STORYMIRROR

Manab Mondal

Abstract Inspirational Thriller

4  

Manab Mondal

Abstract Inspirational Thriller

সুক্কুবাস

সুক্কুবাস

4 mins
426

আমার বাপি মামা তান্ত্রিক হওয়ায় পর থেকেই আমি তার সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন ভুতের কথা জানতে পেরেছি আপনা ভুত বিশ্বাস করুন না করুন। একটা বিষয় জেনে রাখুন আমাদের দেশের ভুত গুলো ভালো তারা মানুষের ক্ষতি করে না। একটু আধটু চুরি টুরি করে আর খুব বেশি হলে ভয় টয় দেখায়। তবে বিদেশী ভুতের ভালো নয় ওরা মানুষের ক্ষতি করে । তবে ভুতের যেহেতু পাসপোর্ট ভিসা লাগে না কখনো কখনো এরা এ দেশে চলে এসেও মানুষ ক্ষতি করে এদেশের ভুতেদের বদনাম করে।

আমাদের নিকট আত্মীয় শম্ভু দা ইউরোপে চাকুরী করে বেশ টাকা কামিয়ে ছিলো। কিন্তু সে কিছুতেই বিয়ে করতে চাইছিলো না। পরে সে বললো তার সাথে ইউরোপ থেকে একটা পেত্নী পিছু নিয়েছে। ইউরোপেই সে রাতের বেলায় সঙ্গম করতো। ও বেস মজা পেতো তাই এই অপুর্ব সুন্দরী পেত্নী যখন ওর সাথে ভারতে এলো তখন ও বাধা দেয়নি । কিন্তু শম্ভুদা দিনে দিনে দূর্বল হয়ে যাচ্ছে দেখে আমাদের সাহায্য চাইলো।

সুক্কুবাস হল মধ্যযুগীয় ইউরোপের একটি উপকথার প্রেত। এরা হল এক ধরণের অলৌকিক জীব যারা সাধারণত নারীরূপীই হয়। সুক্কুবাস-রা পুরুষদের স্বপ্নে এসে তাদের উত্তেজিত করে আর তারপর তাদের সঙ্গে সঙ্গম করে। বিভিন্ন ধর্মীয় পুঁথি অনুযায়ী, সুকুবাস-দের সাথে একাধিকবার সঙ্গম করলে পুরুষদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, আর এর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যদিও বর্তমানে কাহিনীতে এই সুক্কুবাস-দের দেখানো হয় অপরূপ সুন্দরী নারী হিসেবে, যদিও মধ্যযুগী কাহিনীতে এদের বর্ণনা করা আছে কুৎসিত রাক্ষসীর রূপে। এদের পুরুষদের বলা হয় ইঙ্ককুবাস।

সুক্কুবাস কথাটা এসেছে ল্যাটিন শব্দ 'সুকুবা' থেকে, যার মানে হল বেশ্যা। এই সুক্কুবাস-দের কথা প্রথম পাওয়া যায় ১৪৮৬ সালে প্রকাশিত বই 'ম্যালেউস ম্যালেফিকারাম'-এ। এই সময়, কোন পুরুষের উপর যৌন আক্রমণ হলে ধরে নেওয়া হত যে এর জন্য কোন সুক্কুবাস দায়ী। যদিও ক্ষণিকের আনন্দ হলেও সেই পুরুষদের কাছে সুক্কুবাস-র সাথে সঙ্গম মানে ছিল প্রচন্ড লজ্জার ব্যাপার। যেহেতু সুক্কুবাস-রা ইচ্ছাধারি হয়, তাই এদের বর্ণনাও বিভিন্ন কাহিনীতে বিভিন্ন রূপে দেখানো হয়েছে। কিছু কাহিনীতে এদের দেখতে মানুষের মানে মেয়েদের মত আবার অন্য কিছু কাহিনীতে এদের রূপ হয় কিছুটা ভয়ঙ্কর। কখনো দেখানো হয়েছে ল্যাজ, সিং আর ডানা নিয়ে। আবার কিছু কাহিনীতে এদের সুন্দরী মেয়ে রূপে দেখানো হলেও , তার সাথে এদের ল্যাজ, সিং কিংবা ডানাও থাকে। তা, এদের বাকি বর্ণনা যেরকমই হোক, সুক্কুবাস-দের বাহ্যিক সৌন্দর্য চোখে পড়ার মত। তবে এরা মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য মাঝে মাঝে নিজেদের কুৎসিত রূপ ধরে। যদিও, সাধারণ বিশ্বাস অনুযায়ী, সুক্কুবাস-রা সাধারণত দেখতে হয় খুবই সুন্দরী আর এদের পরনেও থাকে বেশ সুন্দর পোশাক। যদিও এদের বেশিরভাগ পোশাকই হয় যৌন উত্তেজক। সুক্কুবাস-রা আচরণ করে মূলত তার যৌনতার উপর ভিত্তি করে। এদের প্রকৃতি ধূর্ত আর ক্ষয়িষ্ণু হয়। আর এরা সর্বক্ষণ খুঁজতে থাকে তাদের পরবর্তী শিকার। তবে এদের শিকার করার মধ্যে সামান্য পার্থক্য থাকে। যেমন একদল সুক্কুবাস সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে ভালোবাসে। এরা লুকিয়ে থাকে এমন সব স্থানে যেখানে সাধারণত মানুষ যায় না। তবে মাঝে মাঝে রাতের বেলা এরা বের হয় শিকারে।

