Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sanghamitra Roychowdhury

Abstract Drama Horror

2.0  

Sanghamitra Roychowdhury

Abstract Drama Horror

কাল্পনিক নয়

কাল্পনিক নয়

3 mins
756



ষোলো বছরের ঋত্বিকা, মানে ঋতু এবারে ক্লাস ইলেভেনে। পরের বছর উচ্চ মাধ্যমিক দেবে। কোথাও বেড়াতে যাওয়া সম্ভব হবে না তাই আগামী বছরে। পড়াশোনার প্রবল চাপ থাকবে। তাই ঋতুর বাবা মা অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করলেন যে এবারেই দুর্গা পুজোর ছুটিতে অজন্তা ইলোরা পুণে হয়ে গোয়ায় ঘুরতে যাবেন। মা বাবার সিদ্ধান্তে ঋতু তো মহাখুশি। বেড়াতে যাওয়া উপলক্ষ্যে ঋতু বাবার কাছ থেকে একটা বেশ ভালো দামী ক্যামেরা আদায় করে নিলো। মহা উৎসাহে গাছ পাতা পাখির ছবি তুলে তুলে হাত পাকাতে থাকলো ঋতু। আর ঋতুর মা এদিকে প্রত্যেকদিন ভ্রমণসঙ্গী দেখে দেখে একেকটা নতুন তথ্য খুঁজে খুঁজে বার করছে, আর রাতে খাবার টেবিলে বসে সেগুলো বলে বলে ঋতুর কৌতূহল আর উত্তেজনা হাজারগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঋতুর এখন আর পড়াশোনায় একেবারে মন নেই। এমনকি অন্যান্যবারে পুজোর সময় কলকাতার বাইরে যেতে রীতিমতো আপত্তি জানায় যে ঋতু, সেই ঋতুই কিনা এবারে এখন দিন গুনছে কবে পঞ্চমীর দিনটা আসবে। ঐ দিনেই ওদের রওনা হওয়ার কথা হাওড়া থেকে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে চড়ে।


কেউ নেই তখন ঋতুর সঙ্গে। ঘুরতে ঘুরতে বাবা মা বেশ ক্লান্ত। ঋতুর মা'তো একেবারে বসে একটু জিরিয়ে নেবার জন্য একটু নিরিবিলি খুঁজছে। বাবাও মায়ের সঙ্গেই একটু বিশ্রাম নিয়ে নেওয়ারই পক্ষে। অগত্যা ঋতু ইলোরার দশাবতার মন্দিরে একা একাই ঘুরে ঘুরে ছবি তুলছে। ঋতু একবার চোখ ফিরিয়ে দেখে নিলো যে মা ক্লান্তি কাটাতে মন্দিরের চাতালের একপাশে ছায়ায় বসে পড়েছে। আশেপাশে ট্যুরিস্টদের সঙ্গে টুকটাক গল্পগুজব করছে মনে হয়। দূর থেকেই দেখে আন্দাজ করলো ঋতু। ঋতুর বাবার ঘনঘন সিগারেট তেষ্টা পায়। তাই পকেট হাতড়ে ফাঁকা প্যাকেট দেখে ঋতুর বাবা সিগারেটের খোঁজে গেটের দিকে এগিয়ে গেলো। একঝলক দেখে নিয়ে ঋতু আবার ছবি তোলায় মন দিলো। ছবি তুলতে তুলতে ঋতু হঠাৎ লক্ষ্য করলো ওর বাবা মন্দিরের একেবারে ভিতরের দিকে ঢুকে গেলো। বাবাকে দেখে ডাকতে ডাকতে ঋতুও ছুটলো বাবার পিছনে পিছনে। মন্দিরের ভিতরটা আবছা আলোয় ছায়াঘন, কিন্তু তাতেও সবদিকটাই ঋতু দেখতে পাচ্ছে পরিষ্কার। কই, বাবা তো নেই ভিতরে! কোথায় গেলো তবে? মন্দিরের গার্ডটা হতভম্ব ঋতুকে প্রায় ধমকেই বাইরে বের করে দিলো। অত্যন্ত দ্বিধাবিভক্ত মনে ঋতু মন্দিরের বাইরে বেরিয়ে এসে আরেকদফা হতবাক। বাবা মা দুজনেই তো বসে আছে মন্দিরের ঠিক বাইরের চাতালে ছায়ায়। ঋতু কাউকে কিছু বললো না বটে তবে মনের মধ্যে অদ্ভুত কাঁটাটা বিঁধেই রইলো। এতোটা চোখের ভুল? নাকি মনের ভুল?


