সম্বন্ধ
সম্বন্ধ
ফেসবুকের দৌলতে জয়বন্তাবাঈ, খুশিবেন আর সাথী বসু ভারী ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠেছেন। সারাদিনে বারকয়েক স্টেটাস আপডেট আর চ্যাট চলে নিয়মিত। ভাষা-দূরত্বের গন্ডী টপকে তিনজনে হাঁড়ি-হেঁশেল, শাড়ি-গয়না, শ্বশুরবাড়ি-বাপেরবাড়িতেও স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেন। একে অপরের প্রিয় বন্ধু।
ইদানীং খুশিবেনের নাতির বিয়ের ঘটকালিও চলছে ঐ ফেসবুক মারফৎই। এইপর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিলো, গোল বাধলো খুশিবেনের কোলকাতা আসার খবরে। সপরিবারে খুশিবেন কোলকাতা আসছেন, নাতির জন্য বাংলাপ্রবাসী গুজরাটী পাত্রী দেখতে। সাথী বসুকে অনুরোধ করেছেন সঙ্গে সাথে থাকতে। কথা পাকা হলেই জয়বন্তাবাঈকেও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ডাকা হবে।
মহাবিপাকে সাথী বসু, সাথী (আসলে পায়রাডাঙার সতী) এখন কোলকাতার ফার্ণরোডে ফ্ল্যাট কোথা থেকে জোগাড় করবেন? অনেক ভাবনাচিন্তার পরে সাথী বসু মহাফাঁপর থেকে মুক্তির পথ বের করলেন। অতঃপর স্টেটাস আপডেট... মেয়ের কাছে স্টেটসে যেতে হচ্ছে মাস ছয়েকের জন্য। ভারী বাঁচা বাঁচলেন, বাব্বাহ্!
জয়বন্তাবাঈও খুশিবেনের খুশিতে সামিল হতে পারবেন না, কারণ ট্রিটমেন্টটা এবার ছেলেরা সিঙ্গাপুরে রেখেই করাবে, কম করেও মাস চারেক তো লেগেই যাবে! স্টেটাস আপডেট দিয়ে জয়বন্তাবাঈ (কলেজ স্ট্রীটের জয়ন্ত বটব্যাল)-এর ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো। বাপরে বাপ, বাঁচা গেলো কোনোরকমে!
খুশিবেন ভারী অখুশি! কি গেরো, অর্থ-বিত্তে সম্পন্ন প্রিয় বান্ধবীদের অতিথি হওয়ার সুযোগে বঞ্চিত। আসলে খুশিবেন (টিটাগড়ের খুদি গাঁটকাটা)-এর সিঁদ না কেটে কিছু হাতানোর এমন সুন্দর মওকাটা মাঠে মারা পড়লো যে। এতো বন্ধুত্ব পাতিয়ে কী হোলো?
হায় হায় রে বন্ধুত্ব! হায় প্রিয় বন্ধু! হায় অন্তর্জাল... হায় মুখপুস্তিকা... হায় জুকেরবার্গ!