলো । সাততলায় আরশির ঘরের সামনে গিয়ে কলিংবেল বাজাতেই তারা দরজা খুলে দেয় । উজান, মোনা আর আরশি বিক্রমকে নিয়ে ঘরে ঢুকে দ্যাখে ঘরের ভিতরে খুব সামান্য আলো জ্বলছে , এককথায় বলতে গেলে ঘর একেবারে প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন । ভালো করে কিছু দেখাই যাচ্ছে না । ঘরে সোফার উপর জিৎ বসে ছিল , তারা বিক্রমকে সোফায় বসতে বলে আরশিকে ধরে আস্তে করে শোবার ঘরে নিয়ে যায় । উজান হঠাৎ বলে ওঠে , " এই মোনা এখানে একটু বসো , পরে ঘুমাবে । আমি বরং তোমার আর আরশির জন্য একটু লেবুর সরবৎ করে আনি । লেবুর সরবৎ খেলে তোমাদের হ্যাংওভার কেটে যাবে । কি তাই ঠিক বললাম তো বিক্রম ? " বিক্রম সাথে সাথে বললো " হ্যাঁ সেটাই বরং ভালো হবে " । মোনাকে সোফায় জিৎ - এর পাশে উজান চলে গেল রান্নাঘরে । এইদিকে তারা আরশিকে শোবার ঘরে রেখে রান্নাঘরে চলে যায় উজানকে সাহায্য করতে । মিনিট পাঁচেক পর কিছু স্ন্যাক্স আর ড্রিংকস নিয়ে উজান রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এসে জিৎকে বলে , " ওহ্ ! বিক্রম sorry ভাই তোমার সাথে ওর আলাপ করাতে একদম ভুলে গেছি । ও হোলো তৃষানজিৎ , আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড । এটা ওর ফ্ল্যাট । আমি আর মোনা থাকি কোলকাতায় । এখানে ওর কাছে কয়েকদিনের জন্য ছুটি কাটাতে এসেছি ।" মোনা ঢকঢক করে লেবুর সরবৎটা শেষ করেই বলে উঠলো , " এই উজান ভালো হয়েছে বল এখানে আরশির সাথে দেখা হয়ে গেল । আরশির কি খবর বলতো ? এই একটু দ্যাখো নাগো আমার বন্ধুটা কি ঘুমিয়ে পড়লো ? " এই বলতে বলতেই আরশি বেরিয়ে এলো শোবার ঘর থেকে । এসেই একটু হেসে বললো " না মোনা ডালিং, আমি কি এই আড্ডা ছেড়ে ঘুমাতে পারি ? তার উপর আবার অন্যের বাড়ি , তোর হবু বরের বন্ধুর বাড়িতে এসে আমি ঘুমাবো ? কি যে বলিস তুই । এই তোরা আবার ড্রিংকস করছিস ? তাহলে আমাকেও দিস । " মোনা বললো , " আরশি আর খাস না , আমরা বরং গল্প করি । ছেলেরা খাচ্ছে খাক্ । " মোনার কথায় রাজি হয়ে আরশি বসে পড়ে । সবাই মিলে রাতের আড্ডা বেশ জমে ওঠে । ঘন্টাখানেক পরে বিক্রম একেবারে নেশায় চুর হয়ে যায় । তখনই আরশি হঠাৎ বলে , " এই চল সবাই মিলে ব্যালকনিতে বসে আড্ডা দেওয়া যাক , ঘরের মধ্যে খুব অস্বস্তি লাগছে । একেতো গরম , তার উপর তোমাদের সিগারেটের ধোঁয়ায় আমার কষ্ট হচ্ছে । " আরশির কথামতো সবাই মিলে ব্যালকনিতে গিয়ে বসে নানা গল্প করতে শুরু করে । উজান, মোনা আর জিৎ হঠাৎ খেয়াল করে আরশি ব্যালকনির রেলিংয়ের কাছে দাঁড়িয়ে আছে । রেলিংয়ের ধারে আরশিকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিক্রম উঠে যায় আরশির