ঋতু বর আর সতেরো বছরের মেয়েকে নিয়ে খাজুরাহোতে বেড়াতে এসেছে। সবদিক মিলিয়ে পরপর অনেক মন্দির। অনেকখানি জায়গা নিয়ে নিয়ে ছড়ানো চত্বর। হেঁটে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে যক্ষ মন্দিরের উল্টোদিকের সাদা মার্বেলের নাটমন্দিরের ঠাণ্ডা চাতালে বসে পড়লো ঋতু। ঋতুর বর আর মেয়ে নানানদিকে ঘুরেফিরে ছবি তুলে বেড়াচ্ছে, ঋতু দূর থেকেই নজর রাখছিলো। সুন্দর ফুরফুরে হাওয়ায় ঋতুর চোখদুটো বুজে আসছে। ক'দিনের ক্লান্তিতে ঋতুর শরীর বিশ্রাম চাইছে। কতক্ষণ পার হয়েছে ঋতু ঘড়ি দেখেনি। হঠাৎ দেখলো ঋতুর বর যক্ষ মন্দিরের ভিতর একাই ঢুকে গেলো। ঋতু ভারী অবাক হলো বরকে একা দেখে। মেয়েটা নির্ঘাত আগেই গিয়ে ঢুকেছে। ঋতু ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়িয়ে খুব দ্রুতপায়ে ঢুকে পড়লো মন্দিরের ভিতরে। কিন্তু একী?ভিতরটা তো একেবারে শুনশান ফাঁকা! কেউ কোথাও নেই। ঋতু একপা দুপা করে পিছু হেঁটে বেরিয়ে এলো ভয়ানক অবাক হয়ে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় ঋতু অসহায় দৃষ্টিতে এধার ওধার তাকাতে তাকাতে দেখতে পায় ওর বর আর মেয়ে দুজনেই একসাথে উল্টোদিক থেকে যক্ষ মন্দিরের দিকেই এগিয়ে আসছে হাসিমুখে। ঋতুর শরীরটা যেন কেমন অবশ লাগছে! তবুও ঋতু চুপচাপই রইলো। তবে ঋতুর চোখের ভুল? নাকি মনের ভুল?


ঋতুরা আন্দামানে সেলুলার জেলে ঘুরছে। দোতলা দেখা হয়ে যেতে তিনতলায় উঠে গেলো ওরা। তারের জালে ঘেরা চওড়া বারান্দার একধারে খুপরি খুপরি প্রায় অন্ধকার সেলগুলো। দিনের আলো পড়ে এলেও ঠিকরে আসা আলোয় সবকিছুই দৃশ্যমান। বিকেলের মরা আলোয় ঋতুর হলুদ সুতির সালোয়ার কামিজ যেন আরো হলুদ। ঋতুরা তিনতলার সেলগুলো উঁকি মেরে দেখছে। হঠাৎ ঋতু দেখে একেবারে শেষপ্রান্তের সেলটার ভিতরে মেঝেতে উবু হয়ে বসে আছে যেন কে? একজন মহিলা না? ঋতুর শিরদাঁড়া বেয়ে একটা ঠাণ্ডা তরল স্রোত নামছে। ঋতু ওর মেয়ের হাতটা খামচে ধরে। কে ও? একেবারে ঋতুর ঐ গাঢ় হলুদ সালোয়ার কামিজ গায়ে ও কে বসে আছে ওভাবে সেলের মধ্যে? ঋতুর ইচ্ছে হলো একবার এগিয়ে গিয়ে উঁকি মেরে মহিলার মুখটা দেখে। কিন্তু কিছুতেই পারলো না। ঋতুর পা-দুটো যেন পেরেক দিয়ে বারান্দার মেঝতে আটকানো। কী দেখলো ঋতু? ওর চোখের ভুল? নাকি মনের ভুল?


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract