শহুরে কথা
শহুরে কথা
স্টিলের ছুরি টা আমি নিয়ে নিলাম। আমাদের এতোদিন এর লুকানো প্রেমটা সবার সামনে চলে এলো আজ। কিন্তু কি করবো! ওর জীবনটার চেয়ে বড়ো কিছু তো নেই। বাড়ি থেকে লুকিয়ে এসেছি আমরা এই অচেনা শহরে নতুন করে বাঁচার জন্য , আমাদের ভালোবাসাটা বাঁচানোর স্বপ্ন নিয়ে।
আমি কোন দিন বলি নি আমি ওকে ভালবাসি। মধ্যবিত্ত মেধাবী ছাত্র আমি। টিউশানি করে হাতখরচা চালিয়ে সরকারী চাকুরী পরীক্ষা দিয়ে দিয়ে জীবনের অনেক কটা বছর নষ্ট করেছি। অষ্টমিতে অঞ্জলী কিংবা সরস্বতী পূজার অঞ্জলীতে অনেক চেষ্টা করেও কোন দিন ওর পাশে দাঁড়ানোর সাহস করিনি আমি। হুঁ ওর উচ্চ মাধ্যমিক, কিংবা মাধ্যমিক সময় নোট বুক , রেফারেন্স বুক ওকে দিতাম। কিন্তু কোনদিন পাতার ভিতরে মনের কথা লিখে একটা কবিতা কিংবা চিঠি ও পাঠাই নি ওর জন্য।
তবু যেদিন ওকে দেখতে এলো, রঞ্জন বাবু ।সেইদিন ওদের অতিথি আপ্যায়ন দায়িত্ব টা পড়লো আমার ওপর। বুকে পাথর চাপা দিয়ে হাঁসি মুখে কাজ করছিলাম। কোথায় আমি আর কোথায় পাত্র। হঠাৎ ও সবার অলক্ষ্যে হাত ধরে নিয়ে গেলো ছাঁদে। ওর সোজাসুজি প্রশ্ন আমি কি ওকে ভালবাসি? কিছু উঁত্তর দিতে পারলাম না , চোখের জল দেখে ও বুঝে নিলো আমার মনের কথা।
বিয়েটা ক্যান্সেল করে আমরা চলে এলাম শহরে একটা উন্নত জীবনের সন্ধানে। ও যদিও ডাক্তারিতে ভর্তি হলো। আমি একটি পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে চাকরি সাথে গবেষণা কাজ করতে শুরু করলাম। মোটামুটি কিছু টা সময়ের পর আমরা ঝোলে ভাতে দিন গুজরান করতে পারো এমনি একটা স্বপ্ন নিয়ে , জীবন টা চলছিলো বেশ।
আজ সব তালগোল পাকিয়ে গেলো। ওর গল্পটা কেউ বিশ্বাস করবে? আমি ভাবলাম এটা আমাদের দূর ভাগ্য। রঞ্জন বাবু শুধু সফল ডাক্তার নন , সফল ব্যবসায়ী ও। উনি বুঝতে পেরেছিলেন, চড়া দামে মানুষ তার জীবন কেনে না, জীবনকে ভালো সবকিছু করা সামগ্রী। তাই চিকিৎসা সাথে সাথে একই কমপ্লেক্স ও শিক্ষা বিক্রি করতে হাসপাতালের, সাথে স্কুল কলেজ খুলে বসলো। কাছাকাছি থাকার লোভেই আমরা যোগ দিলাম ওর প্রতিষ্ঠানে।
ফ্ল্যাস ব্যাকে চলুন ও কি বলছে দেখে নেওয়া যাক।
" না স্যার না না না এমন করবেন না স্যার" বিনিত নিবেন করছি আমি। কিন্তু আমার কোন চিৎকার ডক্টর রঞ্জন চৌধুরী শুনলেই না। ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন তিনি আরো বেশি প্রত্যাখানের অপমানে দগ্ধ তিনি। এই প্রাইভেট নার্সিংহোমের আমার মতো একচ্ছত্র অধিপতি কাছে মেয়েরা বিনোদন মাত্র । একদিকে প্রসিদ্ধ চিকিৎসক আরেকদিকে এমনই ঘৃণ্য রূপ সবাই জানা ! অনেক মেয়ের সাথেই এমন করেছেন কিন্তু কেউ ভয়ে মুখ খোলে না, কেউবা আপোষ করে উন্নতি করে। অন্য কিছু হলেউনি তাহলে কেরিয়ার শেষ করে দেবেন। নার্স রিয়ার আত্মহত্যা ঘটনা তো কারো অজানা নয়। উনি ক্ষমতার অধিকারী তাই সমস্ত কিছুই ধামাচাপা পড়ে গেছে । কোনো সুবিচার পায়নি রিয়া কারণ তদন্ত এগোয় নি!
