ডায়েট কন্ট্রোল
ডায়েট কন্ট্রোল
Lockdown চলছে,,, তাই রমেনবাবু ঘর বন্দি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে চা খাচ্ছিলেন। হঠাত দেখেন উল্টো দিকের ফ্ল্যাটের একজন মহিলা ওনার দিকে হাত নাড়াচ্ছে। ভদ্রতার খাতিরে উনিও মহিলাটার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ান। আবারো মহিলাটাকে হাত নাড়াতে দেখে উনি হাত নাড়াতে থাকেন।
তারপরেই পেছন থেকে ওনার স্ত্রী রমা এসে বলেন --" অতো হাত নাড়ানোর দরকার নেই। চশমাটা পরো। উনি জানলা পরিষ্কার করছেন, হাত নাড়াচ্ছেন না। বুড়ো বয়সে গলতে শুরু করে দিয়েছ নাকি?"
রমেনবাবু খুব মোটা গ্লাসের চশমা পরেন। চশমা ছাড়া উনি কিছু দেখতেও পারেন না ভালো করে।
চশমা পরে রমেনবাবু দেখেন,,, সত্যিই তো,, মহিলাটা জানলা পরিষ্কার করে, বন্ধ করে দিল জানলা।
রমেনবাবু বলেন -"আমি মোটেও বুড়ো নই রমা। আমার মাত্র ৬০ বছর বয়স। আর আমি এক ফোটাও গলিনি। ৮৫ kg ভেয়েট ছিল,,, এখনও তাই আছে।"
রমা-" বাবা,, এমন ভাবে কথা বলছ যেন তোমার ৬০ বছর নয়, ৩০ বছর বয়স।
সে আমি জানি তুমি একটুও রোগা হওনি। যেমন মোটকা ছিলে তেমনই আছ?"
রমেনবাবু--" চুপ কর। হাত নাড়িয়েছি বলে তো মনে হচ্ছে তোমার গা হাত পা পুরো জ্বলছে।"
রমা--" অন্য মহিলার দিকে তাকিয়ে আছ আবার হাত নাড়িয়ে তার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইছ দেখলে কি আমার আনন্দ লাগবে বলে তোমার মনে হয়?? বুড়ো বয়সে নাটক।"
রমেনবাবু--" এই শোন আমি জীবনে কোনদিনও নাটক করিনি।"
রমা--" হাত নাড়াচ্ছিলে তো। ইচ্ছে না থাকলে কেউ কিছু করে না। তোমার ইচ্ছেই হয়েছিল ওই মহিলাটার সাথে বন্ধুত্ব করার। আসলে আমাকে তো তোমার এখন আর ভাল লাগে না।"
রমেনবাবু--" একদম ঠিক বলেছ জান। ইচ্ছে না থাকলে কিছু হয় না। জোর করে ঝগড়া করার ইচ্ছে না থাকলে, তুমি ঝগড়া করতে না। এটাই তো তোমার ইচ্ছে ছিল।"
রমা--" আলফাল বলবে না আমার নামে। আর রোগা হওয়ার চেষ্টা কর। দেখেছ,, আর্টিস্টদের কত ফিট বডি। কোন অসুখ নেই। বাতের ব্যথা নেই। ডায়েট কন্ট্রোল কর।"
রমেনবাবু--" তা,, আমি কি আর্টিস্ট নাকি?আর্টিস্ট হবও না। আর্টিস্টদের খুব দুঃখ, এত টাকা কামিয়েও,, পেট ভরে খেতে পারে না। বেচারা।
ওসব ডায়েট কন্ট্রোল আমার দ্বারা হবে না। উফফ!!
ভাত খেয়ো না, ভাজা খেয়োনা। নিকুচি করেছে। "
রমা--" রোগা হওয়া একটু দরকার। "
রমেনবাবু--" এই শোন,,, তুমি নিজে জত পার রোগা হও,,, আমি পারব না। রক্ষে কর।"
রমা-'" মিষ্টি খাওয়া তো বন্ধ করতে পারো। হাগুরের মতন মিষ্টি খাও। রোজ রোজ কেউ মিষ্টি খায়?"
রমেনবাবু--" খাওয়ার পর ৩ টে রসগোল্লা না খেলে আমার পেট ভরে না।"
রমা--" এই বয়সে এতো মিষ্টি খাওয়া উচিত না। সুগার বেড়ে যেতে পারে।"
রমেনবাবু--" এমন ভাবে কথা বলছ রমা,, যেন মনে হচ্ছে তুমি ডাক্তার। "
রমা--" এইটা সবাই জানে রমেন। "
রমেনবাবু--" সে তো ডাক্তার ও এই কথা জানে। গিয়ে দেখ ও ও মিষ্টি খায়।"
রমা--" তুমি না একটা পাগল। "
রমেনবাবু--" এই আমার পা টা মোটেও গোল নয়। আমার পা সোজা। "
রমা--" এই থামতো। বিরক্তিকর।"
রমেনবাবু--" আমি তো থেমেই ছিলাম,,, তুমিই তো কথা বলা শুরু করলে।"
রমা--" সত্যি ই ই ই ই,,, তুমি না কি।"
রমেনবাবু--" এই আমি মানুষ। আর হ্যা একদম সত্যি কথা গো,,,,তুমিই শুরু করেছিলে প্রথমে কথা বলা।"