প্রথম চুরিদার
প্রথম চুরিদার
বয়েস হবে বছর চোদ্দ, তখন আমি ক্লাস নাইন,
বাবা একটা চুরিদার এর পিস কিনেছে ফাইন।
অল্প চিকনের কাজ, রঙটি তার হালকা এ্যালপাইন,
কাপড়টা ছিলো অবশ্য হয় টেরিকটন অথবা সার্টিন!
তুতুনদির সাথেই গেলাম এক টেলারিং এর দোকান।
জীবনে প্রথম এবার, তৈরী হবে আমার সালোয়ার,
খুব একটা লম্বা চওড়া আমি কোনোদিনই নই,
তাই বানানো হলো শেষে এক কামিজ-চুরিদার।
নাম জানিনা, ছিলো যে এক ছেলে সেই দোকানদার,
তবে শুনেছিলাম পদবীটা নাকি তার মালাকার।
লক্ষ্মী পিসির কাছে না নিয়ে গিয়ে কেন যে
ওখানেই যেতে ইচ্ছে হয়েছিলো তুতুনদির !
দর্জী হলেও কলেজে পড়া সুদর্শন শ্যামলা ছোকরা,
দু একটা কথার উত্তর দিয়েছিলাম আমরা।
চুরিদারটা পেয়ে আমি খুশী, দিন কতক পরের ঘটনা,
রাস্তার ধারের ঘরে, সন্ধ্যের পরে, করছি পড়াশোনা।
হঠাৎ খোলা জানালা দিয়ে উড়ে এলো একটি চিঠি,
একই সাথে "চিঠিটা পড়ে নিও" কথা মিঠি মিঠি।
খুব সহজেই ভয় পেয়ে চমকে ওঠা,স্বভাব আমার,
আরশোলা দেখেও, পাড়া মাথায় করি আকছার।
রান্না ফেলে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন আমার মা,
ওপর থেকে তুতুনদিরা আর বাড়িওয়ালী জেঠিমা।
চিঠি খুলে পড়েন তারাই, করেন আমায় জেরা,
তুতুনদি তো আমার সাক্ষী, জানিনা কিছুই আমরা।
কি যে সব লেখা ছিলো সেই চিঠিতে, মনে নেই,
তবে সাব্যস্ত হয়েছিলো যে, ওটা প্রেমপত্র তো বটেই।
অফিস থেকে ফিরে, সবকিছু শুনে,
বাবার কপালে পড়ে চিন্তার ভাঁজ ।
তবে বিশ্বাস ছিলো ভরপুর, তাঁর মাথা নিচু হয়,
মেয়ে তাঁর কখনও করবেনা এমন কাজ।
তবে মেয়ে এবার বড় হয়েছে, জারি হলো হুকুম!
একা একা বাইরে বেরোনো একদম বন্ধ,
কারোর সাথেও বিনা কারণে, অপ্রয়োজনে খুব কম।
