Agniswar Sarkar

Abstract

2  

Agniswar Sarkar

Abstract

আমার প্রথম লেখার অনুপ্রেরণা

আমার প্রথম লেখার অনুপ্রেরণা

3 mins
766


আজ থেকে বছর ছয়েক আগের কথা । আমি পরিবারের সাথে দীঘায় । বিকেলে সমুদ্র সৈকতে হাঁটছি । মনের মধ্যে থেকে কিছু বেরিয়ে আসতে চাইছিল । পারছিল না । আমার এক বন্ধুকে ফোন করলাম , আমাকে রবীন্দ্রনাথের কয়েকটা লাইন পাঠাবে?

সাথে সাথেই হোয়াটসঅ্যাপে রবীন্দ্রনাথের কয়েকটা লাইন এলো । সেই লাইনগুলোই আমার ভিতরের সেই ছটফটে শব্দগুলো বেরিয়ে এলো কয়েকটা লাইন হয়ে । অবিন্যস্ত । কাঁচা লেখা । এর আগে স্কুলের খাতা ছাড়া স্বরচিত শব্দের ভিড় আর কোথাও ছিল না । শুরু হল কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অক্ষরকে শব্দের রূপ দেওয়ার চেষ্টা ।

বছর দুয়েক আগের কথা । সদ্য প্রকাশিত হয়েছে ' পর্যটন কেন্দ্র অম্বুয়া নগরী ' বইটা । আমার কাজ ছিল বইটির ছবিগুলি তোলা এবং সেগুলো দিয়ে বইটিকে সাজিয়ে তোলা । আমার স্কুলের তথা আমারও শিক্ষক শ্রী জ্যোতিষবাবু 'নগেন চন্দ্র হিউম্যান ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশান' নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক । স্যার একদিন এসে আমাকে বললেন , অগ্নিশ্বর , তুমি সদ্য একটি বই প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলে । আমাদের সংস্থা থেকে একটি বই প্রকাশিত হবে । তুমি ওই পত্রিকাটির ছবি দিয়ে সাজিয়ে তুলবে ? বইয়ের বিষয় 'রবীন্দ্রনাথ' ।

আমি তৎক্ষণাৎ উত্তর দিয়েছিলাম , পারব স্যার ।

এতদিন ধরে স্যার যে শিক্ষা আমাকে দিয়েছিলেন , সেটির বাস্তব প্রয়োগ করার সুযোগ স্যারেরই হাত ধরে পেতে চলেছি । সেখান থেকে পিছনোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না । স্যার কোনওদিনও আমাকে পিছু হটার শিক্ষা দেন নি ।

স্যার আমাকে পত্রিকার পুরো আউটলাইনটা শোনালেন । শেষে আমাকে তিনজন বিশিষ্ট ব্যাক্তির নাম বললেন । সাথে এও বললেন , ওনাদের থেকে লেখাগুলো সংগ্রহ করতে । সেদিন সন্ধ্যেবেলায় আমি স্যারকে ফোন করলাম ।

- স্যার আমি কিছু লিখতে পারি ?

- নিশ্চয় । তুমি তো লিখবেই ।

কথাটা শুনে খুব আনন্দ পেলাম । তখনও বুঝিনি কী কঠিন কাজ আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে । টের পেলাম পরেরদিন সকালে । যখন লেখা শুরু করলাম । আমি নিজের লেখার বিষয় থিকা করলাম ' আমার রবীন্দ্রনাথ ' । আমার জীবনে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি । অনেক যুদ্ধের পর সেই লেখা শেষ হল । দিলাম স্যারের হাতে । স্যার পড়লেন ।

কয়েকদিন পর আমাকে লেখাটার কিছু সংশোধন করে আমাকে দিলেন । বললেন , দেখে নাও ।

আমি মাথা নিচু করে স্যারকে বললাম , আপনি যখন দেখেছেন তখন ঠিকই আছে ।

পত্রিকাটি যথাসময় প্রকাশিত হল । লেখাটি স্থান পেল সম্পাদকীয়র পরের পাতায় । লেখাটি প্রশংসিতও হল । তারপর থেকে যখনই স্যারকে বলেছি স্যার এটা লিখব ভাবছি । স্যার সঙ্গে সঙ্গে বলেছেন , লেখো । পারবে তুমি ।

একদিন সন্ধ্যায় স্ স্যার একটা পত্রিকা প্রকাশ করব ভাবছি । আপনি ওই পত্রিকার সম্পাদক হবেন ।

-  অগ্নিশ্বর , আমার বয়স হয়েছে । তুমি হবে ওই পত্রিকার সম্পাদক । আমি আছি তোমার সাথে । তুমি পারবে ।

এরপর কত মূল্যবান সময় স্যারের সাথে কাটিয়েছি । স্যার সবসময় আমাকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন । উৎসাহ দিয়ে গেছেন সাহিত্য , শিল্প , সংস্কৃতির সাথে যুক্ত থাকার বিষয়ে । আমি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছি । যন্ত্রপাতির মধ্য থেকেও স্যার সাহিত্যর বীজ বপন করে দিয়েছেন । আমি আজ লিখতে গেলে একটা কথা ভেবে ভরসা পাই । স্যার আমার সাথে আছেন । সেই প্রথমদিন থেকে আজও স্যার আমার সাথে আছেন। ভবিষ্যতেও থাকবেন ।

আজ যখন আমি 'স্টোরিমিররে'র জন্য এই লেখাটি লিখছি তখন স্যারের ফোন এলো । আমি প্রয়োজনীয় কথা শেষ করার পর বললাম , স্যার 'আমার লেখার প্রথম অনুপ্রেরণা ' বিষয়ক একটা লেখা লিখছি ।

আজও স্যার একই কথা বললেন , তুমি লেখো। তুমিই পারবে  ।

-


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract