STORYMIRROR

Atrayee Sarkar

Comedy Romance Inspirational

3  

Atrayee Sarkar

Comedy Romance Inspirational

সন্তানের দুষ্টুমি (শেষ পর্ব- ২

সন্তানের দুষ্টুমি (শেষ পর্ব- ২

2 mins
252

দেখতে দেখতে ৯ মাস কেটে গেল। 

মিষ্টি,, পরির জন্ম হয়েছে । সবাই আনন্দে ভরে উঠছে । 


শ্রীলতাদেবী ওনার স্বামীর ছবির সামনে গিয়ে বলেন--" তোমার দিদিভাই এসছে । মিষ্টি ফুটফুটে।"


মিষ্টি পরির, অন্যপ্রাশোন, ওদের নিজেদের বাড়িতেই হয়। 

চেনাজানা, কিছু মানুষকে ডেকে অন্যপ্রাশোন করা হয়, আনন্দের সঙ্গে।


এক মাস বাদে,,, প্রতাপ শ্রীলতাদেবীকে বলে--"নতুন ফ্ল্যাট কিনেছি মা।"


শ্রীলতাদেবী--" চল তাহলে, ওখানে গিয়ে থাকি। এই বাড়িটাকে কি করবি??"


প্রতাপ--" ভাবছি ভাড়া দেব, কম টাকায়।"


শ্রীলতাদেবী--" দেখ পারিস কিনা । করা গেলে তো ভালোই হয়।"


প্রতাপ--" তবে মা আমি একটা কথা বলতে চাই।"


শ্রীলতাদেবী--" কি বলতে চাস,, বল।

অতো ভাববার কি হয়েছে??"


প্রতাপ--" মা,, ফ্ল্যাটটা, ২ bed রুমের। 

তোমার নাতনি বড়ো হলে ওর তো একটা পড়ার ঘর দরকার পরবে,,, আমরা তাই চাই তুমি বৃদ্ধাশ্রমে থাক ।"



কথাটা শুনে,, শ্রীলতাদেবীর চোখ ছলছল করছিল। যে উনি কি ভেবেছিলেন, আর ছেলে কি বলছে। 

হৃদয়টা ওনার যন্ত্রণায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল ।

মনের মধ্যে যেন ঝড় বইছিল।


হারিয়েই যাচ্ছিলেন উনি ইতিহাসের মধ্যে।


ওই প্রতাপকে খুঁজছিলেন,,, যে মা অন্ত প্রাণ ছিল।



প্রতাপের বাবা, পরিতোষবাবুর ট্রান্সফার্ড ছিলেন।

শনিবার রাতে আসতেন কখনো,,, আর রবিবার বিকেলে চলে যেতেন।

শ্রীলতাদেবীই প্রতাপকে বড়ো করেছে।


প্রতাপ যখন ছোট ছিল, তখন মা, বাবা, দুজনেই প্রতাপকে কোলে নিয়ে আদর করতেন।


প্রতাপের সব মনের ইচ্ছে শ্রীলতাদেবী পুর্ণ করে দিতেন। 

প্রতাপ, তাই নিজের মাকে খুবই ভালোবাসত। 


শ্রীলতাদেবীর মনে হচ্ছিল " পুজোর সময় জামা কিনে দিতাম,, জন্মদিনে বন্ধুদের ডেকে জন্মদিন পালন করতাম, পুজোর সময় বাজি কিনে দিতাম,, প্রতাপ সব ভুলে গেল??"


প্রতাপ--" কি হলো মা?? কিছু বললে না??"


শ্রীলতাদেবী--" তুই যখন বলছিস, তাহলে চল। সত্যিই তো, দিদিভাইয়ের ঘর লাগবে ভবিষ্যতে।"


শ্রীলতাদেবীর চোখ দিয়ে জল পরছিল।


কিছুক্ষণ বাদে প্রতাপ এসে বলে--" মা, তুমি তোমার সব জামা কাপড়, সবকিছু ব্যাগটায় ঢুকিয়ে নিয়েছ তো??"


শ্রীলতাদেবী চোখ মুছে নিয়ে বলেন--" হ্যা, নিয়ে নিয়েছি সব। চল।"


প্রতাপ--" গাড়িতে উঠে পর ।"


শ্রীলতাদেবীর কাছে আর কোনো শব্দ ছিল না বলার। 

জিজ্ঞেস ও করেননি তাই, ছেলে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। 


যেতে যেতে,, শ্রীলতাদেবী দেখেন গাড়িটা এক জায়গায় থামে।

তাও উনি জিজ্ঞেস করেননি কোথায় বৃদ্ধাশ্রম। হৃদয়টা যে ওনার কুলকুল করে কাঁদছিল ।


প্রকাশ--" লিফ্টে ওঠ ।"


শ্রীলতাদেবী কিছু না বলেই উঠে পরেন।


প্রতাপ--" নেমে আসো।"


উনি নেমেও এলেন।


তারপর উনি অবাক হয়ে জান, কিছু কথা শুনে ।


আরাধনা--" এবার ভাবনা থেকে বেরোয় মা। আর কতো ভাববে??"


শ্রীলতাদেবী অবাক হয়ে যান,,, ছেলে বৃদ্ধাশ্রম বলে কোথায় নিয়ে এসছে ।


আরাধনা--" Welcome মা । আমাদের নতুন ফ্ল্যাট।"


শ্রীলতাদেবী দেখেন প্রতাপ হাসছে ।

প্রতাপ--" আচ্ছা, মা তুমি ভাবতেও পারলে, আমি তোমায় বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যাব?? 

তুমি আমায় একদম ভুলে গেছ ।"


শ্রীলতাদেবী--" না, ভুলিনি।

তুই আগেও যেমন বাঁদর ছিলিস,,, আজও আছিস। এই করত আমার সাথে। উল্টো পাল্টা বলে,, তারপর surprise। 

আর তুই ই বা কি আরাধনা?"


আরাধনা--" মা, তুমি ই তো চাকরি করতে মনে জোর দিতে । আমি এতো নিষ্ঠুর হতে পারি??

তাহলে বড়ো হয়ে,, আপনার নাতনি আমায় কথা শুনিয়ে শেষ করে দিত ।"


প্রতাপ--" ফ্ল্যাটটা, দুজনে মিলে কিনেছি ।


 কেক এনেছি মা,, তুমি কাট । তারপর আমাদের খাইয়ো। বাবার ছবিও আছে।"


শ্রীলতাদেবী ওনার স্বামী পরিতোষবাবুর ছবির দিকে তাকিয়ে বলেন--" দেখেছ, তোমার ছেলেটাকে? যা ছিল তাই রয়ে গেছে।"


কেক কেটে,, ফটো তুলে আনন্দ করল, সবাই মিলে।।




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy