Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

AYAN DEY

Fantasy Others

3  

AYAN DEY

Fantasy Others

মির্জাপুর হাইস্কুল টুর্নামেন্ট

মির্জাপুর হাইস্কুল টুর্নামেন্ট

4 mins
208


আমাদের আদি বাড়ি মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে | সেই গ্রামে সম্প্রতি এক সেকেন্ডারি স্কুলে এটা অবাক কাণ্ড ঘটেছে |

গতমাসে স্কুলের স্পোর্টস ছিল | তাহারি অন্তর্গত এক ক্রিকেট ম্যাচে এই কাণ্ড ঘটে | গুড্ডু এবং মুন্না বলে স্থানীয় দুই ছেলে দুই ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ছিল | খেলা শেষ হওয়ার এক ওভার আগে অবধি মুন্নার টিম জিতছিল | হাতে আর 1 উইকেট | গুড্ডু ও বাবলু ক্রিজে | রান দরকার 17 | ঠিক এমন সময় গুড্ডু আম্পায়ারকে বলে ড্রিংকস ব্রেকের অনুমতি নেয় |

ম্যাচ জিতছে সেই আনন্দে বল নিয়ে যেমন ইচ্ছে লোফালুফি শুরু করে মুন্না | ভুলবশত বল গিয়ে লাগে আউট হয়ে যাওয়া গুড্ডুর টিমের 1 প্লেয়ারের | সপাটে গিয়ে মাথায় লাগার ফলে তৎক্ষণাৎ চৈতন্য হারায় সেই ছেলেটি | তৎক্ষণাৎ অ্যাম্বুলেন্স এনে ছেলেটিকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় | স্কুলের প্রধান টিচার সেই মুহূর্তেই মুন্নাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখেন যদি ছেলেটির কিছু হয় তবে তাকে মাফ করা হবে না | এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো মুন্নার বাবা শ্রী অখন্ডানন্দ ত্রিপাঠি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা |

মুন্না সটান বলে ওঠে , “ আরে স্যার এটা তো মিসটেক ছিল | ”

প্রধান শিক্ষক বলে ওঠেন , “ তোমার মিসটেকের জন্য একটা ছেলে প্রাণ হারাতে বসেছে | হাজারবার তোমার কোচ বলছিলেন বল নিয়ে ওরকম ছোড়াছুড়ি না করতে কিন্তু তুমি কাউকে কেয়ার করোই না ! ”

এদিকে প্রধান শিক্ষকের ছেলে গুড্ডু ও বাবলু | যে আহত হয়েছে সে তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু | বাবলু প্রচন্ড রেগে গেলেও গুড্ডু তাকে সামলে নিয়ে বলে , “ আরে ছেড়ে দে ভাই ওর ভুল হয়ে গেছে বলছে তো ! ”

“ না গুড্ডু তুই আমায় ছেড়ে দে | ওর মাথায় ভাঙবো এই ব্যাট | যদি কিছু হয়েছে ওকে আমি থানায় পাঠাবো নয়তো শেষ করে দেবো | "

" কি হচ্ছে বাবলু ? চলে এসো তুমি এদিকে | " বাবলুর বাবা চেঁচিয়ে উঠলো |

এদিকে ক্রিকেট ম্যাচ স্থগিত হয়ে গেল | মুন্না বাড়ি ফিরতে না ফিরতে তার বাড়ি পুলিশ এসে হাজির |

মুন্নার বাবা বললেন , “ কি ব্যাপার আপনি এখানে ? ”

“ আরে ত্রিপাঠী জি আপনার ছেলে এক একটা কান্ড করে বসে ! ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন বিরতিতে বল দিয়ে একজনের মাথায় মেরেছে এবং চিকিৎসায় তার কনকাশন দেখা দিয়েছে | কিছুক্ষণের মধ্যে কোমায় চলে যেতে পারে | ছেলেটির বাবা মা থানায় রিপোর্ট করেছে | "

“ এটা কি করেছিস মুন্না ? ”

“ বাবা ও কিছুনা মিসটেক ছিল | "

“ এত মিসটেক হয় কি করে ? বিশুদ্ধ মূর্খ কোথাকার ! ”

“ সরি বাবা | ”

কড়া চোখে তাকিয়ে মুন্নাকে ভেতরে যেতে বললেন অখন্ডানন্দ | তারপর হাসপাতালে ছেলেটির বাবা মার সাথে দেখা করতে গেলেন | ততক্ষণে ছেলেটি কোমায় চলে গেছে | ছেলের চিকিৎসার দায়ভার গ্রহণ করতে চাইলেও অখন্ডানন্দের কথা মত তারা পুলিশের কাছ থেকে কেস তুলে নিতে রাজি হলো না |

