অফিসের গল্প
অফিসের গল্প
তন্বী জয়েন করতেই দপ্তরের চেনা ছবিটা বদলে গেল,
তরুণদা মাথায় কলপ শুরু করলেন,
জহরদার বিবর্ণ পোশাক হয়ে গেল উজ্জ্বল ধোপদুরস্ত,
যে তপনদার নামের পাশে প্রায়ই লেট মার্ক বসত,
তিনিও আসা শুরু করলেন শুরুর কিছু আগে।
তন্বীকে কেউ চা খাওয়ায় তো, কেউ চাইবার আগেই নূতন প্রকাশিত পত্রিকা পড়ায়।
তাছাড়া সাগ্রহে সহকর্মীরা হাতে হাতে তুলে দেয় তার কাজ।
সেদিন রমেন বলল, গত রবিবার দুজনে ফোরাম মলে গিয়েছিল।
ভোলা বলল, রোজই মধ্যরাত অবধি তার কথা হয়
মোবাইলে।
হরেন বলল,আমি বলতে পারি ওর দেহে কটা তিল আছে।
তা ভাই, এতটা এগোলি কি করে?
শুধু এস এম এস আর মিস কল করে?
মিস কল করলেই ও ঘুরে ফোন করে!
ভাবলাম একবার করে দেখবো!
আমি ওর নম্বরে মিস কল দিলাম,
নো রিপ্লাই।
আবার, বার বার,
কোন উত্তর নাই।
হঠাৎ মোবাইল স্ক্রিনে নোটিফিকেশন এল
ওয়ান মেসেজ রিসিভড,
খুলেই দেখি, একটা "কে" পাশে জিজ্ঞাসা চিহ্ন।
ভাবলাম, দারুণ তো!
লিখলাম, " তোমাকে চাই "।
উত্তর এল," আমি তোমাকে চাই না "।
আমি আবার মিস কল করলাম।
রাগে দুঃখে পর পর, বেশ ক'বার।
কিছুক্ষণ পরে আমার ফোন বাজলো,
দেখি সেই নম্বর!
ডেটিংয়ের প্ল্যান ভাঁজতে ভাঁজতেই
আমি গলে গিয়ে বললাম,"হ্যালো ".....
ওপার থেকে ভারী গলায় --------
"কেন বিরক্ত করছেন? ডোন্ট ডিস্টার্ব মি "।
শোনার পর অপ্রস্তুত আমি,
আচমকা ঝোড়ো হাওয়ায় উল্টে পাল্টে গেল সব,
ঝনঝন করে পড়লো বাসন পত্র, নড়ে উঠল আসবাব।
ঘাবড়ে গিয়ে ভাবলাম এ আমি কি করলাম,
সঙ্গে সঙ্গে কথা না বাড়িয়ে লাইন কেটে দিলাম।
পরদিন সবার জিজ্ঞাস্য - কি? কিছু হল?
তন্বী কারোর সিনেমায় সঙ্গী,
কারো সাথে ভিক্টোরিয়া বা লেকে,
আবার কারো সাথে বন্ধুর ফাঁকা ফ্ল্যাটে কাটিয়েছে গোটা দুপুর।
কিন্তু আমার সাথে কি হল বলি কিভাবে?
বললাম, মিসকল দিতেই ও ফোন করেছিল তারপর..... সে অনেক কথা........
বলেই মুখ টিপে ইঙ্গিত করে হাসলাম যাতে সবাই বোঝে।
পিছন ফিরেই মনে হল,
আমি তো গুল মারলাম,
তাহলে কি ওরাও আমার মত ভাবলাম!