 পাশে । আরশির পাশে গিয়ে বিক্রম আরশির কাঁধে হাত রাখতেই আরশি হঠাৎ রাগে ফুঁসতে শুরু করে । আরশির মুখটা ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে । বিক্রমের হাতটা নিজের কাঁধের থেকে নামিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় । ব্যালকনির হাল্কা আলোতে সবাই দেখতে পায় আরশির পরিবর্তে সেখানে দাঁড়িয়ে আনা । পড়নে ছিল আনার মৃত্যুর দিনে পরিহিত রক্তে ভেজা সাদা গাউন । আনা খোনা গলায় চীৎকার করে বলতে শুরু করে , " কিরে , চিনতে পারছিস আমাকে ? খুব অবাক লাগছে তাই না ? কি ভেবেছিলি আমাকে ভোগ করে এই সাততলার উপর থেকে ফেলে মেরে দিয়ে তোরা বেঁচে যাবি ? তোদের কাউকে আমি ছাড়বো না । তোরা আমাকে নষ্ট করেছিস , তোদের কাছে আমি বারবার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিলাম । বারবার বলেছিলাম আমি মা হতে চলেছি , আমাকে তোমরা ছেড়ে দাও । কিন্তু না তোরা সবাই মিলে আমাকে ছিঁড়ে খেলি , তোদের অত্যাচারে প্রচন্ড রক্তপাত শুরু হয় আমার । তাও তোরা আমাকে রেহাই দিস নি । নিজেদের কার্যসিদ্ধি করে তোরা আমাকে এখান থেকে নীচে ফেলে দিয়ে পালিয়ে

 গেলি " এই বলে বিক্রমের গলা চেপে ধরে । সবাই ভেবেছিল হয়তো আনা বিক্রমকে সাততলার উপর থেকে নীচে ফেলে দেবে , কিন্তু না । সবাই অবাক হয়ে দ্যাখে আনার আত্মা বিক্রমের শরীরে প্রবেশ করে । আরশি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলে , " আনা তুমি কি বিক্রমের শরীরকে মাধ্যম ........ " । আরশির কথা শেষ না হতেই আনা বিক্রমের মাধ্যমে পুরুষ ও নারী মিশ্রিত ভয়াল কন্ঠে বলতে শুরু করে , " হ্যাঁ আরশি, আমি আর তোমার শরীরকে মাধ্যম করবো না । আমি বিক্রমের শরীরের মধ্যে থেকেই বাকী চারজন ও রবার্টকে ওদের পাপের শাস্তি দেবো । রবার্টকে আমি মারবো না , ওকে শাস্তি দেবে আইন । আমি শুধু বিক্রমের মাধ্যমে ওদের সবাইকে এক ছাদের তলায় আনবো । তারপর বিক্রমের শরীর ছেড়ে রবার্টের শরীরকে মাধ্যম করে রবার্টের হাতেই এক এক করে ওই পাঁচটা শয়তানকে আমি শেষ করবো । কিন্তু পুলিশ জানবে সব হত্যাই করেছে রবার্ট । তোমাদের কোনো ক্ষতি আমি করবো না । বিক্রমকে এখানে এনে তোমরা আমার অনেক সাহায্য করেছো । তবে আমার আত্মা মুক্তি পাওয়ার আগে তোমাদের সাথে আবার দেখা হবে " বলতে বলতে বিক্রম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । উজান আর জিৎ দুজনে মিলে বিক্রমকে ধরে নিয়ে সোফায় শুইয়ে দেয় । ধীরে ধীরে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করে । 


ভোরের আলো ফুটলে সবাই বিক্রমকে সোফায় শুইয়ে যে যার ঘরে গিয়ে শুইয়ে পড়ে । শুধু তারা জেগে থাকে বিক্রমকে খেয়াল করার জন্য । সকাল আটটা নাগাদ বিক্রমকে নড়াচড়া করতে দেখে তারা সবাইকে আস্তে করে ডেকে ঘুম থেকে তুলে দেয় । সবাই ঘুম উঠে এলে বিক্রম সবার থেকে অনুমতি নিয়ে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় । বিক্রমকে দেখে আরশিরা ছাড়া অন্য কারো বোঝার উপায় ছিল না যে বিক্রমের শরীরে অশরীরী আনার অস্তিত্ব বর্তমান । অশরীরী আনা সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো বিক্রমের শরীরে থেকে গেল অগ্নুৎপাতের অপেক্ষায় । প্রতীক্ষা শুধু কোনও অছিলায় ওই পাঁচ নরপিশাচকে এক ছাদের নিচে জড়ো করার পরিকল্পনা করা । বিক্রম অন্য সব দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই অফিসের কাজ করা, পানশালায় ( Bar ) যাওয়া চালিয়ে যেতে থাকে । অন্যদিকে বিক্রমের শরীরে বাস করা আনার আত্মা অপেক্ষা করতে থাকে একটা উপযুক্ত পরিকল্পনা করার । দীর্ঘ দুই মাস পর হঠাৎই আনার অপেক্ষার অবসানের সুযোগ আসে । 