আমার গ্রামেই ছিলো রঞ্জন দের আদি বাড়ি। তাই এক সময় ওর সাথে আমার বিয়ে ও হয়। ডাক্তারির ভালো ফল করায়। রঞ্জন বাবু জুনিয়র হাউস ফিজিশিয়ান হিসেবে এই নার্সিংহোমে কাজ জয়েন করতে বলেন । আমি ওনার চরিত্র সম্পর্কে কানাঘুষো শুনেছিলাম অনেক। কিন্তু বিশ্বাস হয় নি। কারণ উনি আমার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করে নি। কাল মানবের সাথে আমাকে করিডোরে কথা বলতে দেখে উনি আজ আমাকে দেখেছিলেন। মানব আমার সেই লুকানো প্রেম জেনে, হঠাৎ কেমন বদলে গিয়ে আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে শুরু করলো । ঠেলে ধাক্কিয়ে উনি আমাকে ওনার চেম্বারের সোফার উপর ফেলে দিয়েছেন। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ আর ভেতরের আওয়াজ বাইরে যায় না। আমি ভয় আর বিস্ময়ে নিজের নার্ভের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছি। রঞ্জন ঝুঁকে পড়ছেন শরীরের উপর।
হঠাৎ দেওয়ালের গায়ে লাগানো এক নারীর তৈলচিত্র থেকে একটা হালকা আভা যেন বেরিয়ে এলো। কুণাল বাবু তখন অত কিছু দেখার মত অবস্থায় ছিলেন না! একটা স্টিলের ছুরি হাতে ছিলো মেয়েটির। এক প্রেত সমান দৃষ্টি তার চোখে। আমি ভয় পাই । কারণ চূড়ান্ত ভয়ের কিছু হতেই চলেছিল আমার সাথে । এর চেয়ে বেশি ক্ষতি আর কি বা হবে?
তখন মেয়েটির হাতের ছুরি বেমালুম গেঁথে গেল রঞ্জন পিঠে বুকে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটলো। উনি আর্তনাদ করতে থাকলেন। আর সেই অলৌকিক নারী তখন হাসছে বলল " আমায় আত্মহত্যা করতে হয়েছিল নরাধম কিন্তু আর কোনো মেয়ের সর্বনাশ করতে দেব না সেদিনই ঠিক করে নিয়ে ছিলাম। যাও তুমি এ ঘর ছেড়ে চলে যাও!" "
পুলিশ কখনো ওর কথা বিশ্বাস করবে না। আমি তাই ওই ছুরি আমার হাতে নিয়ে , বললাম আমি রঞ্জন বাবু কে খুন করেছি ওকে বাঁচা বার জন্য।
পুলিশ যদিও দুই জন কে ই থানায় নিয়ে যাবে বলছিলো। হঠাৎ চৌধুরী ম্যাডামের ফোনে চলে গেলো ওরা। উনার জন্য অপেক্ষা করলাম আমরা।
উনার অফিসে। উনি এলেন খুব নির্লিপ্ত উনি। শিক্ষিত মহিলা। ঘরে ঢুকে উনি জিগ্গেস করলেন "তোমরা এখানে এখনো বসে কেন নববর্ষ উৎসবের নাটক রিয়াসালে যাবে না, আমার একটু দেরি হয়ে গেলো রঞ্জন এর বডিটা নিয়ে কিছু ফর্মালিটি ছিলো তাই।"
আমি" সরি" বলতে যাচ্ছিলাম। উনি বললো " না কোন সরি বলার দরকার নেই। ভুত প্রেতে গল্পটা না বিশ্বাস করলে, মৌপ্রিয়া কোন দোষ ছিলো না। আমি চাই এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হোক। কারণ ধষর্ণ করতে গিয়ে রঞ্জন খুণ হয়েছে এ কথা লোকে জানুক। Just wash room পড়ে গিয়ে মারা গেছে এটা খবর হয়েছে। যাইহোক নববর্ষ উৎসব হবে , আর আমি চাই ঐদিন তোমরা তোমাদের বিয়ে দিনটাও আমাদের জানাবে। নতুন বছরে নতুন করে জীবন টা শুরু করো তোমার আমার শুভেচ্ছা রইল।