ছেলেটির হয়ে সাক্ষী দিলেন স্বয়ং গুড্ডু ও বাবলুর বাবা । পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে ব্যাট , হকি স্টিক , চেন নিয়ে প্রধান শিক্ষককে ধমক দিতে এলো মুন্না । 

" স্যার খামোখা কেন ঝুটঝামেলা করছেন ? ওর সব খরচা বাবা নেবে ... " কথা আটকে গেলো স্যারের হাতে মাসেল ফোলানো দেখে । মুঠো পাকিয়ে মুন্নার দিকে তেড়ে এসে এক ঘুষিতে নাকে মেরে মুন্নাকে তাড়ালেন তিনি ।

" ভালো করলেন না স্যার ! "

এদিকে ওই স্কুলের ক্লাস বন্ধ বেশ কিছুদিন ধরে । মুন্না অ্যারেস্ট হলো । ঠিক ওইদিন রাত্রে ওই ছেলেটি কোমা থেকে ফিরলো । গোটাদিন অখন্ডানন্দ নিজে দাঁড়িয়ে রইলেন হাসপাতালে । পুলিশের কাজে তিনি কোনো বাধা দেননি । ঠিক সন্ধ্যের দিকে ছেলেটির কেবিন থেকে বেরোনোর সময় খবর পেলেন মুন্না গ্রেফতার । স্কুল থেকেও তাকে সাসপেণ্ড করা হয়েছে । ঠিক এমন সময় ছেলেটির হাতে স্পন্দন দেখা গেলো । ডাক্তারকে ডাকলেন অখন্ডানন্দ । " গুড সাইজ মিস্টার ত্রিপাঠী । "

কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলেটি চোখ তুলে চাইলো । " কাকু মুন্নার কোনো দোষ নেই ! বড় উচ্ছৃঙ্খল এই যা ! যেমন তেমন বল নাচাতে গিয়েই এই অবস্থা । "

তখনই থানায় ফোন করলেন , " অফিসার ছেলেটির জ্ঞান ফিরেছে , বাবা মা কেস তুলে নিতে চান । "

" তবে তো ভালো । "

একবার প্রধান শিক্ষককে ফোন করলেন , " স্যার ক্ষমা করে দেবেন মুন্নাকে । ওকে পেটাবেন , বকবেন কিন্তু তাড়াবেন না । "

" হ্যাঁ শুনলাম ছেলেটির জ্ঞান ফিরেছে । ঠিকাছে ত্রিপাঠী বাবু আপনাকে সম্মান করি । ছেলেকে সামলে রাখুন । আসবে স্কুলে । "

" একটা জিনিস কি বলুন তো এই স্কুলে যে আসবে সে একদিন যাবে কিন্তু সময়ের আগে নয় , তা হলে সেটা আমার মর্জিমতো হবে । "

প্রায় ১ সপ্তাহ পর সেই অসমাপ্ত ম্যাচের শেষ ওভার । আজ পর্যন্ত মুন্না হারেনি । জেতার অবস্থায় এবারেও । ব্যাণ্ডেজ বাঁধা অবস্থায় ওই আহত ছেলেটি গ্যালারিতে । মুন্নার শেষ ওভার ।

দুটো বিশাল ছয় এলো গুড্ডুর ব্যাটে । গুড্ডুর চোখ তখন জ্বলছে । ফের একটা চার । পরের বলে একরান । ব্যাট এবার বাবলুর হাতে । একটা বাউন্সার কাঁধে লাগলো বাবলুর । ব্যাট হাত থেকে পড়ে স্টাম্পে হিট উইকেট । ম্যাচ ড্রন । থাম্বস আপ করলো বাবলু ।

" মুন্না এবারের মির্জাপুর হাইস্কুল টুর্নামেন্ট ট্রফি আমরা শেয়ার করে নেবো । কারোর হবে না , এতেই শান্ত থাক । " বললো গুড্ডু ।

হাসিমুখে গলা মেলালো গুড্ডু আর মুন্না ।

এবার আসি আমার পরিচয়ে । আমি বীণা ত্রিপাঠী । কোলকাতার এক প্রতিষ্ঠিত রাজনেতার অনুদানে এই স্কুল । আসলে আমাদের আদিবাড়ি মির্জাপুরে । আমার ছেলে মুন্না ছোটো থেকে বড় উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতো , তাকে সামলাতে ওই নেতার দ্বারস্থ হয়ে এই স্কুল গড়েছি । সে মালিকানা আছে আমার স্বামীর নামে কিন্তু চাইলেই হরফ করতে পারি । সেসব ডিটেইল পরে বলবো । ছেলেটাকে অনেকদিন দেখিনি , রাজনীতিতে এত্ত বিজি আজকাল হয়ে গেছি । পরে বাকি কথা হবে ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Fantasy