রবার্টের জন্মদিন উপলক্ষে রবার্ট নিজের ফ্ল্যাটে সব বন্ধু ও অফিস কলিগদের নিয়ে একটা পার্টির আয়োজন করে । একে একে সবাইকে নিমন্ত্রণ জানায় রবার্ট । অফিস কলিগদের মধ্যে ছিল আরশি ও বিক্রম , তাছাড়াও আরশির সাথে উজান, মোনা ও জিৎকেও নিমন্ত্রণ জানায় রবার্ট । আর বন্ধুদের মধ্যেই ছিল বাকী চার শয়তান । বিক্রমের শরীরে থাকা আনার প্রতিশোধ স্পৃহার আগুন দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে । 

আরশিদের মনের মধ্যেও চলতে থাকে ভয় - উত্তেজনা ও চিন্তা মিশ্রিত এক অদ্ভুত টানাপোড়েন । 


অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আসে সেই দিনটি । অসুর বধের জন্য সমস্ত পরিকল্পনা একেবারে সুসজ্জিত , শুধুমাত্র পরিকল্পনা মাফিক কার্যসিদ্ধি ঘটা বাকী । 


রাত আটটা নাগাদ আরশিরা এসে পৌঁছায় রবার্টের জন্মদিনের পার্টিতে । পার্টি তখন বেশ উঠেছে । প্রায় সবার হাতে হাতে ধরা হার্ড ড্রিংকস বা সফ্ট ড্রিংকসের গ্লাস ,সাথে বাজছে রোমান্টিক পিয়ানো ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক । আরশিরা চারজনে গল্পে ব্যস্ত এমন সময় হঠাৎই প্রচন্ড শরগোল শুনে ওরা ছুটে যায় সেখানে । রবার্টের সাথে কোনো কিছু নিয়ে বিক্রমের তুমুল ঝগড়া চলছে , রীতিমতো মারামারি চলছে ওদের দুজনের মধ্যে । ঝামেলা চলাকালীন রবার্ট হঠাৎ করে চোখের নিমেষে একটা কাঁচের গ্লাস ভেঙে টেনে দেয় বিক্রমের গলার নলির উপর দিয়ে । সাথে সাথেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে ছটফট করতে থাকে বিক্রম । আরশি অবাক হয়ে রবার্টের দিকে তাকিয়ে দ্যাখে রবার্টের ঠোঁটের কোণে একটা তৃপ্তির হাসি । আরশি বুঝতে পারে কখন যেন সবার অজান্তেই আনার আত্মা রবার্টের শরীরে প্রবেশ করে রবার্টের মাধ্যমে প্রথম নরপিশাচকে বধ করেছে । রবার্টের জন্মদিনের পার্টির স্থান হয়ে উঠেছে বধ্যভূমি । এখনও আরও চারজন অসুর বধ হতে চলেছে এই বধ্যভূমিতে । বিক্রমের নিদারুণ পরিণতি দেখে আরশিরা সকলেই মনে মনে খুশি হয় কিন্তু খুন হতে দেখে বাকী অতিথিরা যে যার মতো পালিয়ে যায় সেখান থেকে । শুধু বিক্রমের বাকী চার বন্ধু আচমকা ঘটে যাওয়া ঘটনার জেরে হতবুদ্ধির মতো দাঁড়িয়ে থাকে । 