স্টিলের ছুরি টা আমি নিয়ে নিলাম। আমাদের এতোদিন এর লুকানো প্রেমটা সবার সামনে চলে এলো আজ। কিন্তু কি করবো! ওর জীবনটার চেয়ে বড়ো কিছু তো নেই। বাড়ি থেকে লুকিয়ে এসেছি আমরা এই অচেনা শহরে নতুন করে বাঁচার জন্য , আমাদের ভালোবাসাটা বাঁচানোর স্বপ্ন নিয়ে।
আমি কোন দিন বলি নি আমি ওকে ভালবাসি। মধ্যবিত্ত মেধাবী ছাত্র আমি। টিউশানি করে হাতখরচা চালিয়ে সরকারী চাকুরী পরীক্ষা দিয়ে দিয়ে জীবনের অনেক কটা বছর নষ্ট করেছি। অষ্টমিতে অঞ্জলী কিংবা সরস্বতী পূজার অঞ্জলীতে অনেক চেষ্টা করেও কোন দিন ওর পাশে দাঁড়ানোর সাহস করিনি আমি। হুঁ ওর উচ্চ মাধ্যমিক, কিংবা মাধ্যমিক সময় নোট বুক , রেফারেন্স বুক ওকে দিতাম। কিন্তু কোনদিন পাতার ভিতরে মনের কথা লিখে একটা কবিতা কিংবা চিঠি ও পাঠাই নি ওর জন্য।
তবু যেদিন ওকে দেখতে এলো, রঞ্জন বাবু ।সেইদিন ওদের অতিথি আপ্যায়ন দায়িত্ব টা পড়লো আমার ওপর। বুকে পাথর চাপা দিয়ে হাঁসি মুখে কাজ করছিলাম। কোথায় আমি আর কোথায় পাত্র। হঠাৎ ও সবার অলক্ষ্যে হাত ধরে নিয়ে গেলো ছাঁদে। ওর সোজাসুজি প্রশ্ন আমি কি ওকে ভালবাসি? কিছু উঁত্তর দিতে পারলাম না , চোখের জল দেখে ও বুঝে নিলো আমার মনের কথা।
বিয়েটা ক্যান্সেল করে আমরা চলে এলাম শহরে একটা উন্নত জীবনের সন্ধানে। ও যদিও ডাক্তারিতে ভর্তি হলো। আমি একটি পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে চাকরি সাথে গবেষণা কাজ করতে শুরু করলাম। মোটামুটি কিছু টা সময়ের পর আমরা ঝোলে ভাতে দিন গুজরান করতে পারো এমনি একটা স্বপ্ন নিয়ে , জীবন টা চলছিলো বেশ।
আজ সব তালগোল পাকিয়ে গেলো। ওর গল্পটা কেউ বিশ্বাস করবে? আমি ভাবলাম এটা আমাদের দূর ভাগ্য। রঞ্জন বাবু শুধু সফল ডাক্তার নন , সফল ব্যবসায়ী ও। উনি বুঝতে পেরেছিলেন, চড়া দামে মানুষ তার জীবন কেনে না, জীবনকে ভালো সবকিছু করা সামগ্রী। তাই চিকিৎসা সাথে সাথে একই কমপ্লেক্স ও শিক্ষা বিক্রি করতে হাসপাতালের, সাথে স্কুল কলেজ খুলে বসলো। কাছাকাছি থাকার লোভেই আমরা যোগ দিলাম ওর প্রতিষ্ঠানে।
ফ্ল্যাস ব্যাকে চলুন ও কি বলছে দেখে নেওয়া যাক।
" না স্যার না না না এমন করবেন না স্যার" বিনিত নিবেন করছি আমি। কিন্তু আমার কোন চিৎকার ডক্টর রঞ্জন চৌধুরী শুনলেই না। ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন তিনি আরো বেশি প্রত্যাখানের অপমানে দগ্ধ তিনি। এই প্রাইভেট নার্সিংহোমের আমার মতো একচ্ছত্র অধিপতি কাছে মেয়েরা বিনোদন মাত্র । একদিকে প্রসিদ্ধ চিকিৎসক আরেকদিকে এমনই ঘৃণ্য রূপ সবাই জানা ! অনেক মেয়ের সাথেই এমন করেছেন কিন্তু কেউ ভয়ে মুখ খোলে না, কেউবা আপোষ করে উন্নতি করে। অন্য কিছু হলেউনি তাহলে কেরিয়ার শেষ করে দেবেন। নার্স রিয়ার আত্মহত্যা ঘটনা তো কারো অজানা নয়। উনি ক্ষমতার অধিকারী তাই সমস্ত কিছুই ধামাচাপা পড়ে গেছে । কোনো সুবিচার পায়নি রিয়া কারণ তদন্ত এগোয় নি!
আমার গ্রামেই ছিলো রঞ্জন দের আদি বাড়ি। তাই এক সময় ওর সাথে আমার বিয়ে ও হয়। ডাক্তারির ভালো ফল করায়। রঞ্জন বাবু জুনিয়র হাউস ফিজিশিয়ান হিসেবে এই নার্সিংহোমে কাজ জয়েন করতে বলেন । আমি ওনার চরিত্র সম্পর্কে কানাঘুষো শুনেছিলাম অনেক। কিন্তু বিশ্বাস হয় নি। কারণ উনি আমার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করে নি। কাল মানবের সাথে আমাকে করিডোরে কথা বলতে দেখে উনি আজ আমাকে দেখেছিলেন। মানব আমার সেই লুকানো প্রেম জেনে, হঠাৎ কেমন বদলে গিয়ে আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে শুরু করলো । ঠেলে ধাক্কিয়ে উনি আমাকে ওনার চেম্বারের সোফার উপর ফেলে দিয়েছেন। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ আর ভেতরের আওয়াজ বাইরে যায় না। আমি ভয় আর বিস্ময়ে নিজের নার্ভের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছি। রঞ্জন ঝুঁকে পড়ছেন শরীরের উপর।
হঠাৎ দেওয়ালের গায়ে লাগানো এক নারীর তৈলচিত্র থেকে একটা হালকা আভা যেন বেরিয়ে এলো। কুণাল বাবু তখন অত কিছু দেখার মত অবস্থায় ছিলেন না! একটা স্টিলের ছুরি হাতে ছিলো মেয়েটির। এক প্রেত সমান দৃষ্টি তার চোখে। আমি ভয় পাই । কারণ চূড়ান্ত ভয়ের কিছু হতেই চলেছিল আমার সাথে । এর চেয়ে বেশি ক্ষতি আর কি বা হবে?
তখন মেয়েটির হাতের ছুরি বেমালুম গেঁথে গেল রঞ্জন পিঠে বুকে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটলো। উনি আর্তনাদ করতে থাকলেন। আর সেই অলৌকিক নারী তখন হাসছে বলল " আমায় আত্মহত্যা করতে হয়েছিল নরাধম কিন্তু আর কোনো মেয়ের সর্বনাশ করতে দেব না সেদিনই ঠিক করে নিয়ে ছিলাম। যাও তুমি এ ঘর ছেড়ে চলে যাও!" "
পুলিশ কখনো ওর কথা বিশ্বাস করবে না। আমি তাই ওই ছুরি আমার হাতে নিয়ে , বললাম আমি রঞ্জন বাবু কে খুন করেছি ওকে বাঁচা বার জন্য।
পুলিশ যদিও দুই জন কে ই থানায় নিয়ে যাবে বলছিলো। হঠাৎ চৌধুরী ম্যাডামের ফোনে চলে গেলো ওরা। উনার জন্য অপেক্ষা করলাম আমরা।
উনার অফিসে। উনি এলেন খুব নির্লিপ্ত উনি। শিক্ষিত মহিলা। ঘরে ঢুকে উনি জিগ্গেস করলেন "তোমরা এখানে এখনো বসে কেন নববর্ষ উৎসবের নাটক রিয়াসালে যাবে না, আমার একটু দেরি হয়ে গেলো রঞ্জন এর বডিটা নিয়ে কিছু ফর্মালিটি ছিলো তাই।"
আমি" সরি" বলতে যাচ্ছিলাম। উনি বললো " না কোন সরি বলার দরকার নেই। ভুত প্রেতে গল্পটা না বিশ্বাস করলে, মৌপ্রিয়া কোন দোষ ছিলো না। আমি চাই এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হোক। কারণ ধষর্ণ করতে গিয়ে রঞ্জন খুণ হয়েছে এ কথা লোকে জানুক। Just wash room পড়ে গিয়ে মারা গেছে এটা খবর হয়েছে। যাইহোক নববর্ষ উৎসব হবে , আর আমি চাই ঐদিন তোমরা তোমাদের বিয়ে দিনটাও আমাদের জানাবে। নতুন বছরে নতুন করে জীবন টা শুরু করো তোমার আমার শুভেচ্ছা রইল।
