সাজঘর থেকে স্টেজে (ধারাবাহিক) ৩
সাজঘর থেকে স্টেজে (ধারাবাহিক) ৩


৩
স্টেজ রিহার্সালের আগে দুই পালার ডিরেক্টর খগেনদা, প্রম্পটার পটলদা আর মিউজিক মাস্টার নগেনদা, লাইট মাইকের জগাদা, ড্রেস মেকাপের হরিদা সবাই মিলে মিটিং সেরে নিলো টুক করে একখানা। মিটিঙে সাব্যস্ত হলো, শক্ত শক্ত দু'খানা পালা, কোনোরকমে কোনো ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। কোথাও যেন কোনো ফাঁক না থাকে। তাই ফাইনাল রিহার্সালের আগে একবার সবার পার্ট ঝাড়া মুখস্থ হয়েছে কিনা, কেউ কোথাও হোঁচট খাচ্ছে কিনা, কোনো ভুল উচ্চারণ হচ্ছে কিনা... এসব চেক করে নেওয়া হবে। সেইমতো ডিরেক্টর খগেনদা, প্রম্পটার পটলদা আর মিউজিক মাস্টার নগেনদা... একে একে সবাইয়ের পার্ট আলাদা আলাদা করে চেক করে নিলো। সব একেবারে মাখোমাখো সুন্দর তৈরী।
সারাদিন অভিনেতার দল জমিয়ে দোলের রং খেলেছে। সন্ধ্যায় থিয়েটার নাটকের ছেলেরা মেকাপে বসার পরে একটাই ঝামেলা শুধু হলো। সবাইয়ের কানে নাকে মুখে এমনভাবে রং লেগে আছে যে মেকাপের পরেও কেবল ড্রেসের পার্থক্য দেখে বোঝা যাচ্ছে কে কোন চরিত্রে অভিনয় করছে। সে রাম লক্ষ্মণ হনুমান সবার মুখই যেন একই দেখাচ্ছে। অনেক মেকাপের পোঁচ চড়িয়েও সেই সাদৃশ্য ঢাকা পড়ে নি। সে যাই হোক গে, অভিনয় সবাই খুব সুন্দর করে উৎরে দিয়েছে। কেউ কোনো পার্ট ভুল করে নি। উল্টোপাল্টা হাত-পা ছুঁড়ে নাটক গুবলেট করে ফেলে নি। একেবারে সফল নাটক অভিনয়। কেবল হনুমানের ভূমিকায় অমলের একটু সমস্যা হয়েছিলো। অতিরিক্ত লম্ফঝম্ফের ফলে স্প্রিং আর কঞ্চি দিয়ে তৈরী লেজখানা শুধু একবার খুলে পড়ে গিয়েছিলো। তবে খুব বুদ্ধিমান অমল। দর্শকদের মধ্যে হৈহৈ রব ওঠার আগেই লেজখানাকে স্টেজ থেকে তুলে স্বস্থানে লাগিয়ে, আরো বেশীরকম লম্ফঝম্ফ করেই ম্যানেজ করে নিয়েছিলো। ঘাবড়ে না গিয়ে অমল উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে পুরো ব্যাপারটা যেন একটা কমিক দৃশ্য, এমনভাবেই উপস্থাপিত করেছিলো।