শম্ভু দা আমাদের কথা বিশ্বাস করতে চাইছিলো না। আসলে তার ধারনা লিজা আসলে বারড্যান্সা ছিল বলেই তাকে আমরা সুক্কুবাস বলে বর্ণনা করতে চাইছি। শেষমেষ তারাপিঠ একটা তাবিজ দায়ি লিজা সাথে শম্ভুদার বিয়ে দেওয়া হলো। তাবিজ প্রভাবে লিজা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে রাজি হলো না। শম্ভু দা ওর আচরণ পরিবর্তন দেখে আমাদের কথাকে সমর্থন করলো। কারণ শারীরিক ভাবে সে নিজেকে সুস্থ মনে করছিল। আমরা বললাম লিজাকে স্বাধীন থাকতে দিতে। দিন সাতেক রাত শম্ভুদা ঘুমিয়ে পড়লেই রাতের বেলায় লিজা বেরিয়ে যেতো। কারণ এর মধ্যে পাড়ায় দুই একটা বেচেলর ছেলের সাথে সে বন্ধুত্ব করেছে। মানে নতুন শিকার যোগাড় করে নিয়েছে সে।

কিন্তু লিজাকে আর কারো ক্ষতি করতে দেওয়া যাবে না। আলোচনার একটা ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। সুক্কুবাস মানে লিজাকে প্রলুব্ধ করতে হবে কোন পবিত্র শরীর সাথে যৌন সম্পর্ক করতে। তারপর তাকে রাধাকুন্ডের এর পবিত্র জলে ভিজিয়ে দিলেই সে নিস্ক্রিয় হয়ে যাবে। এবং এই ফাঁদের জন্য আমাকেই বাছা হলো।

লিজাকে প্রলুব্ধ করতে। আমার বেশি সময় লাগলো না। কিন্তু ও আমাকে প্রথম চুম্বনের পর আলিঙ্গন করে যখন বললো " আমি জানি তুই আমাকে ফাঁদে ফেলেছিস। আমি তোকে ছাড়বোনা"

তখন আমি আজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম কারণ আমি দেখছিলাম ওর ইঁদুর দাঁতের মতো সুন্দর দাঁতটা মূলো মতো হয়ে যাচ্ছে ‌ । চুল ভেদ করে দুইটো সিং উঠছে। যাইহোক ঘুম ভাঙ্গার পর দেখলাম। একটা চিনামাটির ছোট্ট পুতুল পরিনত করা হয়েছে লিজাকে। শম্ভু দা ঘরে সেইদিন ভালো করে ভুড়িভোজ করে , বাড়ি ফিরে এলাম আমরা।



ଏହି ବିଷୟବସ୍ତୁକୁ ମୂଲ୍ୟାଙ୍କନ କରନ୍ତୁ
ଲଗ୍ ଇନ୍

Similar bengali story from Abstract