শিবের Gym যাওয়া
শিবের Gym যাওয়া
ওর ছেলেমেয়েগুলো চাকুরী পাওয়ার পরেও, বেচারা শিব ঠাকুরের মনে একটুও শান্তি নেই। শিব পার্বতীর সংসারে এখন ঝগড়াঝাঁটি চলছে। বিষয়টি জন্য যদিও আসলে দায়ি পার্বতী নিজে। মর্তলোকে সবশিক্ষা অভিযানের অঙ্গনবাড়ির কর্মীরা যেমন ছেলেমেয়েদের খাবার গুলো , চুরি করে বাড়িতে নিয়ে যায়। তেমনি পেটের দায়ে দূর্গা মানে অর্ন্নপুন্না যখন হোটলে কাজ করতো তখন মা শিব ঠাকুর এর জন্য ভালো ভালো খাবার পার্সেল করে নিয়ে যেতো কৈলাসে। লক্ষী সরস্বতী , কার্তিকরা বরাবরই স্বাস্থ্য সচেতন।
ওরা খাবারের একটা দানা ও মুখে তুলতো না।
সব খেতো শিব ঠাকুর আর গনেশ। আপনার তো বলেন শিব ঠাকুর তিনটে বেলপাতা আর জল পেলেই সন্তুষ্ট । তাই দুটো নকুল দানা বেশি কিছুই তো দেন না । শিব ঠাকুর দূর্গার আনা খাবার গুলো অধিকাংশটা খেয়ে নিতো।। তাই সে কাঁঠাল বা কুমড়ার মতো একটি বিশাল ভুঁড়ির অধিকারী হলেন।
এখান এই ভুঁড়ি শিব ঠাকুরের বিপত্তির কারণ। এই ভুঁড়ি নিয়ে যতো বিবাদ । দূর্গা , সরস্বতী, কার্তিক , লক্ষীর ফরমান ভুড়ি কমাতে হবে। কারণ তারা চায় শিব ঠাকুর তাদের সাথে মর্ত আসুক ঘুরতে। কিন্তু এই ভুড়ির জন্য তাকে নিয়ে আসতে তারা লজ্জা পায়। কারণ এখন ভুড়িটা ঠিক স্টাটাস এর সিম্বল নয়। বরং gym যাওয়াটা এখনকার ট্রেন্ড।
গনেশ টা কাজের ব্যস্ততার অজুহাতে তেমন gym যায় না। তবে শিবের থেকে সে সিরিয়াস। ছুটির দিন গুলোতে কাউকে বলতে হয়না ও gym গিয়ে ঘন্টাখানিক ঘাম ঝড়িয়ে আসে। কিন্তু শিবে বিপদ সারাজীবন তো চাকুরী বাকুরি করলো না। এখনতো বয়েস হয়েছে যে চাকুরী খোঁজার অজুহাতে এখানে ওখানে ঘোরাঘুরি করবে সেটার উপায় নেই। সুগার নেই তবু সকাল বেলায় উচ্ছের রস খেয়ে তাকে gym যেতে হয়। জলখাবার গরু ছাগলের মতো ঘাস পাতা খেতে হয়। যাকে তোমরা সেলাভ বলো। পেটুক শিবের জীবনটা অতিষ্ঠ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য সচেতন ডাইড চার্ট। চব্য চস্য দূরে থাক সিদ্ধ খাবারে কাঁচা নুনুটা নিতে দেয় না দূর্গা ঠাকুর।। আচ্ছা না খেলে সু স্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন কোন যুক্তিতে সেটা একটু আপনার বলতে পারবেন?
তাহলেতো পৃথিবীর গরীব মানুষেরা সবচেয়ে বেশি সুস্বাস্থ্য এর অধীকারী হতেন। কারণ অভাবের কারণে তারা আধপেটা খেয়েই থাকে। তার ক্যালোরি মেপে খাবার দাবার খায় না। এমনিতেই ওদের প্রোটিন ট্রোটিন , ফ্যাট ট্যাট জোটে না। শিব এসব বলেই শিবকে অশিক্ষিত বলে অপমান করে সবাই। আপনি বলবেন শিব অশিক্ষিত কি করে আমি বুঝতে পারলাম।
সব দেবতার ছোট বেলার কথা জানি। কৃষ্ণ, রাম বললাম, অর্জুন হনুমান সবাই ছোট বেলায় পাঠশালা গেছে দেখেছি। শুধুমাত্র ব্রম্ভা আর শিবের শৈশবের কথা আমরা জানি না। কিন্তু ব্রম্ভা সবকিছু সৃষ্টি করে মানে একজন বৈজ্ঞানিক হয়েছেন তখন তো শিক্ষিত নিশ্চিত। কিন্তু শিব একটা ভালো কেন নুন্যতম চাকুরী যোগাড় করতে পারলো না তার মানে সে নিশ্চিত গন্ড মূর্খ। আর শিক্ষত মানুষরা কখনো যেখানে সেখানে নেশা ভান করেন না। তাছাড়া ব্রম্ভা বৃদ্ধ হয়েও দারুন ফিট। নায়য়নের কথাতো ছেড়েই দাও। এই তিন জন মধ্যে তো একমাত্র ওরই ভুড়ি আছে। এমনি, সারা দেবতা লোকে ওর মতো বিচ্ছিরি ভুড়ি কারো নেই। তাই সবার মতো নয় সবার চেয়ে ওর বেশি gym যাওয়া জরুরি বলে সবাই মনে করে। আর দূর্গাতো ওর কান মাথা খেয়ে ফেলে বকাঝকা দিয়ে দিয়ে।
শিব ঠাকুর এক মাত্র শান্তিতে থাকে দূর্গা তখন দূর্গা পূজার সময় মর্তলোকে আসে তখন। কারণ ঐ সময় হোম ডেলিভারী সার্ভিস ওর্ডার করে ইটালিয়ান পিজা থেকে চাইনিজ নুভুল সব খায় ও চুটিয়ে আড্ডা নেশাভান করে সাঙপাঙ নিয়ে। কিন্তু এখন আবার মুশকিল হয়ে গেছে মর্ত লোকে পশুপ্রেমীরা নীলকন্ঠ পাখি উড়েনো নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এই নীলকন্ঠ পাখি আগে থেকে গিয়ে খবর দিলে। শিব নিজেকে সামলে নিতো। এখন সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না নীলকন্ঠ পাখি না থাকায়।
