বুঝুক ঠ্যালা
বুঝুক ঠ্যালা


লক ডাউনের গেরোয় পড়ে
পাড়ার গোকুল নন্দী ,
অনেক ভেবে বাইরে যাবার
বানালো এক ফন্দি ॥
ঘরের লোককে যতই বলে
আসিনা - একটু ঘুরে ,
কেউ শোনে না তার সে কথা
ঘরেতে দেয় পুরে ॥
ঘরে বসে থেকে থেকে
ভাল্লাগেনা আর ,
বাইরে গিয়ে হাওয়া খাওয়ার
বড়ই যে দরকার ॥
খাবারগুলোও হয়না হজম
কেবল শুয়ে বসে ,
বন্দী দশায় কাটছে সময়
নেহাৎ কপাল দোষে ॥
ব্যাজার মুখে বসে আছে
হাতে চায়ের কাপ ,
এমন সময় ভ্যানটা দেখেই
মারলো বিরাট লাফ ॥
সবজি ফেলে ভ্যানয়ালাকেই
আনলো ঘরে টেনে ,
বললো , ভায়া একটা কথা
নাও না আমার মেনে ॥
ঠান্ডা ঘরে খানিক বসে
খাওনা চা-পান-বিড়ি ,
আমিই নাহয় ভ্যানটা নিয়ে
সবজি বেচে ফিরি ॥
বিক্রি-বাটা করে আমি
যে ক'টাকা পাবো ,
ফাউ হিসেবে তোমায় আরো
একশো টাকা দেবো ॥
ঘরে বসে পারছি না আর
রাখতে মাথা ঠিক ,
তোমায় দেখে এ বুদ্ধিটাই
করলো মাথায় ক্লিক্ ॥
ভ্যানে করে সবজি নিয়ে
ঘুরবো পাড়াময় ,
তুমি বসে আরাম করো
নেইতো কোন ভয় ॥
দয়া করে এ প্রস্তাবে
হও যদি ভাই রাজি ,
আমি তা'লে এই বেলাতেই
সবজিওলা সাজি ॥
দাড়িখানায় হাত বুলিয়ে
ফুলিয়ে বুকের সিনা ,
পাগড়ি খুলে বললো দেখুন
চিনতে পারেন কিনা ?
তাকে দেখেই নন্দীখুড়ো
হো হো করে হেসে ,
বললো- নকুল, তুমিও কিনা
ভেক্ ধরলে শেষে !!
বলতে পারেন করবোটা কি ?
বসে ঘরের কোণে ,
হঠাৎই এই বুদ্ধিখানা
আসলো আমার মনে ॥
পকেট থেকে দুশো টাকা
হয়েছে আমায় দিতে ,
তবেই ব্যাটা, ভ্যানখানাকে
দিয়েছে আমায় নিতে ॥
ওদিকে সে ঘরে বসে
দেখছে সিরিয়াল ,
বলেকয়ে তোমার কাছে
পাঠিয়ে দেবো কাল ॥
এভাবে নাহয় চলতে থাকুক
সবজি বেচার খেলা ,
বাড়ির লোকে বুক চাপড়াক্
বুঝুক , কেমন ঠ্যালা ॥