মাছের ঝোল
মাছের ঝোল
রাইখোর, চাঁদা, পাবদা, পুঁটি, কিংবা ষোল,
ভাতের পাতে বাঙালির চাই যে মাছের ঝোল।
ভ্যাদা মাছ আর আছে বোকা বেলে,
কিছু না বুঝেই দেয় যে বডি ফেলে !
কাঁকিলা, চাঁপিলা, কাজলি, পিয়ালি,
ভেবে হয় আকুল, শেষে আমায় পছন্দ করলি ?
কাজলির আরেক নাম যে বাঁশপাতা!
খাবার পর সুন্দর কাঁটাটাও ইচ্ছে হয়না ফেলতে,
যেন এক অপূর্ব শিল্প, ভরানো যায় আঁকার পাতা।
ফলি, ফ্যাঁসা, চিতল, তোপসে, ইলিশ, খলিসা,
পাতুরি অথবা ঝোল দুটোতেই একেবারে খাসা!
যে মাছে যত বেশি কাঁটা, সে মাছ সরেস ও দড়ো,
গলায় না বেঁধে কাঁটা, শেষে বিড়ালের পায়ে ধরো।
কাটাতে ভয় থাকলে বোয়াল, আড় বা মাগুর খেও,
সিঙ্গি আর কই তো বলবেই, আরে বাঃ জিও জিও!
কাতলা, মৃগেল, সরল পুঁটি অথবা হোক কালবাউস,
বাম, কুচিয়া, পারশে, ভেটকি! এরা বাঙালির হাউস।
তবে ভেটকি মাছটা ঝোলের চেয়ে ফ্রাই টাই ভালো,
মাছ নয় বলে চিংড়ি আর কাঁকড়া কি দোষ করলো ?
চিংড়ি মাছকে ছোটোমাসি তো ইঁচামাছ বলেছিলো!
আমি বড়া দেখেও ঘুমের ঘোরেও উল্টো হয়ে শুই,
_______উঃ ছি ছি! শুঁটকি মাছ কি আমি খাই?
"আরে না না শুঁটকি নয়, কুঁচো চিংড়ির বড়া এগুলো,
চিংড়িকে ইচা বলে, কিছুই কি জানিস না তুই ?"
তেলাপিয়া, ভোলা, কোনো কার্প বা আমেরিকান কই,
সবাইকে ছাড়িয়ে আজও মাছের রাজা নাকি রুই!
ছি ছি করার পরে শীতল বা চ্যাঁপা খেতে শিখেছি,
রান্নার সময় বিকট গন্ধ, পরে তো মাছটাই নেই !
পেঁয়াজ রসুনের ঝালমশলা ভর্তা খেতে নয় মন্দ,
ব্যাপারটা একটু দেরীতে হলেও বুঝেছি !
কিন্তু শ্বশুরবাড়ি এসে কেউ খায় না বলে, ছেড়েছি।
অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস কথাটা যে কত সত্যি জেনেছি,
আর সহ্য হয়না বাসি অথবা শুকনো বেশ বুঝেছি !
বাঙালির প্রিয় মোয়া মাছের ঝাল ঝাল চচ্চড়ি!
"মইলি মচ্ছা", বাঙালী হয়ে কি একথা ভুলতে পারি?