আধ্যাত্মিকতা
আধ্যাত্মিকতা


আধ্যাত্মিকতা আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতিটি মানুষের মধ্যেই আধ্যাত্মিকতা অর্থাৎ আধ্যাত্মিক এক সত্ত্বা রয়েছে। কেউ আমরা সেই সত্ত্বাকে উপলব্ধি করতে পারি, আবার কেউ পারি না। আধ্যাত্মিকতা মানুষকে প্রকৃত মানুষ হতে সাহায্য করে। আমারই এক সহপাঠী রাজর্ষির মধ্যে বিরাট আধ্যাত্মিক সত্ত্বা বিরাজমান। আধ্যাত্মিকতার অনেক স্তর থাকে। রাজর্ষি এমন একটি ছেলে, যার মধ্যে আধ্যাত্মিকতার বহু গুণ রয়েছে। রাজর্ষির কাছে এই জগতের আসক্তি অনেক কম। একদিন রাজর্ষি আমাকে বলল,"এই দেখ, এই সানগ্লাসটা কিনলাম।" আমি দেখে বললাম,"খুব সুন্দর হয়েছে। তোকে খুব ভালো মানাবে।" শুনে হাসলো। তার কিছুক্ষণ পর বলল,"এইটা তুই পরবি।" আমি বলে উঠলাম,"আমার আছে, তুই পর এটা।" রাজর্ষি সানগ্লাসটা দিয়ে চলে গেল আর নিল না। আর বলে গেল,"তুই পরা মানেই আমার পরা। তোরও যা, আমারও তাই।" শুনে আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো। এই কথা সাধারণ মানুষের মুখ থেকে বেরোবে না। বড়ো সাধকদের মুখ থেকে এমন কথা বের হয়। রাজর্ষির মধ্যে অসাধারণ এক সরলতা রয়েছে। কেউ যদি ওকে বলে,"আমি তোকে ধরে মারব।" তাকে হাসতে হাসতে রাজর্ষি বলে ওঠে,"মারো,মারো না! আমি মার খাব।" ওর মধ্যে নেই কোনো হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা; আছে শুধু ভালোবাসা, সততা আর সরলতা। রাজর্ষিকে যদি কেউ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করে, তাহলে সে বুঝবে আধ্যাত্মিকতার প্রকৃত অর্থ। আধ্যাত্মিকতাকে ভাষা বা শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। এটা উপলব্ধির ব্যাপার। আমাদের দেশে বহু আধ্যাত্মিক মানুষ জন্মেছিলেন এবং এখনও জন্মাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, স্বামী বিবেকানন্দ, ঋষি অরবিন্দ ঘোষ প্রমুখ। যেমন উপনিষদে বলা হয়েছে, নিজেকে জানো। আমাদের উচিত নিজেকে জানা, তবেই নিজের আধ্যাত্মিকতাকে হৃদয়ঙ্গম করা যাবে।