বিক্রমের আকস্মিক মৃত্যুতে আরশিরা ভয় না পেলেও বিক্রমের বাকী চার বন্ধু অর্থাৎ আনার বাকী চার হত্যাকারী ভয় পেয়ে রবার্টের দিকে তেড়ে গেলে প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় রবার্ট সহ ওদের চারজনের মধ্যে । কিন্তু চারজন মিলে কিছুতেই রবার্টকে কাবু করতে পারছিল না , রবার্টের শরীরে থাকা অশরীরী প্রতিহিংসার আগুনে চার শয়তানকে পোড়াতে তখন মরিয়া । ঐ বধ্যভূমিতে তখন উপস্থিত আরশি, উজান মোনা, তৃষানজিৎ ছাড়াও পাঁচ - ছয়জন ক্যাটারিং সার্ভিসের ছেলে - মেয়ে । আচমকা ঘরের ভিতরের দমকা হাওয়ায় সব দরজা বন্ধ হয়ে যায় । তারপর শুরু মারণখেলা । রবার্টের গলার স্বর শুনে চার নরপিশাচ থরথর করে কাঁপতে থাকে । রবার্টের গলায় পুরুষ ও মেয়েলি মিশ্রিত এক হাড়হিম করা আওয়াজে চারিদিকে শুধু হাসির শব্দ । ঐ চার শয়তানের মধ্যে একজন পালাতে গেলে রবার্ট পিছন থেকে তার ঘাড়টা ধরে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে ভেঙে দেয় । সবার চোখের সামনে মুখ থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরিয়ে সাথে সাথেই মারা যায় । বাকী তিনজনকে ভাঙা কাঁচের গ্লাসের টুকরো দিয়ে গলার নলি কেটে হত্যা করে রবার্টের শরীরে থাকা অশরীরী আনা । বিক্রম সহ বাকী চার শয়তানদের বিনাশ করে রবার্ট অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে । সেই হাসিতে আরশি ছাড়া সবার মেরুদণ্ড দিয়ে যেন হিমস্রোত বয়ে যায় , ভয়ে গুটিয়ে যায়

 সকলে । আরশি রবার্টের দিকে তাকিয়ে বলে , " রবার্ট তুমি এতোগুলো মানুষকে সবার চোখের সামনে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করলে ? তোমার personality disorder এর রোগী ? নয়তো সামান্য একটু কথা কাটাকাটির জন্য রাগের বশবর্তী হয়ে সবাই মেরে ফেললে ? আর তোমার , তোমার গলার আওয়াজ ........ " আরশির কথায় উজান , মোনা আর জিৎ ও সহমত হলে আরশি পুলিশকে ফোন করে পাঁচটি হত্যার কথা জানায় । এদিকে পুলিশ আসছে জেনেও রবার্ট একটি চেয়ারের উপর চুপ করে বসে থাকে , যেন কোনো পাথরের মূর্তি । আধ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ এসে পাঁচটি মৃতদেহকে পোস্ট মর্টেম - এর জন্য পাঠিয়ে দিয়ে রবার্টের হাতে হাতকড়া পড়াতেই রবার্ট চীৎকার করে বলতে শুরু করে , " বিশ্বাস করুন আমি এই খুনগুলো করিনি , আমি খুনি না । আমাকে ছেড়ে দিন, আমি নির্দোষ । " রবার্টের কথা শুনে ক্যাটারিং সার্ভিসের একজন ছেলে বলে ওঠে , " না উনি মিথ্যে বলছেন , উনি আমাদের সবার চোখের সামনে সবাইকে খুন করেছেন । সেই ভয়ানক দৃশ্য আমরা কোনোদিন ভুলতে পারবো না । " সাথে সাথে বাকি সকলেই চোখের সামনে ঘটা সমস্ত ঘটনার বয়ান দিলে পুলিশ রবার্টকে নিয়ে ভ্যানে তুলে রওনা দেয় ।পুলিশ সকলকেই রবার্টের ফ্ল্যাট থেকে বের করে দিয়ে ফ্ল্যাটটা আটকে দেয় । পুলিশ চলে যেতেই আরশি হঠাৎ খেয়াল করে ফ্ল্যাটের নীচে জমাট বাঁধা ভীড়ের মধ্যে একটা কোণায় হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আনা , চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে আনন্দের অশ্রুধারা । আনা আরশিদের দিকে তাকিয়ে হেসে হাত নাড়িয়ে বিদায় জানিয়ে হাঁটতে শুরু করে । আরশি , উজান , মোনার আর জিৎ - এর চোখের সামনে থেকে আনার আত্মা ধীরে ধীরে হাওয়ায় মিলিয়ে যায় । চিরতরে মুক্তি পায় আনা । 


অন্যদিকে আদালতে বিচার চলাকালীন সকল প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের জেরে রবার্টকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারপতি । আরশিরা ও মিসেস ও মিস্টার কর সকলে মিলে আনার আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে গীর্জায় গিয়ে প্রার্থনা করে । আনার শেষকৃত্যে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিল আনার প্রেমিক উইলিয়ামও । 



     🧟‍♀️ 🧟‍♀️ সমাপ্ত 🧟‍♀️🧟‍♀️

   



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror